‘তুফান’ সিনেমায় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত শিল্পী দিলশাদ নাহার কনা’র গাওয়া ‘দুষ্টু কোকিল ডাকে রে কু কু কু কু’ গানটি প্রকাশের আগেই দর্শকের মনে জায়গা করে নিয়েছে! পুরো গানটি প্রকাশ হয় ছবি মুক্তির বেশ কদিন পর। এক দিনেই অফিসিয়াল দুটি চ্যানেলে এই গানের ভিউ অতিক্রম করে ৫ মিলিয়ন। এই গান ও সমসাময়িক বিষয়ে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন কনা।
এক দিনে ‘দুষ্টু কোকিল’-এর ভিউ ৫ মিলিয়ন! কেমন লাগছে?
একেতো ঈদের আনন্দ, তার সঙ্গে আমার গান ‘দুষ্টু কোকিল’-এর জন্য এতো ভালোবাসা পাচ্ছি এটা তো দ্বিগুণ আনন্দের বিষয়। আমি বরাবরই বলে এসেছি গানের ভিউ দিয়ে কখনোই ভালো গান-মন্দ গান বিচার করা যায় না। কিন্তু ‘দুষ্টু কোকিল’ শুধু ভিউ নয়, মানুষের মনেও জায়গা করতে পেরেছে এটি আমার খুব ভালো লাগছে। কারণ ছবির ট্রেইলারে গানটির মাত্র এক লাইন মুক্তির পরই দর্শকের যে উন্মাদনা দেখেছি তাতেই বুঝে গেছি এই গানটি মানুষ পছন্দ করবে। ওই এক লাইনের অজস্র রিল টিকটকে ভরে যায় সোশ্যাল মিডিয়া। পুরো গান মুক্তির পর এরইমধ্যে দুটি চ্যানেলে মোট ৭ মিলিয়ন ভিউ অতিক্রম করেছে গানটি।
রেকর্ডিংয়ের সময় কী বুঝেছিলেন এতো দ্রুত হিট হয়ে যাবে গানটি?
এতো দিনের অভিজ্ঞতায় এক ধরনের আমেজ কিন্তু রেকর্ডিংয়ের সময়েই আমরা পেয়ে যাই। এই গানটি গাওয়ার সময়েই কথা ও সুর সহজে আত্মস্থ হয়ে যায়। রেকর্ড করে আসার পরেও মনের অজান্তে গুনগুন করে গেয়ে ফেলতাম গানটি। তবে এতো দ্রুত একটি গান সুপারহিট হয়ে যাবে সেটি তখন ভাবতে পারিনি। কিন্তু ঈদের দুদিন পর যখন ‘তুফান’ সিনেমাটি হলে গিয়ে দেখলাম তখনই দর্শকের উত্তেজনা লক্ষ্য করি। আমি নিজেও পুরো গানটি তখন প্রথম দেখেছি দর্শকের সঙ্গে বসে। এরপর শুধু অপেক্ষা করছিলাম কখন ইউটিউবে পুরো গানটি ছাড়া হবে।
‘দুষ্ঠু কোকিল’ গানটি তো দারুণ হয়েছেই, সেই সঙ্গে ‘তুফান’-এর মতো ছবিতে গানটি ব্যবহার করার ফলে এতো দ্রুত আমরা এতো দারুণ রেসপন্স পেয়েছি। শাকিব খানের উপস্থিতি, মিমি চক্রবর্তীর পারফরমেন্স সবমিলিয়ে গানটি অন্যমাত্রা পেয়েছে। আমি সবচেয়ে খুশি যে, এতো সুন্দর একটি গান ভালো মানের একটি সিনেমায় ব্যবহার করা হয়েছে। এমন অনেকবার হয়েছে, দারুণ একটি গান করেছি কিন্তু সিনেমা দেখার পর মনে হয়েছে এই ছবিতে গানটি না থাকলেই ভালো হতো! তবে ‘তুফান’ ছবিটি দেখে দর্শক হিসেবে আমি এতোটাই উপভোগ করেছি যে এই ছবির অংশ হতে পেরেই নিজের কাছে খুব ভালো লেগেছে।
গানটি তৈরীর পেছনের গল্প জানতে চাই...
‘দুষ্ঠু কোকিল’ গানটি গাইতে আমার কোন বেগ পেতে হয়নি। কারণ এটি খুব সহজ সরল কথার আমুদে সুরের একটি গান। তবে গানটি যেহেতু ড্যান্স নাম্বার, তাই এতে অনেক ধরনের এক্সপ্রেশনের ব্যাপার ছিল। সেটি ঠিকভাবে ডেলিভারি করতে পেরেছি বলে মনে হচ্ছে। নয়তো এতো মানুষের গানটি ভালো লাগতো না। গানটির সঙ্গে জড়িত প্রত্যেকের সঙ্গে আমার কাজের একটা বোঝাপড়া আছে। শাকিব খানের জন্য ‘দিল দিল’সহ বেশকিছু সুপারহিট গান করেছি। রায়হান রাফীর সঙ্গে তো তার প্রথম সিনেমা থেকে দারুণ দারুণ গান করার সুযোগ পাচ্ছি। আকাশ সেনের সঙ্গেও আমার কাজের কেমেস্ট্রি খুব ভালো। ‘রেশমি চুড়ি’ থেকে শুরু করে ‘দুষ্টু কোকিল’- অনেক ভালো গান আমরা একসঙ্গে করেছি।
ঈদে তো আপনার নতুন আরেকটি গানও এসেছে...
হ্যাঁ। ‘লিভিং রুম সেশন’ নামের মিউজিক্যাল প্রজেক্টে একটি জনপ্রিয় ফোক গান করেছি। আমার গলায় দর্শক রোমান্টিক আধুনিক গানই বেশি শুনে থাকেন। সেদিক থেকে ‘আমার অন্তরায় আমার কলিজায়’ ফোক গানটি সবাইকে ভিন্নতা দেবে। গানটি করতে পেরে আমার খুব ভালো লেগেছে। কারণ এর সংগীতপরিচালক পাভেল আরিন অনেক সময় নিয়ে যত্ন করে কম্পোজিশন করেছেন। এই সেশনের আমেজটাই আলাদা। দারুণ একটি মিউজিক্যাল ফিল পাওয়া যায়। যদিও আমি এখনো গানটির প্রচার সেভাবে করতে পারিনি, কারণ সবাই ‘দুষ্টু কোকিল’ নিয়ে ব্যস্ত। শিগগিরই এই গানটির জন্যও প্রচারণা চালাবো। কারণ এটিও দারুণ একটি গান। আমি চাই আমার ভালো গানগুলো মানুষ শুনুক। আর ভালো গান হলে তা একটু সময় নিলেও মানুষের কাছে পৌঁছবেই এটা আমার বিশ্বাস।
ঈদ কিভাবে কাটালেন?
বরাবরই ঈদ কাটাই পরিবারের সঙ্গে গ্রামের বাড়ি গাজীপুরে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। ঈদের একদিন পরই চলে এসেছি ঢাকায়। এবার ঈদে বেশকিছু টিভি চ্যানেলেও আমার পারফরমেন্স ছিল। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো বিটিভির ঐতিহ্যবাহী অনুষ্ঠান ‘আনন্দমেলা’র গানটি। কারণ এখানে আমি রাগাশ্রয়ী নজরুলগীতি ‘মোর ঘুমঘোরে এলে মনোহর’ গেয়েছি। অনেকেই জানেন না যে আমার গানের চর্চা কিন্তু নজরুল সঙ্গীত দিয়েই। দর্শক ভক্তদের সেই গানটিও শোনার আমন্ত্রণ থাকলো।