বৃহস্পতিবার ১২ জুন ২০২৫ ২৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
বৃহস্পতিবার ১২ জুন ২০২৫
আদিতমারীতে আটকে আছে ৭৮ জন গ্রাম পুলিশের ৫২ মাসের যাতায়াত ভাতা
লালমনিরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশ: বুধবার, ২ অক্টোবর, ২০২৪, ৪:৫০ PM
লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী উপজেলা ৮ টি ইউনিয়নে ৭৮ জন গ্রাম পুলিশ (দফাদর ও মহল্লাদার) কর্মরত রয়েছে। এই গ্রাম পুলিশের ৫২ মাসের যাতায়াত ভাতা আদিতমারী প্রশাসনের একাউন্টে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় লাল ফিতার ফাইলে আটকে আছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

জানা যায়, আদিতমারী প্রশাসনের নিয়ম অনুযায়ী প্রতি মঙ্গলবার ৮ টি ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশ (দফাদর ও মহল্লাদার) সংশ্লিষ্ট থানায় হাজিরা দিবে। এতে গ্রাম পুলিশরা মাসে ১২ শত টাকা হাজিরা ভাতা পাবে।কিন্তু ২০১৮ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত মোট ৫২ মাস ৭৮ জন গ্রাম পুলিশের (দফাদার ও মহল্লাদার) যাতায়াত ভাতা আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে আদিতমারী প্রশাসনের বিরুদ্ধে।

অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, আদিতমারী সাব রেজিস্ট্রি অফিস থেকে প্রাপ্ত স্থাবর সম্পত্তি হস্তান্ত করের ১℅ টাকা থেকে এই যাতায়াত ভাতা দেওয়ার বিধান থাকলেও সেই সময়ের উপজেলা নির্বাহী অফিসাররা গ্রাম পুলিশের যাতায়াত ভাতা না দিয়ে এই টাকা অন্য খাতে ব্যয় করেছেন বলেও অভিযোগ করেছেন অনেক গ্রাম পুলিশ।

একজন গ্রাম পুলিশ রাজস্ব খাত থেকে ৩ হাজার ২ শত ৫০ টাকা ও সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ৩ হাজার ২ শত ৫০ টাকা মোট ৬ হাজার ৫ শত টাকা বেতন পায়।দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে এই সামান্য বেতনে এমনিতেই সংসার চালাতে নাজেহাল অবস্থা তার উপর আদিতমারী উপজেলা প্রশাসন যাতায়াত ভাতা আটকে রেখে তাদের বড় ধরনের বিপদে ফেলেছেন।সংসার চালাতে অনেক গ্রাম পুলিশ সিমান্তে বিভিন্ন চোরাচালানে নিজেদের জড়িয়ে ফেলছে।

 স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় ২০২০ সালের ২৩ নভেম্বর  ৪৬,০১৭.০১৮.০০.০০.০০৯- ২০১১-৫২৯ নং স্বারকে আদিতমারী উপজেলা প্রশাসনকে হাট-বাজার ইজারালব্ধ আয়ের অবশিষ্ট ৪১% অর্থ হতে ইউনিয়ন পরিষদে কর্মরত গ্রাম পুলিশদের (দফাদার ও মহল্লাদার) থানায় হাজিরার জন্য যাতায়াত ও দৈনিক ভাতা প্রদানের অনুমতি প্রদান করে। কিন্তু তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসার জি আর সারোয়ার আলম সেই অনুমতিকে তোয়াক্কা না করে নতুন নাকট সাজিয়ে ২০২৩ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারী ০৫.৪৭.৫২০২,০০০,০৩,০১৩,২০- নং স্বারকে একই দফতর বরাবর হাট-বাজার ইজারালব্ধ আয়ের অবশিষ্ট ৪১% অর্থ হতে ইউনিয়ন পরিষদে কর্মরত গ্রাম পুলিশদের (দফাদার ও মহল্লাদার) থানায় হাজিরার জন্য যাতায়াত ও দৈনিক ভাতা প্রদানের অনুমতির জন্য আরেকটি পত্র প্রেরণ করে।যা আজও লাল ফিতায় আটকে আছে।

সারপুকুর ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশ মিজান,রবিউল ও ভেলাবাড়ী ইউনিয়ন গ্রাম পুলিশ বাদশা মিয়া আক্ষেপ করে বলেন,আমাদের গ্রাম পুলিশদের কোন মূল্য নেই। আমরা বেতন পাই মাসে ৬ হাজার ৫ শত টাকা। প্রতি সপ্তাহে আমাদের হাজিরা দিতে যেতে হয় উপজেলায়।সরকার আমাদের যাতায়াত ভাতা দিতে বললেও আদিতমারী প্রশাসন ৫২ মাসের ভাতা বন্ধ রেখে আমাদের সাথে তামাশা করছে।আমরা ঋণে ঋণে জর্জরিত।আমাতের পাওনা প্রায় ৪৭ লক্ষ টাকা।স্থানীয় সরকার,পল্লি উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয়ের আদেশ থাকলেও আমাদের টাকা দেয়া হচ্ছে না।

আদিতমারী ইউএনও অফিসের ওস মজিবুর রহমান বলেন,২০২৩ সালের মার্চ মাস থেকে নিয়মিত যাতায়াত ভাতা দেওয়া হচ্ছে।এখন যেমন নিয়মিত দিচ্ছেন আগে কেন দেননি এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন,আগের স্যাররা দিতে দেয়নি তাই ৫২ মাস আকটে আছে।

আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুরে আলম সিদ্দিকী বলেন,গ্রাম পুলিশের (দফাদার ও মহল্লাদার) যাতায়াত ভাতা দিতে মন্ত্রনালয়ের আদেশ পেয়েছি।তবে আগের উপজেলা নির্বাহী অফিসার জি আর সারোয়ার হাট-বাজার ইজারালব্ধ আয়ের অবশিষ্ট ৪১% অর্থ থেকে যাতায়াত ভাতা প্রদানে মন্ত্রনালয়ের অনুমতির একটি পত্র প্রেরণ করেছে।আশাকরি তারাতারি দিয়ে দিতে পারব।

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত