বিয়ের পর সুমা বেগমের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে প্রবাসী যুবকের সঙ্গে। বয়স্ক স্বামীকে ছেড়ে অনলাইনে সম্পর্ক গড়ে ওঠা ওই প্রেমিকের সঙ্গে নতুন করে সংসার বাধার স্বপ্ন বুনছিলেন সুমা। কিন্তু তার আগেই সুমাকে গলাটিপে হত্যা করে তার স্বামী।
ভয়ঙ্কর সেই দৃশ্য আবার ভিডিওকল করে সুমার প্রেমিককে দেখান তিনি। পরে সুমার মরদেহ একটি স্যুটকেসে ভরে নদীতে ফেলে দেন তার স্বামী।
প্রবাসী আমিনান রহমানের সঙ্গে ২০১৯ সালে লন্ডন ইসলামি রীতি অনুযায়ী টেলিফোনে বিয়ে হয় সুমার। স্বামী বয়সে প্রায় দ্বিগুণ বয়সী হলেও সংসার করে যাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু একপর্যায়ে সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রবাসী যুবক শাহিন মিয়ার সঙ্গে সুমার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সেই সম্পর্কের খেসারত বুঝাতেই সুমাকে গলাটিপে মেরেই ফেলেন আমিনান।
সুমার মরদেহ ২০২৩ সালের ৮ মে লি নদীতে পাওয়া যায়। তার আগে ৩০ এপ্রিল টাওয়ার হ্যামলেটের অর্চার্ড প্লেস ঠিকানা থেকে নিখোঁজ হন সুমা। ২৪ বছর বয়সী বাংলাদেশি এই গৃহবধূ নিখোঁজ হওয়ার আগের রাতে শাহিনকে ফোন করেন আমিনান। আদালতের নথিতে জানা যায়, ২৯ এপ্রিল শাহিনকে ভিডিও কল করেন সুমার স্বামী। তারপর ভিডিও কলেই সুমার গলা চেপে ধরেন আমিনান।
সরকারি কৌঁসুলিরা আদালতকে জানান, প্রেমিকের সঙ্গে মিলিত হওয়ার ইচ্ছা ছিল সুমার। ২৯ এপ্রিল রাতে আমিনানের প্রতিবেশীরা শিশুর চিৎকার এবং জোরে শব্দ শুনতে পায়। ওই সময় শাহিনকে হোয়াটসঅ্যাপে ভিডিও কল করেন আমিনান। সেই ভিডিও কল আংশিক রেকর্ড করেন শাহিন। তবে সেই ভিডিওতে কোনও শব্দ শোনা যাচ্ছিল না।
ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায়, খাটের ওপর থাকা সুমার চেহারা ঢাকা রয়েছে। এ সময় সুমার পাশেই তার এক সন্তানকেও দেখা যায়। আদালতকে সরকারি কৌঁসুলি বলেন, বিবাদী যখন শাহিনকে জানান তিনি সুমা এবং তাকে হত্যা করবেন। সুমা তখন উঠে চলে যেতে চাইছিল কিন্তু আমিনান তার ঘাড় চেপে ধরে। চিৎকার করার পর সুমা কথা বলার শক্তি হারিয়ে ফেলে।
২৮ সেকেন্ড পর শাহিনকে আবার ভিডিও কল করে আমিনান। তখন স্ত্রীর দিকে ক্যামেরা তাক করে আমিনান বলেন, আমি সুমাকে হত্যা করেছি। এ সময় সুমার মুখ দিয়ে লালা পড়তে দেখা যায়।
ঘটনার দিনের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, তাদের এক সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে একটি বড় কালো স্যুটকেস নিয়ে যাচ্ছে আমিনান। এ ঘটনার ১০ দিন পর একটি স্যুটকেটের ভেতর সুমার লাশ পাওয়া যায়।