২০০২ সালের পর থেকেই বিশ্বকাপের শিরোপা খরায় ভুগছে পাঁচ বারের চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল। এর মধ্যেই তারা ঘরের মাঠে বিশ্বকাপের আয়োজন করেছিল ২০১৪ সালে। সেই আসরেই সেমিফাইনালে জার্মানির বিপক্ষে এমন এক লজ্জাজনক কাণ্ড ঘটেছিল, যা নিয়ে ১০ বছর পর এসেও ট্রলের শিকার হতে হয় তাদের।
২০১৪ বিশ্বকাপের ৯ জুলাই সেমিফাইনালে সবচেয়ে বেশিবার বিশ্বকাপজয়ী দল ব্রাজিলকে গুনে গুনে ৭ গোল দিয়েছিল জার্মানি। ঘরের মাঠে নিজেদের দর্শকদের সামনে এক লজ্জার অধ্যায় জন্ম দিয়ে ব্রাজিল সেবার বিদায় নেয় সেমিফাইনাল থেকে।
বিশ্বকাপের মঞ্চে জার্মানির কাছে ৭ গোল হজম করার কারণে এখনও প্রায়ই ‘সেভেন আপ’ খোঁচা হজম করতে হয় ব্রাজিলকে।
কোপা আমেরিকার কোয়ার্টার ফাইনালে শনিবার উরুগুয়ের মুখোমুখি হবে তারা। বছরের ৭ম মাসের (জুলাই) ৭ তারিখ বাংলাদেশ সময় সকাল ৭টায় শুরু হবে ব্রাজিলের খেলা!
আরও কাকতালীয় ব্যাপার হলো, কালকের ম্যাচে দলে থাকছেন না ৭ নম্বর জার্সি পরিহিত ভিনিসিয়ুস জুনিয়র!
ভিনিসিয়ুসের না খেলার কারণ হচ্ছে- কলম্বিয়ার বিপক্ষে গত ম্যাচের ৭ মিনিটে হামেস রদ্রিগেজকে ফাউল করে হলুদকার্ড দেখেন তিনি। অর্থাৎ এখানেও ঘুরেফিরে সেই ৭ সংখ্যাটির আধিক্য!
ব্রাজিলের ম্যাচের সাথে জড়িয়ে
৭ সংখ্যাটির এমন কাকতালীয় পুনরাবৃত্তির কারণে আরও একবার
‘সেভেন আপ’ ট্রলের মুখোমুখি হয়েছে ব্রাজিলভক্তরা।
সেদিন যা ঘটেছিল
২০১৪ বিশ্বকাপের সেই সেমিফাইনালে ব্রাজিল ভক্তদের হৃদয় ভেঙে শত টুকরো হয়েছিল ম্যাচের প্রথম ২৯ মিনিটের মধ্যেই। ঐ সময়ের মধ্যেই ৫-০ ব্যবধানে এগিয়ে গিয়েছিল জার্মানি!
টমাস মুলার ম্যাচের প্রথম গোলটি করেছিলেন ১১ মিনিটের মাথায়। টনি ক্রুসের কর্নার কিক থেকে ফাঁকায় বল পেয়েছিলেন মুলার। বলটা মাটিতেও পড়তে দেননি এই জার্মান স্ট্রাইকার। দারুণ এক শটে সেটি পাঠিয়েছিলেন ব্রাজিলের জালে।
২৩ থেকে ২৯ মিনিট, মূলতঃ এই সাত মিনিটের মধ্যেই ব্রাজিলকে রীতিমতো লজ্জায় ডুবিয়েছেন জার্মান ফুটবলাররা। ম্যাচের ২৩ মিনিটে ইতিহাসগড়া গোল করেন মিরোস্লাভ ক্লোসা। এটি ছিল সেই ম্যাচে জার্মানির দ্বিতীয় গোল।
গোলটি করে ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি রোনালদোকেও ছাড়িয়েছিলেন ক্লোসা। ১৬ গোল নিয়ে এককভাবেই বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়েছিলেন এই জার্মান স্ট্রাইকার।
পরবর্তী চার মিনিটের মধ্যেই ব্যবধান ৪-০ করেন টনি ক্রুস। ২৪ ও ২৬ মিনিটে দুইটি গোল করেন এই জার্মান মিডফিল্ডার।
এর ঠিক তিন মিনিট পরেই ব্রাজিল ভক্তদেরকে কান্নায় ডুবিয়ে স্বাগতিকদের জালে আরও একবার বল জড়ান সামি খেদিরা। ম্যাচের মাত্র ২৯ মিনিটেই অবিশ্বাস্য স্কোরলাইন: ব্রাজিল ০-৫ জার্মানি!
প্রথমার্ধটা শেষ হয়েছিল এই স্কোরলাইন নিয়ে। দ্বিতীয়ার্ধে ৬৯ মিনিটে ব্রাজিলের জালে আরেকবার বল জড়ান আন্দ্রে শুরলে। ১০ মিনিট পর আরও একটি গোল করেন এই জার্মান ফরোয়ার্ড। ফলে ম্যাচে ৭-০ গোলে এগিয়ে যায় জার্মানি। শেষ বাঁশি বাজার কিছুক্ষণ আগে ব্রাজিলের পক্ষে সান্ত্বনাসূচক একমাত্র গোলটি করেন অস্কার।
ব্রাজিলের ফুটবল ইতিহাসের চরম লজ্জার সেই ম্যাচে ইনজুরির কারণে খেলতে পারেননি নেইমার। আগের দুই ম্যাচে দুইটি হলুদ কার্ডের কারণে মাঠে নামতে পারেননি ব্রাজিলের নিয়মিত অধিনায়ক থিয়াগো সিলভাও।
তবুও ব্রাজিলের ফ্রেড, অস্কার, হাল্ক, মার্সেলো, ডেভিড লুইজ, মাইকন, দানি আলভেজদের মতো তারকা খেলোয়াড়দের উপস্থিতিতে ৭-১ গোলের বিশাল ব্যবধানের হারটা যেনো কোনো যুক্তিতেই ব্যাখ্যা করা যায় না।