কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালীন রংপুরে শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুসন্ধান কমিটির সদস্যরা পদত্যাগ করেছেন। মঙ্গলবার কমিটির তিন সদস্য বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক ও শিক্ষার্থীরা অনাস্থা পোষণ করায় পদত্যাগ করেছেন বলে জানিয়েছেন কমিটির সদস্যরা। পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ আলী।
গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে কমিটির সদস্যরা তথ্য–উপাত্ত, ঘটনাস্থলের লাইভ ফুটেজ, সিসিটিভি ফুটেজ, ছবিসহ বিভিন্ন ডকুমেন্ট সংগ্রহ করেন। এর মধ্যে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলার জন্য গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তাদের ডাকেন কমিটির সদস্যরা।
এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বেরোবির কয়েকজন সমন্বয়ক ও কিছু শিক্ষার্থী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন ও তাদের প্রতি অনাস্থা পোষণ করেন। এ কারণে তথ্য অনুসন্ধান কমিটির সদস্যরা পদত্যাগ করেন।
পদত্যাগ করা সদস্যরা হলেন, কমিটির আহ্বায়ক ও ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অধ্যাপক মতিউর রহমান, সদস্যসচিব ও বাংলা বিভাগের অধ্যাপক শফিকুর রহমান, সদস্য ও রসায়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক বিজন মোহন চাকী।
অধ্যাপক মতিউর রহমান এ বিষয়ে বলেন, ‘আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা আমাদের কমিটির ওপর অনাস্থা পোষণ করেছেন। তাই আমরা দায়িত্ব পালন করতে আর স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছি না। এ জন্য আমরা পদত্যাগ করেছি।’
আবু সাঈদ নিহতের ঘটনায় পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) আবদুল্লাহ আল মামুন, রংপুর রেঞ্জের সাবেক উপপুলিশ মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) আব্দুল বাতেন, রংপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. মনিরুজ্জামানসহ ১৭ জনের নামে হত্যা মামলা করেছে আবু সাঈদের পরিবার। গত রোববার রংপুরের অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের বিচারক রাজু আহমেদের আদালতে এ মামলা করেন আবু সাঈদের বড় ভাই রমজান আলী।
প্রসঙ্গত, সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনে গত ১৬ জুলাই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর ফটকের সামনে সংঘর্ষ চলাকালে নিহত হন আবু সাঈদ। এ ঘটনার পর ১৮ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তিন সদস্যের তথ্য অনুসন্ধান কমিটি গঠন করে।