বরগুনার তালতলীতে ইউপি সদস্য মো. জামাল খানকে বিবস্ত্র করে মারধরের ঘটনায় দুই সাংবাদিকসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করা হয়েছে।
বুধবার সকালে আমতলী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ইউপি সদস্য জামাল খান বাদী হয়ে মামলাটি করেন। পরে আদালতের বিচারক মো. আরিফুর রহমান মামলাটি আমলে নিয়ে তালতলী উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেন।
আসামিরা হলেন- তালতলী উপজেলার আবুল কালাম, মিজানুর ওরফে টাচ মিজান, বশির উদ্দিন, নাঈম ইসলাম (কাল বেলা), আল-আমিন, শাহাদাৎ হোসেন (মানব কন্ঠ), জাফর দফাদার, খলিল, মাসুদ, বেল্লাল, ইব্রাহিমসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৭-৮ জন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার ৩১ আগস্ট উপজেলার নিশান বাড়িয়া ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জামাল খানের বাড়ির সামনে নিদ্রা স্লুইজঘাট খালে একটি ইঞ্জিন চালিত চোরাই স্টিলবডি ট্রলার নোঙর করে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।
বিষয়টি স্থানীয়রা ইউপি সদস্য জামাল খানকে জানালে তিনি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানান।তিনি ইঞ্জিন চালিত স্টিলবডি ট্রলারটি ইউপি সদস্যর জিম্মায় রাখার নির্দেশ দেন। এ খবর পেয়ে আসামিরা রাত ১০ টার দিকে চোরাই ইঞ্জিন চালিত স্টিলবডি ট্রলারটি অনৈতিকভাবে নেওয়ার জন্য টাকার প্রস্তাব দেয়। এতে রাজি না হলে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে।
এসময় আবুল কালাম, মিজানুর রহমান, বশির, সাংবাদিক নাইম ও শাহাদাতসহ অন্যান্যরা বগি, দা, লোহার রড দিয়ে খুনের উদ্দেশ্যে এলোপাতাড়ি মারধর করেন ইউপি সদস্যকে।
এতে কপালের হাড়ভেঙে গুরুতর জখম হয়। এছাড়াও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ফুলা কাটা-ছেঁড়া রক্তাত জখম হয়। মারধরের একপর্যায়ে ইউপি সদস্যকে বিবস্ত্র করে ভিডিও করা হয়। এ সময় স্থানীয় বাসিন্দারা উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যেতে চাইলে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে যায় হামলাকারীরা।
এতে জীবনের ভয়ে চিকিৎসা না নিয়ে বাড়িতে থাকলে দুপুরের দিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিফাত আনোয়ার তুমপা ইউপি সদস্য জামাল খানকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠায়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়।
এ বিষয়ে মামলার বাদী জামাল খান বলেন, আমি যাতে মামলা না করি সেজন্য আমাকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দিয়ে আসছে আসামীরা। তবুও আমি সঠিক বিচারের আশায় মামলা করেছি। এখন সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি। তিনি আরও বলেন, আমার বিবস্ত্র ভিডিও দেখিয়ে হুমকি দিচ্ছে ও টাকা চেয়েছে।
যদি মামলা না ছেড়ে দেই তাহলে আমার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেবে বলে হুমকি দিয়েছে আসামীরা। আমি প্রাণের ভয়ে আছি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিফাত আনোয়ার তুমপা বলেন, আমি ছুটিতে আছি। আদালতের আদেশ পেলে তদন্ত-পূর্বক প্রতিবেদন দেওয়া হবে।