
২০২১-০২-২৩ ১২:২৩:৪২ / Print
চাঁপাইনবাবগঞ্জের মৃৎশিল্পগুলো হারিয়ে যাওয়ার পথে। কাঁচা মাটিতে তৈরির কারিগর মৃৎশিল্পীরা তাদের পূর্বপুরুষের পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় নিয়োজিত হচ্ছেন অনেকেই। স্থানীয় ভাষায় এদের কুমার বলে।
কুমাররাও এতোদিন টিকে ছিলেন নানা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে; কিন্তু এটেল মাটি ও জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধি আর পৃষ্ঠপোষকতার অভাব, ব্যাংক বা এনজিও ঋণ না পাওয়া এবং মাটির তৈরি জিনিসের চাহিদা কমে যাওয়াসহ বিভিন্ন কারণে তারা পেশা বদল করতে বাধ্য হচ্ছেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের বারোঘরিয়া, গোমস্তাপুরের কুমার পাড়া, চৌডালায় অবস্থিত এলাকায় সবুজ শ্যামল ছায়াঘেরা পরিবেশের মৃৎশিল্পের কারিগরেরা তাদের মনের মাধুরি মিশিয়ে শোভাবর্ধন মাটির পুতুল, কলস, চাড়ি, হাড়ি, পাতিল, খুঁটি, মাটির ব্যাংক, বাটনাসহ নানা ধরনের খেলনা ও মাটির তৈরি সামগ্রী রং তুলির কাজ করে আকর্ষণীয় করে তুলে। রং-তুলির কারুকার্যে মানুষ মুগ্ধ হয়ে যেত।
জেলার বিভিন্ন কুমারপাড়াগুলোতে প্রায় কয়েক শত পাল পরিবার রয়েছে। তারা তাদের মাটির তৈরি বাসনপত্র বিভিন্ন হাটবাজারে বিক্রি করেন।এছাড়া অনেকেই ঠেলাগাড়ি ও ভ্যানে করে গ্রাম-গঞ্জে বিক্রি করেন।
বারোঘরিয়ার বিজয় পাল জানান, বর্তমানে মানুষ মাটির সামগ্রীর পরিবর্তে এলুম্যানিয়াম, প্লাস্টিক ও মেলামাইনের সামগ্রীর ব্যবহার করার ফলে তাদের তৈরি জিনিসপত্রের চাহিদা অনেকটাই কমে গেছে ও কালের বিবর্তনে বিলীনের পথে।
যুগের পরিবর্তন, মানুষের জীবন যাত্রার মান উন্নয়নের সাথে সাথে ঐতিহ্যবাহী মাটির তৈরির দ্রব্যাদি মূল্যহীন হয়ে পড়েছে। তবে গ্রাম-গঞ্জের শিশুরা এখনো রকমারি খেলনাপাতি যাহা বিভিন্ন পূজা-পার্বন ও গ্রাম্যমেলায় প্রচুর চাহিদা রয়েছে।
মহিপাল জানান, ব্যাংক বা এনজিও আমাদের এ পেশায় ঋণ দিচ্ছে না। ছেলে মেয়েদের শিক্ষিত করে গড়ে তোলা অনেক কঠিন। তাই ছেলে মেয়েদের শিক্ষিত করার জন্য তারা এ পেশা ছেড়ে দিয়ে লাভজনক পেশা খুঁজছেন।
বাবু/জেআর