বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) ২৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও তার সহযোগীকে মারধর করায় ২৭ জনের নামে মামলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কোতয়ালি মডেল থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) মিরাজ জানান, কাউন্সিলর হুমায়ুন কবিরের দেওয়া লিখিত অভিযোগ ১০ জানুয়ারি মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে।
মামলার আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, পুরো ঘটনার তদন্ত কাজ শুরু হয়েছে। ঘটনার মূল ভিকটিম মাসুম হাসপাতালে ভর্তি। তার মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। তার বক্তব্য নেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, গত ৭ জানুয়ারি দুপুরে রূপাতলী বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন হুমাহুম রেস্টুরেন্টে দুপুর আড়াইটার দিকে খাবারের বিল পরিশোধ করছিলেন ২৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হুমায়ূন কবির। সঙ্গে তার মোটরসাইকেলচালক মাসুম ছিলেন।
এ সময় স্থানীয় কয়েকজনের নেতৃত্বে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ২৫ থেকে ৩০ জনের একটি দল রেস্টুরেন্টের ভেতরে প্রবেশ করে প্রথমে কাউন্সিলরের মোটরসাইকেলচালক মাসুমকে মারধর শুরু করেন।
হামলাকারীরা কাঁচের বোতল দিয়ে মাসুমের মাথায় ও শরীরে আঘাত করেন। এ সময় পরিস্থিতি শান্ত করতে গেলে কাউন্সিলর হুমায়ূন কবিরকে ঘুসি ও লাথি মেরে নিচে ফেলে দেন।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।
এদিকে মারধরে আহত মাসুম বর্তমানে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। দায়িত্বরত চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, মাসুমের মাথায় মারাত্মক আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে। তার দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা দরকার।
ওয়ার্ড কাউন্সিলর হুমায়ূন কবির বলেন, নির্বাচনের দিন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৫ থেকে ৩০ জন শিক্ষার্থীর একটি দল দক্ষিণ জাগুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে অবস্থান নেন। ভোটাররা যেন নৌকায় ভোট না দিয়ে ট্রাক প্রতীকে ভোট দেন সেভাবে মানুষজনকে প্রভাবিত করছিল। আমি শিক্ষার্থীদের বলেছি তোমরা এখানকার ভোটার না, এসবের মধ্যে তোমাদের থাকার দরকার নেই। তোমরা ক্যাম্পাসে ফিরে যাও এবং লেখাপড়া করে বড় মানুষ হও। কিন্তু তারা যাচ্ছিল না। শেষে আমি দায়িত্বরত এসআই বিজয়কে অনুরোধ করি ভোটার ছাড়া সবাইকে সরিয়ে দিতে। এ ঘটনার সময় আমার মোটরসাইকেলচালক মাসুম শিক্ষার্থীদের বলেছিল, তোরা কী কেন্দ্র ছাড়বি না কি কেন্দ্র ছাড়তে বাধ্য করবো। এতে শিক্ষার্থীরা ক্ষিপ্ত হয়ে রূপাতলীতে আমাদের পেয়ে মারধর করেন।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মো. আব্দুল কাইউম সাংবাদিকদের বলেন, রূপাতলীর একটি রেস্টুরেন্টে মারামারির ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থীর নামে মামলা হয়েছে শুনেছি। কিন্তু মামলার আসামি কারা তা আমি জানি না।
এজাহার অনুযায়ী মামলার আসামিরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের ইব্রাহিম খান শাওন, শরিফুল ইসলাম, একে আরাফাত। বাংলা বিভাগের রাকিবুল হাসান, তুষার রহমান, রাকিব হোসেন, পলাশ দাস। ইংরেজি বিভাগের তানজিদ মঞ্জু, সাইমুন হোসন, শাহারিয়ার শাকিল। ইতিহাস ও সভ্যতা বিভাগের ফারদিন খান। রসায়ন বিভাগের নাহিদ রাফিন ও নজরুল রিফাত।
এ ছাড়া সিটি করপোরেশনের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ফেরদৌস, ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা হান্নান বাপ্পী, মামুন ফরাজী, শরিফুল ইসলাম। মামলায় আরও ১০ জন অজ্ঞাতনামা আসামি রয়েছেন।