ছোট লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে উড়ন্ত সূচনা পেয়েছিল ফরচুন বরিশাল। দুই ওপেনারের গড়ে দেওয়া ভিতে ওপর দাঁড়িয়ে এগিয়েছেন মিডল অর্ডার ব্যাটাররা। তাতে প্রথমবারের মতো শিরোপা জয়ের স্বাদ পেলো ফরচুন বরিশাল। কুমিল্লাকে ৬ উইকেটে হারিয়ে প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বরিশাল। দলের মতোই অধিনায়ক হিসেবে প্রথমবার শিরোপা জয়ের স্বাদ পেলেন তামিম ইকবালও।
টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৫৪ রান তোলে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৩৮ রান করেন অঙ্কন।
জবাবে খেলতে নেমে ১৯ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বরিশাল। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৪৬ রান এসেছে কাইল মেয়ার্সের ব্যাট থেকে। তাছাড়া ৩৯ রান করেছেন তামিম ইকবাল।
১৫৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দুর্দান্ত শুরু করেন দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও মেহেদি হাসান মিরাজ। উদ্বোধনী জুটিতে ৮ ওভারে ৭৬ রান যোগ করে দলকে শক্ত ভিত গড়ে দেন তারা। ২৬ বলে ৩৯ রান করে তামিম ফিরলে ভাঙে সেই জুটি।
তামিমের ফেরার পর অবশ্য বেশিক্ষণ আর টিকতে পারেননি মিরাজ। এই মেইকশিফট ওপেনার মঈন আলিকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে লং অনে জনসন চার্লসের হাতে ধরা পড়েন। সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ২৬ বলে ২৯ রান। দুই ওপেনার ফেরার পর শক্ত হাতে দলের হাল ধরেন মুশফিকুর রহিম ও কাইল মেয়ার্স।
এর আগে, এর আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৫৪ রান তোলে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। পাওয়ার প্লেতে তিন উইকেট হারিয়ে চাপে পড়েছিল কুমিল্লা। একশ রানের আগেই পড়ে যায় তাদের পাঁচ উইকেট।
৭৯ রানে মঈন আলী পঞ্চম ব্যাটার হিসেবে ফিরে যাওয়ার পরও রাসেলকে ড্রেসিংরুমে বসে থাকতে দেখা ছিল বিস্ময়কর। অবশেষে ১৭তম ওভারে ইনিংসের সর্বোচ্চ ৩৬ রানের জুটি ভেঙে গেলো। মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন ৩৫ বলে ৩৮ রান করে সাইফউদ্দিনের কাছে বোল্ড হলেন।
২০ বল হাতে রেখে দেখা মিললো রাসেলের। তখন স্কোর ৬ উইকেটে ১১৫ রান। সেই দলটিই দেড়শ ছাড়িয়ে গেলো, যাতে অবদান ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাটারের। প্রথম বলে সিঙ্গেল নিয়েছিলেন রাসেল। পরের ওভারে স্ট্রাইকে গিয়েই হাঁকান ছক্কা। ১৯তম ওভারে জেমস ফুলারের মাথায় হাত। তিনটি বড় বড় ছয় মারেন রাসেল। ২১ রান আসে ওই ওভারে।
শেষ ওভারে রাসেলকে আটকাতে গিয়ে এক্সট্রা রান দেন সাইফউদ্দিন। প্রথম দুটি ওয়াইড ও নো বল, পরে আরও দুটি ওয়াইড দেন বাংলাদেশি বোলার। ওই ওভারে বাউন্ডারি না হলেও দেড়শ ছাড়ায় স্কোর। রাসেল ১৪ বলে চার ছয়ে ২৭ রানে অপরাজিত ছিলেন। ২০ রানে খেলছিলেন জাকের। দুজনের অবিচ্ছিন্ন জুটি ছিল ৩৯ রানের।
বিপিএলে সর্বোচ্চ রান তামিমের
বিপিএলের ফাইনালটি ছিল চলতি আসরে তামিমের ১৫তম ম্যাচ। রান তাড়ায় সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে বরিশালের জয়ের সমীকরণ অনেকটাই সহজ করে দিয়ে গেছেন তিনি। ২৬ বলে ৩টি করে চার-ছক্কায় তিনি করেছেন ৩৯ রান। মঈন আলির বলে আউট হওয়ার আগেই আসরের সেরা রান সংগ্রাহকের শীর্ষে নিজের নামটি তিনি চূড়ান্ত করে দিয়ে যান।
এর আগে কুমিল্লার ব্যাটসম্যান তাওহীদ হৃদয়ের সঙ্গে সেরা ব্যাটসম্যান হওয়ার দৌড়ে তিনি ইঁদুর-বিড়াল দৌড় জারি রেখেছিলেন। প্রায় প্রতিটি ম্যাচের পরই সেরা রানসংগ্রাহকের নাম বদলেছে। শেষ পর্যন্ত হৃদয়-তামিমের রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে জয়ী হলেন বরিশাল অধিনায়কই। ১৫ ম্যাচে ৩৫.১৪ গড় এবং ১২৭.১৩ স্ট্রাইকরেটে তামিম করেছেন ৪৯২ রান। অন্যদিকে, হৃদয় এক ম্যাচ কম খেলে ৩৮.৫০ গড় এবং ১৪৯.৫১ স্ট্রাইকরেট নিয়ে ৪৬২ রান করেছেন।