শুক্রবার ২৫ এপ্রিল ২০২৫ ১২ বৈশাখ ১৪৩২
শুক্রবার ২৫ এপ্রিল ২০২৫
ফেনী শহরে ‘ভালোবাসার ফাঁদ’
ফেনী প্রতিনিধি
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২ এপ্রিল, ২০২৪, ২:৫৯ PM আপডেট: ০২.০৪.২০২৪ ৩:২১ PM
শুরুতে হোয়াটসঅ্যাপ, ইমো কিংবা ম্যাসেঞ্জারে সুন্দরী মেয়েদের ছবি পাঠানো হয়। এরপর চলে প্রেমের অভিনয় ও কথোপকথন।

একপর্যায়ে টার্গেটেড ব্যক্তিকে ডেকে নিয়ে আসা হয় ভাড়া বাসায়। তারপর চলে ছবি সেশন। পরিশেষে নগ্ন ছবি তুলে ব্লাকমেইল করা হয়।

ফেনী শহরে ‘ভালোবাসার ফাঁদ’ তৈরি করা এমন প্রতারক চক্রের সন্ধান পেয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। অনেকে প্রতারণার শিকার হলেও লোকলজ্জার ভয়ে তা প্রকাশ করেন না।এ নিয়ে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে চাঞ্চল্য।

সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, ফেনী শহরে সঙ্ঘবদ্ধ এ ধরনের একাধিক চক্র রয়েছে। চক্রের সদস্যরা বিভিন্ন ব্যক্তির মোবাইলে সুন্দরী নারীদের ছবি পাঠিয়ে টোপ দেয়। এরপর চলে কথাবার্তা ও প্রেমের অভিনয়। কথোপকথনের এক পর্যায়ে বাসায় আমন্ত্রণ জানানো হয়। বাসায় চক্রের বাকি সদস্যরা অশ্লীল ছবি তুলে জিম্মি করে ফেলেন আমন্ত্রিত ব্যক্তিকে। 

শহরের নাজির রোড, পাগলা মিয়া সড়ক, পাঠানবাড়ী সড়ক ও পুরাতন পুলিশ কোয়ার্টার এলাকাসহ আরো কয়েকটি এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে প্রতারক চক্র এ ধরনের ‘ভালোবাসার ফাঁদ’ পাতেন। 

অবশ্য কিছুদিন পর পর চক্রের সদস্যরা বাসা পরিবর্তন করে। এ চক্রগুলোর সদস্যদের মধ্যে রয়েছে- ফেনী সদরের পাঁচগাছিয়া ইউনিয়নের মাথিয়ারা গ্রামের মৃত ছৈয়দ আহাম্মদের পূত্র দিদার হোসেন সুমন (৩৭), কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার ফকিরবাজার গ্রামের আব্দুল জলিলের কন্যা খালেদা আক্তার রুনা, তার ভাই আবুল হাসেম শিপু (২৮) সহ অনেক সদস্য নাম

সম্প্রতি দিদার হোসেন সুমন এ সংক্রান্ত একটি মামলায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেন। তিনি মডেল থানার বিপরীতে ব্লু সুপার কাট জেন্টস পার্লার ও বড় বাজারের আপন স্বর্ণ জুয়েলার্সের মালিক। গত ১৯ ডিসেম্বর সালাহউদ্দিন মোড় সংলগ্ন উত্তরা আবাসিক এলাকায় রুনার বাসায় দাগনভূঞা উপজেলার মাতুভূঞা ইউনিয়নের ৬০ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে ছলনায় ডেকে এনে তার ভিডিও ধারণ করা হয়।

পরিশেষে তার কাছ থেকে দুই লাখ টাকা দাবি করা হয়। ওই ব্যক্তি বাড়ি গিয়ে টাকা দেবে বলে চলে যায়। এব্যাপারে ভুক্তভোগী শামছুদ্দিন মোহাম্মদ কায়েকোব্বাদ বাদী হয়ে দিদার হোসেন সুমনকে প্রধান করে আরো অজ্ঞাতনামা ৫জনের বিরুদ্ধে ফেনী মডেল থানায় বিগম ২০২৩ সালের ২৫ ডিসেম্বর একটি মামলা (নং-৩৮) দায়ের করেন। এ মামলায় আসামী দিদার হোসেন সুমন ও রুজিনা বেগম মিতু জেলও খাটেন। অপর আসামী খালেদা আক্তার রুনা (৩৫) আবুল হাসেম শিপু (২৮) বর্তমানে জেল হাজতে রয়েছে। এদের ফাঁদে পা দিয়ে ফেনী সরকারী কলেজের অনার্স ১ম বর্ষের ছাত্রী জান্নাতুল রাজিয়া নিজেকে সর্বনাশের দিকে ঠেলে দিয়েছে।

জান্নাতুল রাজিয়ার মায়ের অভিযোগের পর মাত্র দেড় লাখ টাকা কাবিন দিয়ে নিজেকে বাঁচিয়ে নিয়েছে ওই চক্রের এক সদস্য। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফেনী মডেল থানা এসআই সাইফুল আলম জানান, রুনা এবং শিফুর ৭ দিন করে রিমান্ডের জন্য আবেদন করলে ফেনীর বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আশিকুর রহমান শিফুর ১ দিনের রিমান্ড এবং রুনাকে ১ দিনের জেলগেটে জিজ্ঞাবাদের অনুমোতি প্রদান করেন। 

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফেনী মডেল থানা এসআই সাইফুল আলম জানান, শহরের বিভিন্ন জায়গায় তারা অস্থায়ীভাবে বিভিন্ন ফ্লাটে বাসা ভাড়া নিয়ে বিভিন্ন ধনি ব্যক্তি বা সমাজের বিভিন্ন গণ্যমাণ্য ব্যাক্তিবর্গ যাদের সামাজিক মর্যাদা রয়েছে তাদেরকে টার্গেট করে সুন্দরী মেয়েদের কে দিয়ে সুকৌশলে তদেরকে বাসা পর্যন্ত নেয়। বাসায় নেয়ার পর তাদেরকে নগ্ন করে ভিডিও ধারণ ও ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেওয়ার হুমকী দিয়ে টাকা দাবি করে। 
« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত