ফরিদপুরে নকল শিশুখাদ্য ফলের জুস তৈরির কারখানায় অভিযান চালিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। জব্দ করা হয়েছে বিপুল পরিমাণ ভেজাল জুসসহ বিভিন্ন মালামাল। তবে অভিযানের বিষয়টি টের পেয়ে পালিয়ে যান কারখানার মালিক মো. লিটন মিয়া।
এসময় অবৈধভাবে আয়ুর্বেদিক ওষুধ তৈরি করায় ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে কারখানাটি।
জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআই-এর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল শনিবার (০৪ মে) দুপুরে ওই নকল জুসের কারখানায় অভিযান পরিচালনা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মুজিবুল ইসলাম।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দরজা বন্ধ করে বাড়ির ভেতরে কয়েকটি রুমের মধ্যে বসানো হয়েছে মেশিন। সেখানেই চলছে বিষাক্ত কেমিক্যাল ও বিভিন্ন রং ব্যবহার করে জুস তৈরি। তবে সেই ফলের জুসে কোনো ধরনের ফলের উপস্থিতি নেই। শুধু বিভিন্ন ধরনের কেমিক্যাল এবং রং ব্যবহার করেই তৈরি করা হচ্ছিল সেসব জুস।
আদালত সূত্রে জানা যায়, পৌর শহরের মাহমুদপুর এলাকার একটি বাড়িতে গোপন কারখানায় কেমিক্যাল দিয়ে জুস বানিয়ে ফলের জুস হিসেবে বাজারজাত করা হচ্ছে। অভিযানকালে ওই বাড়িতে উপস্থিত হলে দেখা যায়, ভেতর থেকে বাড়ির দরজা আটকানো। দরজায় কড়া নাড়লেও খোলা হচ্ছে না। কিছুক্ষণ পর দরজা খোলার পর ভেতরে প্রবেশ করতেই দেখা গেল কয়েকজন নারী শ্রমিক কাজ করছেন। তারা বোতলে জুস ভরছেন, কেউবা প্যাকেজিং করছেন। নোংরা পরিবেশে বিষাক্ত কেমিক্যাল দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে জুস। জুসের বোতলে বিভিন্ন নামি দামি কোম্পানির লেভেল লাগানো হচ্ছে। লিচু, ম্যাংগো জুস ছাড়াও চকলেট প্যাকেট করা হচ্ছে। পাশাপাশি আয়ুর্বেদিক অ্যালকুলিসহ বিভিন্ন ওষুধও বোতলজাত করা হচ্ছে।
কারখানায় কর্মরত নারী শ্রমিকরা জানান, তারা সকালে আসেন রাতে চলে যান। তারা চলে যাওয়ার পর রাতে তৈরি করা হয় জুস, সকালে এসে তারা বোতলজাত করেন।
অভিযান পরিচালনাকারী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মুজিবুল ইসলাম জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসময় ৪ ড্রাম ভর্তি পানীয়, ৭ হাজার লেভেল, খালি বোতল ৫ হাজার, ৪ হাজার চকলেট, রোবো লেভেল ৩ হাজার, স্পিড রোবো লেভেল ১০ হাজারসহ বিপুল পরিমাণ নকল জুস জব্দ করা হয়েছে। এছাড়াও আয়ুর্বেদিক অ্যালকুলিসহ বিভিন্ন ধরনের চকলেট জব্দ করা হয়।
তিনি জানান, পুড়িয়ে ধ্বংস করা হবে জব্দকৃত মালামাল। এছাড়া কিছু মেশিনারিজ রয়েছে সেগুলোও জব্দ করা হয়েছে। কারখানাটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। কারখানার মালিক লিটন মিয়ার বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দায়ের করা হবে। এছাড়া অবৈধভাবে আয়ুর্বেদিক ওষুধ তৈরি করায় ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।