মঙ্গলবার ২২ এপ্রিল ২০২৫ ৯ বৈশাখ ১৪৩২
মঙ্গলবার ২২ এপ্রিল ২০২৫
জজের বাড়ি বকের সারি!
শেরপুর জেলা প্রতিনিধি
প্রকাশ: রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪, ৩:৪৫ PM
শেরপুরের সীমান্ত উপজেলা ঝিনাইগাতির নিভৃত পল্লীর হাতিবান্ধা ইউনিয়নের কবিরাজ পাড়া।এই পাড়ার নির্জন গাছ সমৃদ্ধ ছায়া ঘেরা স্থানে খুলনা আদালতের জজ (বিচারক)রোজিনা আক্তারের বাড়ী।

আর এই বাড়ীর গাছে গাছে  কালো রাঙা ঠোট ও পা বিশিষ্ঠ পাখার পিছনের অংশ সাদাকালো রঙের বকের যেন এক কলোনি এইটি। ধপধপে সাদাকালো রঙের বক ছাড়াও ধূসর বক, বড় সাদা বক, মাঝারি সাদা বক, ছোট সাদা বক, ছোট বক ও ময়ুরপক্সক্ষী বকের দেখা মেলে এখানে। সকাল বিকাল এখানে বকের সারি বেঁধে বসে থাকা ও বকের আসা যাওয়ায় জজ বাড়ী বকের কলরবে মুখরিত থাকে। বছরের পর বছর ধরে ওরা এখানে আসা যাওয়ার মধ্যেই থাকে। তবে মহামারি করোনার পর থেকে বকের সংখ্যা বেড়েছে। 

জজ বাড়ীর ছোট ছেলে শাহীনুর ইসলাম রেজভি শাহীন জানিয়েছে আমার বোন কর্মস্থল থেকে পাখির খোঁজ রাখে নিয়মিত। এই বক গুলোর নাম শামুক খোল।বাড়ীটির আশেপাশে বিশাল এলাকা জুড়ে রয়েছে বিল। বিলে প্রচুর শামুক,মাছ ও ব্যাঙ রয়েছে। বিলের মধ্যে কোলহল মুক্ত ওই বাড়ীটি দীর্ঘ দিন থেকেই পাখিদের নিরাপদ আবাস।বক ছাড়াও ওই বাড়ীতে মিলবে মাছরাঙা,চিল,বাজপাখি,কাঠ ঠোকরা,ঘুঘ,টিয়াুসহ বিলুপ্ত প্রায় অনেক পাখি।

জজের বাড়ীতে সরজমিনে দেখা গেছে ঝোপঝাড় বাড়ীর এক পাশে দুটি বিশাল শিমুল গাছ।বকেরা অন্যান্য গাছে দৌড় ঝাপ করলেও তাদের আসল বসতি ওই শিমুল গাছকে ঘিরে। দেখা গেছে গাছ জুরে বসেছে পাখেদের মেলা। শাহীন জানিয়েছে পাখি গুলো বেশ আড্ডাবাজ ও শান্ত প্রকৃতির। এডাল ওডালে ঝগড়া,খুনসুটি,বাচ্চাদের যত্ন আর পাখিদের ডানার ছপাত ছপাত শব্দে বাড়িিট যেন পাখির দখলে। বিলাশ বাড়ী জুরে থাকে ২/৩জন মানুষ।জজবাড়ী জুড়ে রয়েছে বেশ কয়েটি আধা খনন পুকুর।পুকুর আর বাড়ী সংলগ্ন বিশাল বিলের শামুক ও জলজ প্রানী খেয়েই ওরা বেঁেচ থাকে।

বকেরা ডিম দেওয়ার আগে ওই বাড়ীতে থাকা অন্য কোন গাছ বাছাই করে নেয়।তারপর বাসা বানিয়ে ডিম ও বাচ্চা ফুটিয়ে বাচ্চাসহ আবার ওই শিমুল গাছে জায়গা করে নেয়। নিরবতা,গাছ ও পাখির মিতালিতে ওই বাড়ী প্রাঙ্গন ঘিরে সকল সন্ধ্যায় পুরো এলাকা আন্দোলিত হয় বকের কলতানে। পাখির সংখ্যায় বেড়ে যাওয়ায় বকগুলো এখন ছড়িয়ে পড়েছে ওই বাড়ীর পাশে অন্য কোন নির্জন।চৈত্র মাসে নদী-নালা কিংবা খাল-বিলে পানি আসার সাথে সাথে ওরা চলে আসে ওই বাড়িতে। এরপর প্রায় অগ্রহায়ন মাস পর্যন্ত থাকে ওখানে। এর মধ্যে বর্ষার প্রজনন মৌসুমে বক ছানা জন্ম নেয় ওখানে।শামুকখোল বকগুলো ফাল্গুন চৈত্র মাসে আসে আবার অগ্রহায়ন মাসের শেষের দিকে চলে যায়।তবে অন্য বকগুলো থাকে সারা বছর।

প্রকৃতির এই নীরিহ পাখি গুলো নিরপদে থাকে ওই জজ পরিবারে।নির্জন ওই বাড়ীতে কোন রকম ভয় ভ্রীতি নেই বলে এখন বাড়িটি পাখিদের অভয়াশ্রমে পরিণত হয়েছে বলেছেন শেরপুর বার্ড ক্লাবের সভাপতি মুগনিউর রহমান মনি। মনির দাবী ওই বাড়ীতে বিলুপ্ত প্রায় দেশীয় অসংখ্য পাখির দেখা মেলে।এজন্য মানুষ যাতায়াত সংরক্ষিত ও বর্তমান এই নিরব পরিস্থিতি বজায় রাখা দরকার।

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত