বুধবার ২৩ এপ্রিল ২০২৫ ১০ বৈশাখ ১৪৩২
বুধবার ২৩ এপ্রিল ২০২৫
যে কারণে খুন হন এমপি আনোয়ারুল আজীম আনার
বিশেষ প্রতিবেদক
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২৩ মে, ২০২৪, ১:৪৬ PM
কেন, কী কারণে পার্শ্ববর্তী দেশে নিয়ে আনোয়ারুল আজীম আনারকে খুন করা হলো, তার স্পষ্ট উত্তর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে নেই। তবে বেশ কিছু সন্দেহ সামনে রেখে তদন্ত করছেন বাংলাদেশ ও ভারতীয় গোয়েন্দারা। 

স্বর্ণ চোরাচালানের বিপুল অর্থের ভাগাভাগি নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে আজীমকে হত্যা করা হয়েছে ধারণা করা হচ্ছে। আজীম ও তাঁর বন্ধু ঠিকাদার আখতারুজ্জামান শাহীনের এপার-ওপারে যৌথ ব্যবসা আছে। হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী শাহীনের সঙ্গে আজীমের অর্থের ভাগাভাগি নিয়ে বিরোধ চলছিল। ঠিকাদারির পাশাপাশি হুন্ডির কারবার রয়েছে ওই বন্ধুর।  

কিলিং মিশনে শাহীন তাঁর বেয়াই চরমপন্থি নেতা আখতারুজ্জামানকে ব্যবহার করেছে। ব্যবসায়িক বিরোধের বাইরে কয়েক বছর আগে চুয়াডাঙ্গায় সাইফুল হত্যা এবং আরও এক চরমপন্থি নেতার খুনের প্রতিশোধ নিতে আজীমকে সরিয়ে দেওয়া হলো কিনা, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। 
শিলাস্তি রহমান

শিলাস্তি রহমান

এছাড়া কোনো স্বার্থান্বেষী গ্রুপ একত্রিত হয়ে গোপন ছকে এই আজীম হত্যার মিশনে সংশ্লিষ্ট কিনা, সেটি তদন্ত করছেন গোয়েন্দারা। ঝিনাইদহকেন্দ্রিক আজীমের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা অনেক দূর থেকে হত্যা পরিকল্পনায় জড়িত– আছে সেই আলোচনা। তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্রে এই তথ্য পাওয়া গেছে। 

পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, কী কারণে হত্যাকাণ্ড ঘটেছে তা জানতে তদন্ত চলছে। এটা পারিবারিক নাকি আর্থিক অথবা এলাকায় কোনো দুর্বৃত্ত দমন করার কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে কিনা, সবকিছু তদন্তের আওতায় আনা হবে। এটি নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ড– এটা মনে করেই তদন্ত কর্মকর্তারা কাজ করছেন। নিবিড়ভাবে ভারতীয় পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। কয়েকজন ডিবিতে আছে, তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাচ্ছি। তদন্তের স্বার্থে আমরা সবকিছু বলতে পারছি না।
আলোচনায় এই লাস্যময়ী নারী

আলোচনায় এই লাস্যময়ী নারী

জানা যায়, আজীমের পৈতৃক বাড়ি ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার মধুগঞ্জ বাজার এলাকায়। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। ঝিনাইদহ-৪ আসন থেকে ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে টানা তিনবার তিনি এমপি নির্বাচিত হন। তবে তাঁর অতীত কর্মকাণ্ড নিয়ে রয়েছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। এক সময় দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলের চরমপন্থিদের তিনি নিয়ন্ত্রণ করতেন বলে অভিযোগ রয়েছে। 

সীমান্তপথে অস্ত্র ও বিস্ফোরক পাচারের হোতা হিসেবেও পুলিশের তালিকায় তাঁর নাম ছিল। আজীমের বিরুদ্ধে অস্ত্র-বিস্ফোরক, মাদকদ্রব্য ও স্বর্ণ চোরাচালান, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, দখলবাজি এবং চরমপন্থিদের আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে মামলা রয়েছে। 

" align=

২০০৭ সালে চুয়াডাঙ্গার লোকনাথপুর এলাকা থেকে ১২ কেজি ৯৫০ গ্রাম স্বর্ণ জব্দ করে বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি)। চোরাকারবারিরা জানতে পারে, সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ী সাইফুল ইসলাম এই চালান ধরিয়ে দিয়েছেন। এর পর তাঁকে হত্যা করা হয়। ওই মামলায় আজীমসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। তবে ২০১২ সালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুপারিশে রাজনৈতিক বিবেচনায় আনারসহ বেশ কয়েকজন মামলা থেকে অব্যাহতি পান। 

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে আজীমের বিরুদ্ধে থাকা অন্য মামলাগুলো থেকেও তিনি অব্যাহতি পেতে শুরু করেন। আর ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর বেশির ভাগ মামলা থেকে নিজেকে মুক্ত করেন তিনি। 

স্থানীয়দের অভিযোগ, অবৈধ কারবারের মাধ্যমে বিপুল অর্থবিত্তের মালিক বনে যান এমপি আজীম। ১৯৯১ সালে ঝিনাইদহের আরেক চোরাকারবারি পরিতোষ ঠাকুরের সঙ্গে মিলে স্বর্ণ চোরাচালানে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৯৬ সালে তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দেন। এর পর কালীগঞ্জ পৌরসভার এক কাউন্সিলরের হাত ধরে অস্ত্র চোরাকারবারে জড়ান।
« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত