মানিকগঞ্জের হরিরামপুরের পদ্মা নদীতে জোয়ারের পানি আসা শুরু হতে না হতেই কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের নদী তীরবর্তী এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে, নতুন করে নদীর পাড় এলাকার গ্রামবাসী ভাঙনের আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন বলে তারা জানিয়েছেন।
জানা গেছে, ইতোপূর্বে থেকে শুরু হওয়া পদ্মার ভাঙনে এ ইউনিয়নের ভৌগলিক অবস্থানের বেশিরভাগ অংশই নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। গত প্রায় এক মাস আগে নদীতে জোয়ারের পানি আসতেই উপজেলার কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের কোটকান্দি থেকে উপজেলার মালুচী ঘাট এলাকায় তীব্র স্রোত ও ঢেউয়ের আঘাতে নদীর তীরবর্তী এলাকায় ভাঙন দেয়। এতে, বেশ কিছু ফসলের জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়া, বসতবাড়িসহ বিভিন্ন গাছপালা ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে ।
স্থানীয়রা জানান, নদীর তীরবর্তী স্থানে পানির গভীরতা বেশি ও জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নদীতে তীব্র স্রোত বেড়ে গেছে। এতে, নদীতে ঢেউয়ের সৃষ্টি হয়েছে । এর ফলে, ঢেউয়ের আঘাতে নতুন করে ভাঙন দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় মালুচী গ্রামের গোপাল সরদার জানান, তার বাড়ি ইতোপূর্বে একবার ভেঙে গেছে। তিনি এখনও পদ্মা পাড়েই বসবাস করছেন। পানি বাড়া শুরু হলে আবার ভাঙন শুরু হবে। নদীর স্রোত ও ঢেউয়ের আঘাতে ভাঙন তীব্রতা বেড়ে যায়। দ্রুত জিও ব্যাগ না ফেললে ইট সোলিং রাস্তাসহ পুরো চাপটাই নদীতে চলে যাবে।
একই এলাকার নোয়াব আলী জানান, কুশিয়ারচর পশ্চিমপাড়া পর্যন্ত জিও ব্যাগ পড়েছে। পার্শ্ববর্তী শিবালয়ের শেষ সীমানা মালুচী ঘাটের পশ্চিমে জিও ব্যাগ পড়েছে। তবে, মাঝের এই জায়গাটুকুতে এখনও জিও ব্যাগ পড়েনি। গত কয়েকদিনে জোয়ারের পানি আসতে শুরু করায় আবার ভাঙন শুরু হয়ে গেছে। এখনই ভাঙনরোধ করা না হলে পানি আরও বৃদ্ধি পেলে বড় ধরনের ভাঙন দেখা দিতে পারে।
কাঞ্চনপুর ইউপি চেয়ারম্যান গাজী বনি ইসলাম রূপক জানান, কোটকান্দি ওসমানের বাড়ি হতে মালুচি ঘাট পর্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। কুশিয়ারচর বিল্লাল মেম্বাবের বাড়ি পর্যন্ত জিও ব্যাগ পড়লেও তারপরে থেকে প্রায় এক কিলোমিটার এখনও কোনো জিও ব্যাগ পড়েনি। জোয়ারের পানি আসতে না আসতেই ওই এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। এছাড়াও কোটকান্দি এলাকায় জিও ব্যাগ নিয়েও নদীতে ধসে পড়ছে। তিনি ভাঙনের ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানিয়েছেন। তারা ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। তবে, দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে আবার পানি বাড়লে বড় ধরনের ভাঙন দিতে পারে।
মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাঈন উদ্দীন জানান, হরিরামপুরের নদী তীরবর্তী এলাকায় ভাঙরোধে বাঁধ নির্মাণ বাস্তবায়নের জন্য মানিকগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ে ডিও লেটার দিয়েছেন। এছাড়া, ভাঙনের পরিস্থিতি নিয়ে মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে দ্রুত নদীভাঙন রোধে প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু করা হবে বলেও তিনি জানিয়েছেন।