বৃহস্পতিবার ২৪ এপ্রিল ২০২৫ ১১ বৈশাখ ১৪৩২
বৃহস্পতিবার ২৪ এপ্রিল ২০২৫
শিক্ষা প্রশাসনের কাছে জালিয়াতির কথা স্বীকার করল বিকাশ রায়
নীলফামারী প্রতিনিধি
প্রকাশ: শনিবার, ২৫ মে, ২০২৪, ১২:৪২ PM
নীলফামারী কুন্দ পুকুর দ্বিমুখি উচ্চ বিদ্যালয়ে নিয়োগ জালিয়াতি করে আট বছর ধরে  শিক্ষাকতা করছেন বিকাশ রায়। ১৮ মে শনিবার এই সংক্রান্ত নিউজ বাংলাদেশ বুলেটিনে প্রকাশিত হলে সত্যতা খুজতে মাঠে নামে শিক্ষা প্রশাসন (২৩মে বৃহস্পতিবার দুপুরে) কুন্দু পুকুর দিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কক্ষে নিয়োগ জালিয়াতির বিষয়ে স্মারক নং ঊমাশিঅ/নীস/২৭৪/২৪/৮৩ এর আলোকে তদন্ত করেন উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার মো:গাজিউর রহমান।

তদন্তে সহকারী শিক্ষক  বিকাশ চন্দ্র রায়  অকপটে স্বীকার করেন,  বিদ্যালয় কে অবগত বা চাকরি থেকে ইস্তফা পত্র জমা না দিয়ে তিনি  নীলফামারী সদর উপজেলার  আরাজি রাম কলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৪/৭/২০১৬ সালে সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগদান করে সরকারি নীতিমালা কে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সোনালী ব্যাংক লিমিটেড নীলফামারী ৩৪১২৪৭৬১ হিসাব নম্বর থেকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের  বেতন তোলেন। পরবর্তীতে তিনি ব্যাংক চালান এর মাধ্যমে বেতনের টাকা জমা দেওয়ার কথা ও বলেছেন।

এ সময় কুন্দ পুকুর দ্বিমুখি উচ্চ বিদ্যালয় এর সহকারী শিক্ষক (বিজ্ঞান) পথটি শূন্য হওয়ায় বিকাশ চন্দ্র রায়ের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদানের কারণে  কুন্দপুকুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো: শাজাহান আলী চৌধুরী সভাপতিত্বে ২০১৬ সালের ২৪ জুলাই জরুরী আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয় সভায় ৪ নং আলোচ্য বিষয়র সিদ্ধান্ত হয়  সহকারী শিক্ষক( বিজ্ঞান) বিকাশ চন্দ্র রায় ১৪/৭/১৬ ইং তারিখে সহকারী শিক্ষক হিসেবে প্রাথমিক বিদ্যালয় যোগদান করায় নতুন শিক্ষক না আসা পর্যন্ত মাসিক ২০০০ টাকা বেতনে শংকর কুমার রায় কে খন্ডকালীন শিক্ষক নিয়োগ করা  র সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

কয়েক দিনের মাথায় (৭আগস্ট ২০১৬)  ম্যানেজিং কমিটির আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয় সভায়  ৩ নং আলোচ্য বিষয়ে মোঃ আশরাফুল ইসলাম  প্রস্তাব করেন যে সহকারী শিক্ষক( বিজ্ঞান) পদে বিকাশ চন্দ্র রায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদান করায় তাহার পদ শুন্য ঘোষণা করা হয়।

উক্ত প্রস্তাবটি শিক্ষক প্রতিনিধি  স্বপ্না রানীর সমর্থনে সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। পাশাপাশি সিদ্ধান্ত হয় যে এই পথটি শূন্য করার জন্য  প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেয়া হয়  প্রধান শিক্ষক খোকারাম রায় কে।

সহকারি শিক্ষক বিকাশ রায়ের প্রতারণা এখানেই শেষ নয় ১৮ মে শিক্ষা বার্তার প্রকাশিত সংবাদটির কপি করে ১৯ মে সংবাদটি প্রকাশ করান হয় দৈনিক খোলা কাগজে  এর পরে ২৪ মে সেখানে একটি প্রতিবাদ বিজ্ঞাপন ছাপিয়ে শিক্ষা প্রশাসনের চোখে ধুলো দেবার চেষ্টা করে। প্রতিবাদ বিজ্ঞাপনটিতে লেখা ছিলনা কোন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল সংবাদটি, প্রকাশিত সংবাদের কোন শব্দটি তিনি মিথ্যা বানোয়াট ও ভিত্তিহীন বলছেন। তুলে ধরা হয়নি সংবাদের সংক্ষেপ।  প্রতিবাদ বিজ্ঞাপনটিতে  প্রতিবেদকের কোন বক্তব্য ছিলনা। সহকারী শিক্ষক বিকাশ চন্দ্র রায় প্রধান শিক্ষকের কক্ষে অনিয়ম এর কথা স্বীকার করলেও । অর্থের বিনিময়ে দৈনিকে প্রতিবাদ বিজ্ঞাপন ছাপিয়ে শাক দিয়ে মাছ ঢাকার অপচেষ্টা করেছেন তিনি।

প্রধান শিক্ষক দ্বিজেন্দ্রনাথ রায় জানান ,কুন্দ পুকুর দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে অসুস্থতার সনদ দেখিয়ে  বিকাশ রায় প্রাইমারিতে যোগদান বেতন উত্তোলন ও  আবার সরকারি কোষাগারে উত্তোলনকৃত অর্থ জমা দেয়ার কথা স্বীকার করেছেন।

তদন্তকারী কর্মকর্তা উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার মো: গাজিউর রহমান জানান তদন্তে বিকাশ রায়ের অনিয়ম ও জালিয়াতি র প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গিয়েছে, তিনি অনিয়মের মাধ্যমে  সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরি করার কথা স্বীকার করেছেন। ।প্রধান শিক্ষকের নিকট সংশ্লিষ্ট কাগজপত্রাদি চাওয়া হয়েছে কাগজ গুলো হাতে পেলে আমরা তদন্ত প্রতিবেদন তৈরি করব।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো: আইবুল ইসলাম জানান,তদন্তকারী কর্মকর্তা প্রতিবেদন জমা দিলেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

জেলা শিক্ষা অফিসার মো: হাফিজুর রহমান জানান,তদন্ত দিয়েছি তদন্ত চলছে অনিয়ম পেলে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সহকারী শিক্ষক (বিজ্ঞান) বিকাশ চন্দ্র রায়  দীর্ঘ আট বছর ধরে নিয়োগ জালিয়াতির মাধ্যমে সরকারী নীতিমালা কে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে এমপিও  বেতন ভাতা উত্তোলন করে আসছে। তার বিরুদ্ধে স্বাধীনতা দিবস অবমাননা ও দিবসের বিভিন্ন অনুষ্ঠানকে কটুক্তি করার অভিযোগ করেছেন একাধিক শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ।

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত