লক্ষ্মীপুরের রামগতিতে জুমার নামাজের আগে মসজিদ থেকে হাফেজ মোঃ মাহমুদুল হাসান মিহির নামের এক ইমামকে তুলে নিয়ে ব্যাপক মারধর করে গুরুতর আহত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে স্থানীয় প্রভাবশালী কামাল পাশার পরিবারের বিরুদ্ধে।
এসময় কামাল পাশার ছেলে পরাধীন ও তার বন্ধু হোসেনসহ চার জন মিলে হকিস্টিক ও গাছের লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি পিঠিয়ে ইমামের পা ভেঙে দিয়ে পুরো শরীরে জখম করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আহত ইমামকে উদ্বার করে। পরে স্থানীয়রা নোয়াখালী সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে।
শুক্রবার জুমার নামাজের আগে চর পোড়াগাছা ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডে আজাদ নগরের বাজার সংলগ্ন হিরো দুলাল নামক ফার্মেসির ভিতরে এ ঘটনা ঘটে। এর আগে ইমাম হাফেজ মাহমুদুল হাসানকে ওই মসজিদ থেকে তুলে আনে তারা।
এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।প্রতিবাদে সন্ধ্যায় বিক্ষোভ করেছে স্থানীয়রা।
আহত ইমাম হাফেজ মাহদুদুল হাসান কামাল পাশা সমাজের ইব্রাহিম মালের মসজিদের ইমাম ও একই সমাজের দুই নং কলোনির বশির আহাম্মদের ছেলে।
স্থানীয়ভাবে জানা যায়, চর পোড়াগাছা ইউনিয়নের মোঃ কামাল পাশা তার শালীর সাথে ইমাম মাহমুদুল হাসান মিহিরের ছোট ভাই মোঃ মোশারফের বিয়ের সিদ্ধান্ত করে। ইমামের পরিবার এ বিয়েতে রাজি না থাকায় ইমামের ছোট ভাই বিয়ে করতে গড়িমসি করে। এতে কামাল পাশার পরিবার ইমামকে দোষারোপ করে তার উপর ক্ষিপ্ত হয়। তার জের ধরে কামাল পাশার ছেলে পরাধীন ও তার সহযোগী চার জন মিলে ইমাম মাহমুদুল হাসানকে জুমআর মসজিদ থেকে তুলে নিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। খবর পেয়ে রামগতি থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ইমামকে উদ্ধার করে।
পরে স্থানীয়রা নোয়াখালী সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে। ঘটনাটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে সন্ধ্যায় এলাকাবাসী মসজিদের সামনে এসে জড়ো হয়। ঘটনার সুষ্ঠ বিচার চেয়ে প্রতিবাদ মিছিল করেন তারা।
নির্যাতনের শিকার হাফেজ মাহমুদুল হাসান জানান, সকাল ১১ টার দিকে কামাল পাশার ছেলে পরাধীন সহ দুইজন তার মসজিদে যায়। তারা মসজিদ থেকে তাকে অটোরিকশা দিয়ে ভোট অফিসের হিরো দুলারের ফার্মেসীর ভিতরে নিয়ে যায়। সেখানে আরো দুইজন তাদের সহযোগী ছিল। এরপর কিছু বুঝে ওঠার আগেই কামাল পাশার ছেলে পরাধীন ও তার সহযোগী চারজন হকিস্টিক ও গাব গাছের লাঠি দিয়ে পুরো শরীরে ব্যাপক মারধর করে।একপর্যায়ে সে অচেতন হয়ে পড়লে তাকে সেখানে রেখে তারা চলে যায়।
তিনি আরো জানান, এরপর কামাল পাশার লোকজন এসে ঘটনাস্থল থেকে তাকে কামাল পাশার বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে কামাল পাশা তাকে আবারো মারার হুমকি দেন।
এ বিষয়ে ইবরাহিম মালের মসজিদের সহ সভাপতি ও লম্বাখালি সরকারি প্রাঃ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোঃ ওবায়দুল হক প্রতিবাদ মিছিলে উপস্থিত হয়ে বলেন, হাফেজ মাহমুদুল হাসান দীর্ঘ চার বছর ধরে আমাদের মসজিদে ইমামতি করেন। ইমাম সাহেব অত্যন্ত ভালো ও ভদ্র মানুষ। জুমার নামাজের পূর্বে আমাদের মসজিদ থেকে ইমামকে তুলে নিয়ে যেই নির্যাতন করা হয়েছে, তা অত্যন্ত লজ্জাজনক ও নিন্দনীয় কাজ। এ ঘটনার সুষ্ঠ বিচারেরও দাবি করেন তিনি।
অভিযুক্ত কামাল পাশার পরিবারের বড় ছেলে মো: সাদ্দাম হোসেন জানান, হাফেজ মাহমুদুল হাসান মারধরের শিকার হয়েছে শুনেছি।তবে এ ঘটনায় আমাদের পরিবারের কেউ জড়িত নয়।
রামগতি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: মোসলেহ উদ্দিন জানান, মারধরের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।