খুলনা জেলার রূপসা উপজেলার সিমান্ত এলাকায় নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় ৩ জনকে কুপিয়ে জখম করার ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। মামলা নং-১৯।
পুলিশ হোসেন শেখ ও মনসুর শিকদার কে গ্রেফতার করেছে। আহতরা খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে।
এলাকাবাসী ও মামলা সৃত্রে জানা যায়, গত ২১ মে দ্বিতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ফকিরহাট উপজেলা চেয়ারম্যান পদে উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি স্বপন কুমার দাস এর প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন উপজেলা যুবলীগের সাবেক আহবায়ক আলহাজ্ব ওয়াহিদুজ্জামান বাবু।
ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন ওহিদুজ্জামান বাবু।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, ফলাফল ঘোষণার পর থেকেই বিজয়ী চেয়ারম্যান বাবুর সমর্থকরা স্বপন দাসের সমর্থকদের হুমকি ধামকি দিয়ে আসছে।
গত ২৪ মে শুক্রবার নলধা মৌভোগ ইউনিয়নের মৌভোগ পশ্চিম পাড়া বাগে জান্নাত জামে মসজিদে জুম্মার নামাজ আদায় করতে মসজিদে যায় আহতরা। ফরজ দুই রাকাত শেষ হলে মসজিদের বারাদ্দায় প্রবেশ করে একই এলাকার মৃত লিয়াকত শিকদার এর ছেলে ইব্রাহিম সিকদার, হযরত শিকদার. আফসার সিকদার,টুকু শিকদারসহ ১০ / ১৫ জন দুর্বৃত্ত পরিকল্পিতভাবে দা,কুড়াল, লোহার রড়, হাতুড়িসহ লাঠিসোঁটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে পরাজিত প্রার্থী স্বপন দাসের সমর্থক ফজলে করিম শিকদার, মিরাজ শিকদার ও নুরজামানকে কুপিয়ে জখম করে এবং একটি মোটরসাইকেল ভাংচুর করে তারা।
ঘটনার পর মুসাল্লিরা তাদের উদ্ধার করে ফকিরহাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।
স্থানীয় বাসিন্দা আমজাদ সিকদার জানান, আনারস প্রতিকের চেয়ারম্যান প্রার্থী স্বপন দাসের পক্ষে আমরা নির্বাচন করি। যে কারণে মোটরসাইকেলের প্রতিকের সমর্থক বাবুর লোকজন অস্ত্রশস্ত্রসহ দলবল নিয়ে মসজিদের ভিতরে হামলা চালিয়ে আমাদের লোকদের আহত করে।
এখন ‘জীবন নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায়’ ভুগছেন বলেও জানান তিনি।
স্থানীয় ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো: জাহাঙ্গীর শেখ বলেন, আনারস প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী হেরে যাওয়ায় বিজয়ী মোটরসাইকেল প্রতিক বাবুর লোকজন আনারস প্রতিকের লোকজনের উপর মসজিদে গিয়ে হামলা করে তিনজনকে গুরুতর জখম করে। এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। মামলা দায়েরের পর পুলিশ দুইজনকে গ্রেফতার করেছে।
এ বিষয়ে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সরদার আমিনুর রশিদ মুক্তি বলেন, নির্বাচনে জনগণের রায়কে আমাদের সমর্থিত প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি স্বপন কুমার দাস মেনে নিয়েছে।
আমার প্রত্যাশা ছিল নতুন উপজেলা চেয়ারম্যানের সঙ্গে আমরা এলাকার উন্নয়নে একসাথে কাজ করবো। কিন্তু নির্বাচনের ফলাফলের রাত থেকেই বিজয়ী মোটরসাইকেল প্রার্থীর সমর্থকরা তারা যা শুরু করেছে তা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নৃশংসতাকেও হার মানায়।”
তিনি আরও বলেন, “আমি এই হামলার তীব্র নিন্দা জানাই ও দোষীদের গ্রেফতারের দাবি করছি। একই সাথে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দিতে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি প্রশাসনের প্রতি।
এ ঘটনায় কাঞ্চন শিকদার বাদী হয়ে ফকিরহাট থানায় ১২ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন।
অপরদিকে নির্বাচনের দিন ২১ মে গভীর রাতে একই ইউনিয়নের দোহাজারী গ্রামের ৮ নং ওয়ার্ড মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অঞ্জনা অধিকারীর বাড়ির কালী মন্দিরে দুর্বৃত্তরা অগ্নি সংযোগ করে। তিনিও পরাজিত প্রার্থী স্বপন দাসের সমর্থক ছিলেন বলে ইউপি চেয়ারম্যান জানান। অগ্নিসংযোগে কালী মন্দিরে প্রায় লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে অঞ্জনা অধিকারী জানান। ঘটনার পর মন্দিরে ২৪ঘন্টা পুলিশ পাহারার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
অগ্নি সংযোগের ঘটনায় ফকিরহাট থানায় মামলা দায়ের হলেও এখনো পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।