বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে পণ্যবাহী ট্রেনের পরীক্ষামূলক যাত্রার প্রস্তাব দিয়েছে ভারতীয় রেলওয়ে বোর্ড। পশ্চিমবঙ্গের গেদে থেকে ভুটান সীমান্তবর্তী ডালগাঁও পর্যন্ত বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে পণ্যবাহী ট্রেন চালাতে চায় ভারত।
রেলমন্ত্রী জিল্লুল হাকিম বলেছেন, বিষয়টি প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন দিল্লি সফরে বিষয়টি চূড়ান্ত হতে পারে। বাংলাদেশ রেলওয়ের লাভ-লোকসান এবং দেশের স্বার্থ বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বর্তমানে পাঁচটি রুটে বাংলাদেশ-ভারত ট্রেন চলে। তিনটি যাত্রীবাহী ইন্টারচেঞ্জ, বাকি দুটি পণ্যবাহী। বর্তমান পদ্ধতিতে ভারতীয় ট্রেন সীমান্তে আসার পর বাংলাদেশি ইঞ্জিনে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে আসে। বাংলাদেশি লোকোমাস্টার (চালক) তা চালিয়ে আনেন। ফিরে যাওয়ার সময়েও একই রকম নিয়ম অনুসরণ করা হয়।
পরীক্ষামূলক যাত্রার জন্য ভারতের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, তারা বাংলাদেশের ওপর দিয়ে দেশটির এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় ট্রেন নিতে চায়।
ভারত এর আগে প্রস্তাব দিয়েছিল, পরীক্ষামূলক যাত্রার পণ্যশূন্য রেলগাড়ি ভারতের গেদে থেকে বাংলাদেশের চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় আসবে। সেখান থেকে পাবনার ঈশ্বরদী, নাটোরের আব্দুলপুর, দিনাজপুরের পার্বতীপুর, নীলফামারী সীমান্তবর্তী চিলাহাটী স্টেশন হয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলার হলদিবাড়ী স্টেশনে যাবে। তবে দেশটির নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী ট্রেনটি হলদিবাড়ী থেকে যাবে ভুটান সীমান্তবর্তী ডালগাঁও স্টেশন পর্যন্ত।
বাংলাদেশের দর্শনা-ঈশ্বরদী-আব্দুলপুর-পার্বতীপুর-চিলাহাটী হয়ে গেলে ৩০০ কিলোমিটার পথ কমবে। আসাম, ত্রিপুরা, মেঘালয়, মিজোরাম, মণিপুর, অরুণাচল রাজ্যের সঙ্গে বাকি ভারতের রেল যোগাযোগ সহজ হবে।
ভারতের প্রস্তাব বিষয়ে সরকারের অন্যান্য সংস্থার মতামত নিচ্ছে রেলওয়ে। সম্প্রতি রেল সচিব ড. হুমায়ুন কবীরের সভাপতিত্বে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের প্রতিনিধিরা ছিলেন সভায়।
রেল সূত্র জানায়, ভারতের দেওয়া রুটের প্রস্তাবের বিপরীতে বাংলাদেশ দুটি বিকল্প প্রস্তাব তৈরি করছে। এর একটি হলো– ট্রেনটির রুট হবে বাংলাদেশের দর্শনা-চিলাহাটী হয়ে ভারতের হলদিবাড়ী-জলপাইগুড়ি-ধুপগুড়ি-ফালাকাটা-ডালগাঁও-জয়পুর হয়ে ভুটান সীমান্ত লাগোয়া হাসিমারা স্টেশন পর্যন্ত।