লক্ষ্মীপুরের কমলনগরে জোসনা আক্তার মুন্নি (৩০) নামে এক গৃহবধুর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বুধবার রাতে উপজেলার চর লরেন্স মুসলিম পাড়া এলাকার স্বামীর বসতঘর থেকে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে।
নিহত জোসনা ওই এলাকার প্রবাসী আলাউদ্দিনের স্ত্রী। ঘটনার পর থেকে স্বামী আলাউদ্দিনসহ শ্বশুর পক্ষের লোকজন পলাতক রয়েছেন।
এদিকে গৃহবধূর পরিবারের সদস্যদের দাবি পারিবারিক কলহের জের ধরে স্বামীসহ শশুরবাড়ির লোকজন জোসনাকে হত্যা করে গলায় ওড়না পেছিয়ে মরদেহ ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে রেখে গা ঢাকা দিয়েছেন। যে কারণে ঘটনাটি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে হত্যাকান্ডে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা।
জানা গেছে, ১৫ বছর আগে লরেন্স ২ নং ওয়ার্ডের মো: জামাল হেসেনের মেয়ে জোসনা আক্তার মুন্নির সঙ্গে একই ইউনিয়নের মুসলিম পাড়া এলাকার নজির আহাম্মদের ছেলে প্রবাসী আলাউদ্দিনের সাথে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। তাদের সংসারে ৯ বছরের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে।শুক্রবার(২৩শে মে) আলাউদ্দিন সৌদিআরব থেকে দেশে ফিরে। ৪ দিন পর স্ত্রীর লাশ উদ্ধারের এই ঘটনা ঘটে।
নিহত জোসনার মা জানান, মেয়ের বিয়ের পর থেকে জামাই আলাউদ্দিনের দাবির প্রেক্ষিতে বিভিন্ন সময়ে তারা মোটা অংকের যৌতুক দিয়েছেন,অনেক টাকা খরচ করে ভিসা কিনে তারা আলাউদ্দিনকে সৌদিআরবে নেন। কিন্তু এতো কিছুর পরও আলাউদ্দিন ও তার পরিবারের লোকজন জোসনাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতো। এ নিয়ে মেয়ের সংসারে কলহ লেগেই থাকতো।
তিনি আরো জানান, বিদেশ থাকতেই জামাই আমার মেয়েকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছে পরবর্তীতে দেশে এসে বুধবার রাতে পরিবারের সদস্যদের সহযোগিতায় মেয়েকে হত্যা করে ওড়না পেছিয়ে তার লাশ ঘরের ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে রাখে।
তিনি বলেন, এটি একটি নিশ্চিত হত্যাকান্ড কারণ জোসনার ঝুলন্ত লাশটি খাটের সাথে হাটুগেড়া ছিলো। এবং তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এ ব্যাপারে থানায় হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
এদিকে ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত আলাউদ্দিন সহ পরিবারের সদস্যরা বাড়ি ঘরে তালা ঝুলিয়ে পালিয়ে যাওয়ায় তাদের কোনো বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
কমলনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তহিদুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।