তরুণ থেকে বুড়ো সবার হাতে হাতে এখন স্মার্টফোন। তবে স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের একটি বড় অংশ সামাজিক মাধ্যমে আসক্ত হয়ে পড়ছে।
প্রতিবেদনে জানা গেছে যে, সামাজিক মাধ্যমের প্রতি আসক্তি এড়াতে স্মার্টফোন ছেড়ে বাটন ফোন বেছে নিচ্ছেন অনেক কিশোর ও তরুণ। এমনকি অনেক বাবা-মাও একই পথে হাঁটছেন।
কিশোরদের পাশাপাশি অনেক বাবা-মাও বাটন ফোনের দিকে ঝুঁকছেন। শুধু ছেলে-মেয়ের কথা ভেবে নয়, পরিবারে নিজেদের উপস্থিতি বাড়াতে এই পন্থা বেছে নিয়েছেন তারা।
স্মার্টফোন ছেড়ে এখন বাটন ফোন ব্যবহার করেন, এমন কিশোরদের একজন লুক মার্টিন। ১৬ বছর বয়সী মার্টিন কানাডার নাগরিক। মার্টিন বলেন, সামাজিক মাধ্যম আমাদের মাঝে হারিয়ে যাওয়ার ভয় (ফমো) তৈরি করছে। তাই আমার মনে হয়েছে আমিও এর বাইরে যেতে পারব না।
তার মতো আরও অনেকে এই সমস্যার মুখোমুখি হয়েছেন। মাদক বা অন্য কোনো নেশা জাতীয় দ্রব্যের ওপর মানুষ আসক্ত হলে মস্তিষ্কের যে অংশে চাপ পড়ে সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারের কারণে ওই একই অংশে চাপ পড়ে বলে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সমীক্ষায় উঠে এসেছে। এর ফলে তরুণদের মধ্যে স্মার্টফোনের ব্যবহারের অভ্যাস নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে।
লিজি ব্রাউটনের পাঁচ বছরের একটি ছেলে রয়েছে। সম্প্রতি তিনি পুরোনো মডেলের একটি নোকিয়া ফোন কিনেছেন। তিনি বলেন, এই ফোন আমার নিজের অভ্যাস বদলাতে সাহায্য করেছে। ছেলের সঙ্গে আমি আরও বেশি গুণগত সময় পার করতে পারছি।
গবেষণা বলছে, যুক্তরাজ্যে পাঁচ থেকে সাত বছর বয়সী প্রায় এক চতুর্থাংশ শিশুর এখন নিজের স্মার্টফোন রয়েছে। সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার এবং মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাবের মধ্যে সম্পর্ক রয়েছে, বিশেষ করে শিশুদের ওপর, বেশ কিছু গবেষণায় এমন তথ্য পাওয়া গেছে। স্মার্টফোনের অতিরিক্ত ব্যবহার ঠেকাতে অনেকে বয়সসীমা চালুর দাবি করেন।
মার্টিনের মতো অনেকে আবার স্মার্টফোন ছেড়ে বাটন ফোন বেছে নিয়েছেন। এখন মার্টিন যে ফোন ব্যবহার করেন সেই ফোনে শুধু টেক্সট, কল, ম্যাপ এবং আরও কয়েকটি নির্দিষ্ট টুল রয়েছে।
তিনি বলেন, আমার বন্ধুরা দিনে চার থেকে পাঁচ ঘণ্টার মতো ফোন ব্যবহার করে। আমিও আগে এত সময়ই ব্যবহার করতাম। কিন্তু এখন আমি দিনে ২০ মিনিটের মতো ফোনে সময় কাটাই, যা সত্যিই ভালো। কারণ আমি এটি প্রয়োজনের সময় ব্যবহার করি।