দক্ষিণাঞ্চলীয় আহমাদি গভর্নরেটের মানগাফ এলাকায় বহুতল আবাসিক ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪৩ জনে দাঁড়িয়েছে। শ্রমিকদের আবাসন কাজের জন্য ব্যবহৃত ওই ভবনের অগ্নিকাণ্ডে আহত হয়েছেন আরও অর্ধ-শতাধিক।
নিহতদের মধ্যে ৪০ জনই ভারতীয় নাগরিক বলে খবর দিয়েছে দেশটির সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে। তবে কুয়েতে অগ্নিকাণ্ডে হতাহতদের মধ্যে কোনও বাংলাদেশি নাগরিক আছেন কি-না তাৎক্ষণিকভাবে তা জানা যায়নি।
বুধবার স্থানীয় সময় ভোরের দিকে মানগাফ এলাকার ছয় তলা ওই ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ অগ্নিকাণ্ডের খবর পায় সকাল ৬টার দিকে বলে জানিয়েছেন দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তা মেজর জেনারেল আইদ রাশেদ হামাদ।
পুলিশের জ্যেষ্ঠ এক কমান্ডার বলেছেন, ‘‘যে ভবনটিতে আগুন লেগেছে সেটি শ্রমিকদের জন্য ব্যবহার করা হতো। অগ্নিকাণ্ডের সময় সেখানে অনেক শ্রমিক ঘুমিয়ে ছিলেন। তাদের মধ্যে কয়েক ডজন শ্রমিককে উদ্ধার করা হয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে অগ্নিকাণ্ডে অনেকে মারা গেছেন।’’
ভিডিও দেখুন নিচের লিংকে:
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে কুয়েতে অগ্নিকাণ্ডে ভারতীয়দের হতাহতের ঘটনায় গভীর শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করেছেন।
এক্সে তিনি লিখেছেন, ‘‘কুয়েতে অগ্নিকাণ্ডের খবরে আমি গভীরভাবে মর্মাহত। সেখানে ৪০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া অর্ধ-শতাধিক মানুষ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বলে জানা গেছে। আমাদের রাষ্ট্রদূত ক্যাম্পে গেছেন। আমরা বিস্তারিত তথ্যের জন্য অপেক্ষা করছি।’’
ভারতীয় রাষ্ট্রদূত বলেছেন, ‘‘আজকের অগ্নিকাণ্ডে আহত ৩০ জনেরও বেশি ভারতীয় শ্রমিককে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’’
কুয়েতের অপরাধ তদন্ত বিভাগের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল ইদ আল ওয়াইহান প্রাথমিকভাবে অগ্নিকাণ্ডে ৩৫ জনের প্রাণহানির তথ্য নিশ্চিত করেছেন। পরে আহতদের মধ্যে আরও ছয়জন একটি হাসপাতালে মারা গেছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
ফায়ার ডিপার্টমেন্টের একটি সূত্র বলছে, ভবনটির গ্রাউন্ড ফ্লোরে আগুন লাগার পর ধোঁয়া ওপরের দিকে উঠে যায়। যে কারণে সেখানে ঘুমিয়ে থাকা শ্রমিকরা দমবন্ধ হয়ে মারা গেছেন। কুয়েতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এই ঘটনার পর মানগাফ ও তার আশপাশের এলাকার সব হাসপাতালে উচ্চ-সতর্কতা জারি করেছে।
আহত ব্যক্তিদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসার জন্য নিকটবর্তী বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর।
এছাড়া অগ্নিকাণ্ডে আহতদের যথাযথ চিকিৎসা সেবা দেওয়ার জন্য মেডিকেল দলগুলো তাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাচ্ছে বলেও মন্ত্রণালয় আশ্বস্ত করেছে।