কটুক্তিমূলক কথা সইতে না পেরে ঈশ্বরদীতে রিয়া খাতুন (১৯) ও সাজেদুল ইসলাম (২১) নামের এক দম্পতি বিষপানের ঘটনা ঘটেছে।
গতকাল (৩০ জুন) রোববার এই হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটেছে উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়নের চরগড়গড়ি ফটিক মোড়ের আজতব প্রামানিক বাড়িতে। বিষপানের ফলে সোমবার গৃহবধু রিয়া খাতুন মৃত্যুবরণ করেছে।
স্বামী সাজেদুল ইসলাম (২১) রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এখনও মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। নিহত রিয়া ঈশ্বরদীর সাহাপুর ইউনিয়নের আজিজলতলা এলাকার লেরু মোল্লার মেয়ে। আর সাজেদুল একই ইউনিয়নের চরগড়গড়ি এলাকার আজতব প্রামানিকের ছেলে।
সাজেদুলের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, প্রায় একমাস আগে রিয়া ও সাজেদুল প্রেম করে পালিয়ে বিয়ে করে। রিয়ার পরিবার বিয়ে মেনে না নিলেও সাজেদুলের পরিবার বিয়ে মেনে নেয়।
সাজেদুলের বাড়িতে শ্বশুড়, শ্বাশুড়ি, ননদসহ আত্মীয়দের নিয়ে সুখেই ছিলো রিয়া। কিন্তু রিয়ার দূর সম্পর্কের নানী (চাচির মা) শ্বশুড় বাড়িতে গিয়ে রিয়াকে নানারকম কটুক্তিমূলক কথা বলেন। একপর্যায়ে থুথু ফেলে তাদের ভালবাসার বিয়ের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করেন। এতে চরমভাবে অপমানিত হয়ে সাজেদুল ও রিয়া পরিবারের লোকজনের চোখের আড়ালে নিজ ঘরে ঘাস মারা বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করে।
পরে বাড়ির লোকজন টের পেয়ে তাদের উদ্ধার করে প্রথমে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল (রামেক) ভর্তি করে। সেখানেই সোমবার সকালে রিয়ার মৃত্যু হয়। স্বামী সাজেদুল জীবন সংকটে অচেতন অবস্থায় মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে।
সাজেদুলের পিতা আজতব প্রামানিক জানান, ঘটনার দিন সকালে তিনি রিয়ার দেওয়া ভাত খেয়ে মাঠে কাজে যান। এসময় মেয়ে অসুস্থ্য হওয়ায় তাকে নিয়ে ডাক্তারের দেখাতে যান তার শ্বাশুড়ি। এ সুযোগে রিয়া ও সাজেদুল বিষপান করে অসুস্থ্য হয়ে পড়ে। তাদের রাজশাহী মেডিক্যালে ভর্তি করা হলে রিয়া মারা যায়। সাজেদুলের অবস্থাও ভাল না।
ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রফিকুল ইসলাম জানান, নবদম্পতি বিষপান করেছে বলে শুনেছি। নববধু রিয়া রামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে। বিষপানের কারণ জানতে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।