সোনাগাজী চর সাহাভিকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি ডাঃ আবদুল হকের বিরুদ্ধে শিক্ষক ও কর্মচারিকে হয়রানি অভিযোগে লিখিত অভিযোগ করেছেন বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক শিক্ষিকা।
গত রবিবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামরুল হাসানের কাছে এ অভিযোগ করা হয়। একইসঙ্গে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতির বিষয়টি জানান শিক্ষক শিক্ষিকা বৃন্দ।
অভিযোগ ও বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বিদ্যালয়ের সভাপতি ডাঃ আবদুল হক বিভিন্ন সময় স্কুলের শিক্ষকদের আইন বহির্ভূত নির্দেশনা দিয়ে থাকেন । যদি তার আদেশ অনুযায়ী কাজ না করা হয় তখন তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে শিক্ষকদের সাথে খারাপ আচরণ করেন এবং শিক্ষক ও কর্মচারীকে অযথা কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করেন। এছাড়া প্রধান শিক্ষকে জয়নাল আবেদীনের সাথে হিসাব সংক্রান্ত বিরোধ করে আদালত পর্যন্ত গড়ায়।
আদালত প্রধান শিক্ষককে পুনঃবহালের আদেশ দিলেও তিনি পুনঃবহাল করেন নি। এ রকম অভিযোগ এনে শিক্ষকরা কর্ম বিরতির ঘোষণা দেন। এ নিয়ে শিক্ষদের মাঝে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন স্কুলের শিক্ষকবৃন্দ। এ বিষয়টি নানা ভাবে জানাজানি হলে ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকের মাঝে ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে।
অভিভাবক বেলায়েত হোসেন বলেন, আমার ছেলে ও মেয়ে বর্তমানে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। সভাপতি ও শিক্ষদের বিষয়গুলোর কারণে যদি শিক্ষাক্রম ব্যাহত হয় এটি হবে অতন্ত্য দুঃখের। ফলে আমাদের সন্তানদের বড় ধরনের ক্ষতি হবে।
শিক্ষিকা শুকলা রাণী বলেন, আমাকে অযথা কারণ দর্শানোর নোটিশ পর পর দুইবার দিয়েছেন। আমার জানামতে আমি এমন কোন অন্যায় কাজ করি নাই যার জন্য আমাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিতে পারে। আমার যতটুকু জানা সভাপতি সাহেব আমাকে একবার উনার বাড়িতে ঢেকে বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদ নির্বাচনে পূর্বের শিক্ষকদের সমর্থন দিতে বলেছেন। আমি দিই নাই বলে আমাকে এভাবে হয়রানি করতে পারে বলে ধারণা করছি।
শিক্ষিকা জাহিয়া আহমেদ বলেন, সভাপতি শিক্ষদের মানসিক ভাবে টর্চার করছেন৷এতে করে শিক্ষরা মানসিক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তাই সকল শিক্ষকের সম্মতিক্রমে কর্ম বিরতির সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
ম্যানেজিং কমিটির সদস্য নুর আহম্মদ বাবুল বলেন, সভাপতির আচরণে আমরা সদস্যরা অতিষ্ঠ এবং শিক্ষকরাও অতিষ্ঠ। আমরা এপ্রিলের ১২ তারিখে চলমান সমস্যা নিয়ে প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়ে চিঠি দিয়েছিলাম।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) খায়ের উল্যাহ বলেন, সভাপতি এককভাবে বিভিন্ন সময় সিধান্ত নিয়ে থাকেন। আমরা সম্মিলিত যত সিদ্ধান্তের কথা বলি উনি তা মানতে নারাজ। উনার এমন আচরণে শিক্ষকতার স্বাদ মিটে গেছে। এখন আর চাকুরী করতে ইচ্ছে করে না। আমরা বিষয়টি ইউএনও মহোদয়কে লিখিত ভাবে জানিয়েছি।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের সভাপতি ডাঃ আবদুল হক কে ০১৬১১৭৫০২৬২ নাম্বারে ফোন দিলে বলেন এ বিষয়ে আমার কোন বক্তব্য নাই।
মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নুরুল আমিন বলেন, সভাপতির বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ এনে কর্ম বিরতির চিঠি গতকাল শিক্ষকরা দিয়ে গেছে। আমি বিষয়টি ইউএনও মহোদয়কে জানিয়েছি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামরুল হাসান শিক্ষকদের পক্ষ থেকে অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ বিষয়টি সুষ্ঠু সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।