বুধবার ২৩ এপ্রিল ২০২৫ ১০ বৈশাখ ১৪৩২
বুধবার ২৩ এপ্রিল ২০২৫
কোটা আন্দোলন: সড়কে দিনভর ভোগান্তিতে বিক্ষুব্ধ সাধারণ যাত্রীরা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: বুধবার, ১০ জুলাই, ২০২৪, ৭:২৫ PM
সকাল থেকে দিনভর অধিকাংশ সড়ক খালি দেখা গেছে। ছিল না পর্যাপ্ত বাস। জরুরি কাজে ঘর থেকে বেরিয়ে সড়কে ভোগান্তিতে পড়েছেন মানুষ। কারণ মোড়ে মোড়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের রাস্তা ব্লক করে অবস্থান করার কারণে যানচলাচল অনেকটাই স্থবির। 

জরুরি সেবা, অ্যাম্বুলেন্স, স্কুল ফেরত শিক্ষার্থীদের গাড়ি এবং ওষুধ ও খাদ্য পণ্য বহনকারী যানবাহন ছাড়া কোনো গাড়িয়ে চলতে দেওয়া হয়নি। 

যেসব এলাকায় মোড় সংলগ্ন বাইপাস অথবা ডাইভারশন সড়ক রয়েছে, সেখানে ট্রাফিক পুলিশের পক্ষ থেকে আটকে পড়া যানবাহনগুলোকে ডাইভারশন করে ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। তবে, বেশি বিপাকে পড়েছেন রমনা এলাকায় চলাচলকারীরা, যেখানে সড়ক ডাইভারশন করার ব্যবস্থাও সীমিত।
বুধবার দিনভর বাংলা ব্লকেড পালনে আগারগাঁও, শেরেবাংলা নগর, উড়োজাহাজ ক্রসিং, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, বাংলা মোটর, হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়, শাহবাগ, টিএসসি, দোয়েল চত্বর, মৎস্য ভবন, কাকরাইল মোড়, নাইটিঙ্গেল মোড়, ফার্মগেট, চানখারপুল মোড়, চানখারপুল ফ্লাইওভারে ওঠার মোড়, বঙ্গবাজার, শিক্ষা চত্বর, জিপিও, গুলিস্তান, সায়েন্সল্যাব, নীলক্ষেত, রামপুরা ব্রিজ, ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক ও মহাখালী এলাকায় সড়কে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। 

তেজকুনি পাড়া থেকে অ্যাম্বুলেন্সে রোগী পাঠিয়ে নিউরো সায়েন্সের উদ্দেশ্যে রওনা দেন সোহেল রানা। তাকে বহন করা সিএনজিচালিত অটোরিকশা আটকে যায় আগারগাঁওয়ে। কোনোভাবেই আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের বোঝাতে না পেরে পায়ে হেঁটে গন্তব্যে রওনা দেন তিনি।
তিনি বলেন, ভাবছিলাম রোগীর স্বজন আমি... জরুরিভিত্তিতে হাসপাতালে যাওয়া দরকার। নিশ্চয় আমারে ছাড়বে। ছাড়ল না। এমন ভোগান্তি হাজারো মানুষের। দেখার ও বোঝার কেউ নেই, কারে বোঝামু? 

তালতলায় নিজ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের উদ্দেশে রওনা দিয়ে আটকে যান আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, নিজ গাড়িতে বসা, ওরা যেতে দিলো না। বাধ্য হয়ে ফিরতে চাইলাম, তাও দেবে না। ঘণ্টাখানেক আটকে থাকার পর অনুরোধ করে উল্টো পথে নির্বাচন কমিশনের সামনে দিয়ে গন্তব্যে রওনা দিলাম। এমন অনেকে আমার মতো আজ সারা শহরে ভুগছে।
বাটা সিগন্যাল এলাকায় একজন বাসযাত্রী দীর্ঘ সময় আটকে ছিলেন। পরে এলিফ্যান্ট রোডের মাথায় আসেন। দেখেন চারদিক বন্ধ, শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিচ্ছেন। বিরক্ত ওই মধ্যবয়সী যাত্রী বলেন, সমাধান তো কাউকে না কাউকে করতে হবে না-কি? আপনার বা আমার হাতে তো সমাধান নেই। আন্দোলন করছে ওরা, ভুগছি সাধারণ মানুষ। 
রমনা বিভাগের অতিরিক্ত  উপ-কমিশনার(এডিসি) মো. সোহেল রানা বলেন, আমরা চেষ্টা করছি মানুষ যাতে ভোগান্তিতে না পড়েন। আজকে পরিস্থিতি বুঝে অনেক মানুষ ঘর থেকে বের হননি। কিন্তু যারা বেরিয়েছেন, তারা পড়ছেন বিপাকে। কারণ রাস্তা খালি মনে হলেও প্রতিটি সিগন্যাল, মোড়ে মোড়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অবস্থানের কারণে যানচলাচল করতে পারছে না। 
তিনি বলেন, আমরা নিকটস্থ মোড়ের অলিগলি দিয়ে ডাইভারশন করার চেষ্টা করছি। কিন্তু রমনা এলাকায় অধিকাংশ ট্রাফিক সিগন্যালের কাছে ডাইভারশন করার মতো সড়ক নেই বললেই চলে। পুরো রমনা এলাকায় যানচলাচল একরকম স্থবির।

এদিকে, মুক্তিযোদ্ধা কোটা ইস্যুতে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের ওপর আপিল বিভাগের স্থিতাবস্থার আদেশের পরও তা প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত