ফেনীর সোনাগাজী চর চান্দিয়া ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের রসুলপুর থেকে চরদরবেশ ইউনিয়নের ইতালি মার্কেট সড়কের খালের ওপর দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে প্রায় ৬৬ লক্ষ টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন ব্রিজের কাজ বন্ধ প্রায় তিন বছর ধরে।
চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন এলাকার ২০ হাজারের বেশি মানুষ। স্থানীয়রা জানান কাঙ্ক্ষিত ব্রিজটির নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ায় অনেক খুশি হয়েছিলাম। গত ৩ টি বছর কাজটি বন্ধ থাকায় চরম হতাশার পাশাপাশি ভোগান্তি পোহাচ্ছি। এছাড়া বিকল্প সড়ক নির্মাণ না করেই পূর্বের কালবার্টটি ভাঙা হয়।
পরে স্থানীয়রা বাঁশ দিয়ে একটি সাঁকো তৈরি করে বর্তমানে সাঁকোটাই একমাত্র ভরসা। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, খালের ভিতর পাইলিং এর কাজ শেষ হয়েছে। পশ্চিম পাশে রাস্তার মাঝখানে সামান্য কিছু পাথর ছাড়া আর কিছু নাই। জানাযায় কিছুদিন কাজ করার পর অজ্ঞাত কারণে ব্রিজের কাজ ফেলে উধাও হয়ে যান ঐ ঠিকাদার।বর্তমানে ব্রিজের নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে। এতে স্থানীয়দের জীবন যাত্রা দূর্বিষহ হয়ে উঠেছে।
স্থানীয় আবুল কালাম নামের এক সমাজপতি বলেন, আমাদের বাচ্চাকাচ্চার স্কুল মাদ্রাসা, আমাদের হাট বাজার সব ব্রিজের পূর্ব পাশে। প্রতিনিয়ত এ সাঁকো দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে পারাপার হতে হচ্ছে। আমরা অতিদ্রুত ব্রিজটির কাজ সম্পন্ন করতে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
কৃষক ছায়েদ উল্যাহ বলেন, আমাদের চাষের জমি গুলো ব্রিজের পশ্চিম পাশে। এ ব্রিজের কারণে ৩ ফসলি চাষাবাদ করা সম্ভব হয় না। কারণ চাষাবাদ করে ফসল ঘরে আনা সম্ভব না। কিভাবে আনবে সাঁকো দিয়ে নিজে পার হওয়া কষ্টের। চাষে ১০ টাকার জায়গায় খরচ হয় ১০০ টাকা।
স্থানীয় মাদ্রাসার শিক্ষক শহিদুল ইসলাম মামুন বলেন, এ ব্রিজটি না থাকায় ঝুঁকি নিয়ে সাঁকো দিয়ে শিক্ষার্থীরা মাদ্রাসায় আসা যাওয়া করে। অনেক অভিভাবক নিয়মিত শিক্ষার্থীদের মাদ্রাসায় পাঠায় না। এতে করে শিক্ষা কার্যক্রম থেকে ছিড়কে পড়ছে।
মেসার্স মনোয়ার হোসেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সত্ত্বাধিকারী মনোয়ার হোসেন স্বপন বলেন, আমি ও আমার স্ত্রী দীর্ঘ দিন অসুস্থ থাকার কারণে কাজটি শেষ করা সম্ভব হয়নি। পাইলিং এর কাজ সম্পন্ন করেছি। এছাড়া পাশে একটি সাঁকো করে দিয়েছিলাম। এ বর্ষা শেষ হলে কাজ ধরবো।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃ শাহাজাহান বলেন, রাস্তাটি চরচান্দিয়া ও চরদরবেশ ইউনিয়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা। এ রাস্তা দিয়ে দৈনিক হাজার মানুষের যাতায়াত ছিল। ২০২২ সালে পাইলিং করে ঠিকাদার চলে যায়। এখন পর্যন্ত এভাবে ব্রিজটির কাজ পড়ে আছে। এলাকার মানুষদের দুর্ভোগের শেষ নাই। বিষয়টি আমাদের চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে সকল স্তরের জনপ্রতিনিধিদের অবগত করেছি।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন মিলন বলেন, এ ব্রিজের কাজ বন্ধ থাকায় স্থানীয়রা চরম ভোগান্তিতে আছে। তারা প্রতিনিয়তই আমাদেরকে বিরক্ত করছেন। আমি বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন কে অবগত করেছি।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ইকবাল হাসান বলেন, ঠিকাদারকে একাধিকবার এ বিষয়ে তাগিদ দেয়া হয়েছে। অতিদ্রুত কাজটি সম্পন্ন করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামরুল হাসান বলেন, বিষয়টি আমি অবগত হয়েছি। এবং এটি গুরুত্ব সহকারে দেখছি।