বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৬ সমন্বয়ক গতকাল রোববার সকল আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। তবে এই ঘোষণাকে প্রত্যাখ্যান করে গতকালই নতুন করে আন্দোলনের ডাক দেন আরও কয়েকজন সমন্বয়ক।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ বলেন, ডিবি কার্যালয়ে সমন্বয়কদের জিম্মি করে, ব্ল্যাকমেইল করে এই লিখিত বক্তব্য পাঠ করানো হয়েছে। অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে বিবৃতি আদায় ছাত্রসমাজ মেনে নেবে না।
ঘোষণা অনুযায়ী আজ সোমবার সারা দেশে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ কর্মসূচি এবং প্রতিবাদ সমাবেশ করার কথা তাদের। কিন্তু রাজধানীর কোনো সড়কে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ করার খবর পাওয়া যায়নি এখনো।
আজ দুপুরে মহাখালী ওভারব্রিজের নিচে গিয়ে দেখা গেছে, অন্যান্য দিনের তুলনায় সড়কে পুলিশের উপস্থিতি বেশি। ডিএমপির গুলশান জোনের ডিসি রিফাত রহমান শামীম বলেন, জামায়াত-শিবিরের দুষ্কৃতিকারীরা আবারও এখানে ঝামেলা করতে পারে। এই খবরেই অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
জনগণকে আশ্বস্ত করে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, আপনারা ভয় পাবেন না। আপনাদের নিরাপত্তা দেবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
গতকাল সন্ধ্যায় মিন্টু রোডের ডিবি কার্যালয় থেকে সব কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৬ সমন্বয়ক। এক লিখিত ও ভিডিও বার্তায় তারা সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবিও জানান। এ ছাড়া কোটা সংস্কার আন্দোলনে প্রাণহানি ও সহিংসতার ঘটনার নিন্দা জানান ৬ সমন্বয়ক।
লিখিত বার্তাটিতে সই করেন, মো. নাহিদ ইসলাম, মো. সারজিস আলম, হাসনাত আব্দুল্লাহ, মো. আবু বাকের মজুমদার, আসিফ মাহমুদ ও নুসরাত তাবাসসুম।
বলা হয়, কোটা সংস্কার আন্দোলন ও তার প্রেক্ষিতে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অনেকেই অপ্রত্যাশিতভাবে আহত এবং নিহত হয়েছেন। তাছাড়া রাষ্ট্রীয় স্থাপনায় অগ্নিসংযোগ সহ নানা সহিংস ঘটনা ঘটেছে। আমরা এ সকল অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই এবং সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত বিচারের দাবি জানাচ্ছি।
এতে আরও বলা হয়, আমাদের প্রধান দাবি ছিল কোটার যৌক্তিক সংস্কার যা ইতিমধ্যে সরকার পূরণ করেছেন। এখন শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে দ্রুত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি জোর আহ্বান জানাই। সার্বিক স্বার্থে আমরা এই মুহূর্ত থেকে আমাদের কর্মসূচি প্রত্যাহার করছি।