ইসলামী ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে পাল্টাপাল্টি অবস্থান নিয়েছে দুই পক্ষ। রোববার সকালে ব্যাংকের ছয়জন গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে গুরুতর আহত তিনজন। সবাইকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
রোববার (১১ আগস্ট) সকাল সোয়া ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। গুলিবিদ্ধরা হলেন- ইসলামী ব্যাংকের গোডাউন গার্ড (ডিজি) শফিউল্লাহ সরদার, অফিসার মামুন, আব্দুর রহমান, বাকী বিল্লাহ ও অন্যান্যরা । কয়েকশো বহিরাগত জোর করে ইসলামী ব্যাংকে প্রবেশের চেষ্টা করেন। এসময় তাদের প্রবেশে বাধা দিলে কর্মকর্তাদের ওপর এলোপাতাড়ি গুলি চালানো হয়।

ইসলামী ব্যাংকের একাধিক কর্মকর্তা জানান, সকালে ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারের সামনে কয়েকশো বহিরাগত অবস্থান নেন। তারা জামানতবিহীন, অনিয়ম করে লোন কেলেঙ্কারির প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। হঠাৎ এস আলম গ্রুপের হয়ে কাজ করা কয়েকজন কর্মকর্তাসহ প্রায় শতাধিক লোক অস্ত্র নিয়ে প্রবেশের চেষ্টা করেন। তাদেরকে বাঁধা দিলে অস্ত্রধারীরা এলোপাতাড়ি গুলি করেন। তাদের গুলিতে কর্মকর্তারা আহত হন। তাদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা গুরুতর। পরে উপস্থিত কর্মকর্তারা পাল্টা ধাওয়া দিলে তারা পালিয়ে যায়।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার ইসলামী ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক থেকে কায়সার আলী পদত্যাগ করেন। বর্তমানে প্রধান কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন সাধারণ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এস আলম পন্থীরা বহিরাগত এনে ইউনূস সেন্টারের দিক অস্ত্রসহ অবস্থান নিয়েছে।
ইসলামী ব্যাংক প্রতিষ্ঠার পর থেকে জামায়াত পন্থীদের মাধ্যমে পরিচালিত হতো। ২০১৭ সালে রাজধানীর রেডিসন হোটেলে সব পরিচালক ও এমডিদের তুলে নিয়ে ব্যাংকেরর মালিকানা বদল হয়। ব্যাংকটি তুলে দেওয়া হয় এস আলম গ্রুপের হাতে। এর পর থেকে এর থেকে এর আর্থিক অবস্থা চরম খারাপ হয়েছে। শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে ভারতে যাওয়ার পর থেকে এস আলম পন্থীরা আর ব্যাংকে আসছেন না।
বিক্ষোভকারীরা জানান, সরকার পতনের পরও বিভিন্ন উপায়ে ঋণের নামে অর্থ বের করে নেওয়ার চেষ্টা করছে এস আলম গ্রুপের লোকজন। গত সপ্তাহে তাদের বেনামি ঋণের ৮৪৮ কোটি টাকার চেক আটকে দেওয়া হয়। প্রধান কার্যালয় ও কয়েকটি শাখার কর্মকর্তাদের সহায়তায় আরও বিপুল অংকের অর্থ বের করে নেওয়ার চেষ্টা অব্যাহত আছে। দ্রুত ব্যাংকটিতে সংস্কার না আনলে সঙ্কট আরও বাড়বে। ব্যাংক বাঁচাতে দ্রুত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হস্তক্ষেপ প্রত্যাশা করেন তারা।