‘বাংলাদেশ’ নামের এই ঐতিহাসিক গানটির মাধ্যমে উঠে এসেছে বঙ্গবন্ধু থেকে শহীদ জিয়াসহ দেশ গঠনের সঙ্গে যুক্ত প্রায় সব কীর্তিমানের নাম। বলা হয়ে থাকে স্বাধীন বাংলাদেশ নিয়ে এর চেয়ে সমৃদ্ধ ও গণতান্ত্রিক দেশাত্মবোধক গান আর সৃষ্টি হয়নি। যেটি হয়েছে প্রিন্স মাহমুদ ও জেমসের সুবাদে।
দেশের মানুষ দল-মত-প্রজন্ম নির্বিশেষে গানটিকে গ্রহণও করেছে হৃদয় গহিনে। এর কথা, সুর আর দরাজ গায়কিতে অন্যরকম দেশপ্রেম জাগিয়ে তোলে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে। সেই গানটি সাম্প্রতিক ছাত্র আন্দোলনে নতুন করে আলোচনায় আসে। তবে সেটি ঘটেছে গানটির জনপ্রিয়তা ধরে নয়, ‘রাজনৈতিক’ পটভূমিতে। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর সোশ্যাল হ্যান্ডেলে প্রচলিত হয়, জেমস জানিয়েছেন ‘বাংলাদেশ’ গানটি গত ৮ বছর তিনি মঞ্চে গাইতে পারেননি! কারণ হিসেবে জানান, এতে স্থান পাওয়া ‘শহীদ জিয়া’ নামটি।
আওয়ামী লীগ শাসনামলের শেষ ৮ বছরে জেমস গানটি পরিবেশনায় বাধাপ্রাপ্ত হয়েছেন রাজনৈতিক বিবেচনায়। এমন তথ্য সোশ্যাল হ্যান্ডেলে মুহূর্তেই ভাইরাল হয়েছে গত ক’দিনে। অবশেষে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছেন জেমস।
জেমস জানিয়েছেন, এমন কোনও তথ্য কিংবা মন্তব্য তিনি কাউকে কখনও দেননি। বিস্ময় প্রকাশ করেছেন এই ভেবে, কেমন করে এই তথ্যটি তার নামে প্রচলিত হলো!
জেমসের বরাত দিয়ে তার ব্যবস্থাপক রুবাইয়াত ঠাকুর রবিন বলেন, ‘দেখুন জেমস ভাই বরাবরই একজন পেশাদার মানুষ। ওনার কাছে প্রথম এবং শেষ ঠিকানা শ্রোতা-দর্শক। গানের সঙ্গে শ্রোতার সংযোগ ঘটানোর বাইরে ওনার আর কোনও উচ্চাভিলাষ নেই। ফলে রাজনৈতিক কোনও বক্তব্য বা কর্মকাণ্ডে আপনারা তাকে কখনও দেখেননি, আশা করছি দেখবেনও না। যে কথাটি ওনার নামে প্রচলিত হয়েছে, সেটি তার বক্তব্য নয়। এমনকি এ বিষয়ে এমন কোনও মন্তব্য কখনও তিনি করেননি।’
‘শহীদ জিয়া’ এবং ‘৮ বছর’-এর তথ্য দুটি গুজব। কিন্তু বাস্তবতা কী? এমন প্রশ্নের জবাবে জেমস মুখপাত্র বলেন, ‘একজন পেশাদার শিল্পীর জীবন অনেক বিচিত্র হয়। যেটা আসলে অনেকে সাদা চোখে টের পান না বা বুঝতে চান না। বিশ্বের প্রতিটি কনসার্টের আলাদা আলাদা শ্রোতা থাকে, ডিজাইন থাকে, পরিবেশ থাকে, চাহিদাও থাকে। প্রতিটি শোয়ের আগে শিল্পী সেই মাপে তার প্লেলিস্ট সাজিয়ে থাকেন। আবার যারা ওই শো আয়োজন করেন, তাদেরও কিছু চেকলিস্ট বা অনুরোধ থাকে।
তিনি আরও বলেন, শ্রোতাদেরও ইনস্ট্যান্ট চিরকুট থাকে। এর সব মিলিয়েই তো একটা শো বা কনসার্ট হয়। ধরুন সব কনসার্টে তো আমরা ‘পাগলা হাওয়া’ পরিবেশন করি না। তেমনি ‘মীরাবাঈ’ কিংবা ‘মা’ গানটাও করি না। আবার এমন অনেক কনসার্ট হয় যেখানে ‘বাংলাদেশ’ গানটা করিনি বা করা হয়নি। এটা তো একটা চলমান প্রক্রিয়া। এটা নিয়ে রাজনীতির কিছু নেই তো। আমাদের প্লিজ রাজনীতিমুক্ত রাখুন।