সোমবার ২১ এপ্রিল ২০২৫ ৮ বৈশাখ ১৪৩২
সোমবার ২১ এপ্রিল ২০২৫
বিএনপি নেতারা খাচ্ছে গুলশান-বনানীর ‘ময়লার টাকা’
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: শনিবার, ৩১ আগস্ট, ২০২৪, ২:৪১ PM
আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হওয়ার মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে গুলশান ও বনানী এলাকার ময়লা–বাণিজ্যে হাতবদল হয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতাদের জায়গায় এখন ময়লা-বাণিজ্যের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন বিএনপির স্থানীয় নেতারা। 

আগে সেখানে ওয়ার্ডে ময়লা সংগ্রহের কাজ করা ৩৮টি প্রতিষ্ঠানের ৩১টিরই মালিক ছিলেন আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী বিভিন্ন সংগঠনের পদধারী নেতারা। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে তাঁরা আত্মগোপনে আছেন। গুলশান–বনানীর ময়লা–বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করে মাসে তাঁরা তুলতেন অন্তত তিন কোটি টাকা।

উত্তর সিটি করপোরেশনের বর্জ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গুলশান-বনানীর ময়লা–বাণিজ্যের মূল নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সাবেক জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুল আলীম নকী। তিনি অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড কমিশনার (কাউন্সিলর) ছিলেন। তাঁর অধীন বনানীতে (১-২৮ নম্বর সড়ক) ময়লা সংগ্রহের কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ১৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আবদুল মমিনকে। তার সঙ্গে আছেন বনানী থানা যুবদলের আহ্বায়ক শাহজাহান সরকার। 

গুলশান–১ ও ২ নম্বরের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে যুবদলের স্থানীয় নেতা হিসেবে পরিচিত মোহাম্মদ আনোয়ার ওরফে দাদা আনোয়ারকে। তাঁর সঙ্গে আছেন গুলশান থানা যুবদলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুল জলিল। আবার জলিলের সঙ্গে কাজ করছেন যুবদলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত মোহাম্মদ স্বপন ও লিটন (স্থানীয়ভাবে পান লিটন নামে পরিচিত)।
আগে ময়লা সংগ্রহের কাজ করত এমন সাতটি প্রতিষ্ঠানের (ময়লা সংগ্রহে ভ্যান সরবরাহ করা) মালিকেরা ভয়ে কারো নাম–পরিচয় উল্লেখ করে কোনো মন্তব্য করতে চাননি। শুধু এটুকু বলেছেন, ৫ আগস্টের পর তাদের ভ্যানকর্মীরা বিভিন্ন এলাকা থেকে ময়লা সংগ্রহ করতে গেলে বিএনপির ওই নেতারা বাধা দিয়েছেন। তাদের ভ্যানগুলোও ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। এসব ভ্যান দিয়েই ময়লা সংগ্রহের কাজ চলছে বিএনপি নেতাদের তত্ত্বাবধানে।

মাসের ৪-৫ তারিখ থেকে সাধারণত বাসাবাড়ির ময়লা সংগ্রহের বিল ওঠানো শুরু হয়। তবে ৫ আগস্টের পর ভ্যান সার্ভিস প্রতিষ্ঠানগুলোর সুপারভাইজাররা টাকা তুলতে গেলে তাদের মারধর করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ছাড়া কয়েকজন সুপারভাইজারকে ডেকে টাকা তুলতে নিষেধ করা হয়েছে। অনেক এলাকায় বাসাবাড়িতে গিয়ে আগের সুপারভাইজারদের টাকা দিতে মানা করার তথ্যও পাওয়া গেছে।

রেস্তোরা মালিকেরা বলছেন, তাদের কাছ থেকে চার থেকে আট হাজার টাকা পর্যন্ত ময়লার বিল নেওয়া হয়। বাংলাদেশ হোটেল-রেস্তোরাঁ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের হিসাবে, গুলশান–বনানীতে শতাধিক রেস্তোরাঁ আছে। গড়ে ৪ হাজার টাকা ধরে ১০০টি রেস্তোরাঁ থেকে মাসে ৪ লাখ টাকা বিল ওঠে। 

অপর একটি প্রতিষ্ঠানের মালিক বলেন, ৭ আগস্ট পর্যন্ত আমার লোকেরা কাজ করেছে। কিন্তু পরের দিন কাজ করতে গেলে বাধা দেওয়া হয়। যারা বাধা দিয়েছেন, তারা বিএনপির নেতা দাদা আনোয়ারের নাম বলে গেছেন। সেদিনের পর থেকে আমার লোকেরা ভয়ে আর কাজ করতে যায় না।
« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত