নড়াইলে পাট খড়ির কদর বেড়েই চলেছে। বছর পাঁচ-ছয় আগেও সোনালি আঁশের রুপালি কাঠি অবহেলা আর অনাদরে পড়ে থাকতো গ্রামের পথে-ঘাটে বা বাড়ির আঙিনার কোণে।
সাধারণত লোকজন মাটির চুলায় রান্না আর পানের বরজের ছাউনি তৈরিতে ব্যবহার করতো পাটকাঠি। বর্তমানে বিভিন্ন কাজে এর চাহিদা বেড়েছে।
পাকা সড়ক,মাঠ-ঘাট যেখানে চোখ যায়, সেখানেই চোখে পড়ে পাটকাঠি শুকানো ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চলছে। তবে সোনালি আঁশের রুপালি কাঠি বাণিজ্যিক ভাবে বেড়েছে পাটকাঠির কদর। এ জেলার কৃষকরা পাট বিক্রিয় সঙ্গে সঙ্গে পাট খড়ি বিক্রী করে বেশ লাভবান হচ্ছে।
জেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষকরা জানান,রোদে পাটখড়ি ভালোভাবে শুকানোর পর ব্যাবসায়ীরা বাড়ী থেকে কিনে নিয়ে যায়। এই পাটখড়ি তারা দেশের বিভিন্ন এলাকায় নিয়ে যায়। আবার কেউ কেউ ভ্যানে করে বিক্রী করে থাকে। পাট খড়ির চাহিদা বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে এর দামও বেশ ভালো ফলে পাট চাষিরা লাভবান হচ্ছে। পাট খড়ি বিক্রী করে তারা পাট চাষের খরচ তুলতে পারে।
লোহাগড়া উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা প্রবীর কুমার দাস বলেন, এবছর উপজেলায় ১২হাজার ১৬৫ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। ১ হেক্টর জমিতে উৎপাদিত পাট থেকে প্রায় ১৫ হাজার টাকার পাট কাঠি পাওয়া যায়।
লোহাগড়ায় পানি সংকটে কারণে কৃষকরা উৎপাদিত পাট জাগ দিতে সমস্যায় পড়েন। তবে পাটের রং ভালো না হওয়ায় বিক্রি করতে হচ্ছে কিছুটা কম দামে।
কৃষক সোনালি কাঠিতে সেই ক্ষতির কিছুটা পুষিয়ে নিতে চেষ্টা করছেন। এখন চলছে পাটকাঠির পরিচর্যা ও কেনাবেচার কাজ। দূর-দূরান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা এসে কিনছেন রুপালি কাঠি।
লাহুড়িয়া গ্রামের কৃষক আবুল কালাম আজাদ বলেন,পাটকাঠি বিক্রিতে আমাদের আয় বেড়েছে। রাজশাহী,বরিশাল,পিরোজপুর থেকে অনেক ব্যবসায়ী পাটকাঠি কিনতে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে আসছে। এ বছর অনেক ব্যবসায়ী এসে একশ আটি পাটকাঠির দাম ২শ' থেকে ৩শ' টাকা বললেও আমরা বিক্রি করেনি।
রাজশাহীর পাটকাটি ব্যবসায়ী ফরিদুজ্জামান বলেন,রাজশাহীতে পানের বরজে পাটকাঠির চাহিদা অনেক বেশী। তাই এখানে কম দামে পাটকাঠি পাওয়া যায় বলে প্রতি বছর আমরা এ উপজেলায় পাটকাটি কিনতে আসি।
লোহাগড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ফারজানা আক্তার জানান,পাটের পাশাপাশি লোহাগড়াতে পাটকাঠির চাহিদাও বেড়েছে। পাট দিয়ে নানা ধরনের জিনিস পত্র তৈরি হচ্ছে। পাটকাঠি থেকে দাপ্তরিক সরঞ্জামাদিও তৈরি হচ্ছে। এতে অর্থনৈতিক মূল্যও প্রায় সমান হয়েছে।