মঙ্গলবার ২২ এপ্রিল ২০২৫ ৯ বৈশাখ ১৪৩২
মঙ্গলবার ২২ এপ্রিল ২০২৫
ছাত্র আন্দোলনে আহত সৌরভের অর্থের অভাবে চিকিৎসা হচ্ছে না!
হাতীবান্ধা (লালমনিরহাট) প্রতিনিধি
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৩:৩৯ PM
কোটা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে পুলিশের  গুলিতে আহত বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির (বিইউবিটি) প্রথমবর্ষের ছাত্র সৌরভ ইসলাম অর্থের অভাবে চিকিৎসা হচ্ছেনা। 

সৌরভকে নিয়ে পরিবারের দুশ্চিন্তার শেষ নেই। এ অবস্থায় ছোট ভাইয়ের চিকিৎসায় অর্ন্তবর্তী কালীন সরকারের সহায়তা চেয়েছেন তার পরিবার। 

বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) সকালে লালমনিরহাটের পাটগ্রামের হাসপাতাল নিজেদের অসহায়ত্বের এসব কথা বলেন সৌরভ।

কোটা সংস্কারের আন্দোলন করতে গিয়ে ডান পায়ের হাটুর পাশে গুলি ভেদ করে যায় সৌরভের।  আন্দোলন সফল হলেও আহত হয়ে অর্থের অভাবে সুচিকিৎসা করতে না পেরে তাঁকে নিয়ে পরিবারের দুশ্চিন্তার শেষ নেই। 

টাকার যোগান করতে না পেরে চিকিৎসা না নিয়ে গত ১৭ আগস্ট হাসপাতাল থেকে রংপুরের গ্রামের বাড়িতে নেওয়া হয়েছে সৌরভকে। সেখান থেকে লালমনিরহাটের পাটগ্রামের হাসপাতালে কর্মরত বড়ভাইয়ের নিকট আনা হয়। এখানে তিনদিন চিকিৎসা শেষে আবারও রংপুরের বাড়িতে নেওয়া হয়েছে। 

সৌরভ বলেন, গত ১৯ জুলাই বিকেলে মিরপুর ১০ নম্বর এলাকায় আন্দোলনে ছিলাম। এ সময় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সাথে পুলিশের সদস্যরা অস্ত্র হাতে আন্দোলনকারীদের ওপর মুহুর্মুহু গুলি চালায়। আর আমরা ইট পাটকেল ছুড়ে তাদেরকে প্রতিহতের চেষ্টা করতে থাকি। মিছিলের সামনে থাকা প্রায় সবাই গুলিবিদ্ধ হয়। এ সময় আমার ডান পায়ের হাঁটুর পাশে গুলি ঢুকে বের হয়ে যায়।

এতে আমি অচেতন হয়ে রাস্তায় পড়ে যাই। গুরুত্বর আহত অবস্থায় অন্যান্য আন্দোলনকারীরা আমাকে উদ্ধার করে প্রথমে মিরপুর শেওড়াপাড়ার আল হেলাল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে পায়ে ব্যান্ডেজ লাগিয়ে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। 

অবস্থা গুরুত্বর হওয়ায় চিকিৎসকেরা পঙ্গু হাসপাতালে পাঠালেও আমাকে ইবনে সিনায় নেওয়া হয়। কারন পঙ্গু হাসপাতালে নেওয়ার রাস্তায় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের অনেক লোক রাস্তায় পাহারা বসিয়েছে। এমনকি ইবনে সিনার সামনে ছাত্রলীগের সদস্যরা বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলো।

আমি দুর্ঘটনায় আহত হয়েছি, মিথ্যা বলে ও পরিচয় লুকিয়ে ওই হাসপাতালে ভর্তি হই। তারপরেও ছাত্রলীগের ছেলেরা বার বার হাসপাতালে ঢুকে আমার ব্যাপারে যাচাই করতে থাকে। চিকিৎসক জানিয়েছে আমার একাধিক অস্ত্রোপচার করতে হবে। কয়েক লাখ টাকার প্রয়োজন। 

আমার মধ্যবিত্ত পরিবার টাকা জোগাড় করতে না পারায় অস্ত্রোপচার ও চিকিৎসা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। বর্তমানে অনেক ব্যথা সহ্য করে খুব কষ্টে বাড়িতে আছি।

সৌরভের বাবা ওসমান গণি (৬০) বলেন, আমার যতটুকু সামর্থ ছিলো, তা দিয়ে ছেলের চিকিৎসা করিয়েছি। বর্তমানে আমার সামর্থ নাই। 

প্রধান উপদেষ্টা মহোদয়ের নিকট আমার আকুল আবেদন আমার ছেলের মত যারা অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে বা বাড়িতে কাতরাচ্ছে তাদের যেন সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। পুর্নবাসন করা হয়। ছেলের পায়ে রিং পড়ানো হয়েছে। 

বাড়িতে নিয়ে এসেছি। অসহ্য ব্যথা হয়, ছেলে খুব কষ্টে আছে। প্রতিদিন ২ হাজার টাকার ওষুধ লাগে। টাকার অভাবে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা করানো সম্ভব হচ্ছে না। চিকিৎসক জানিয়েছে বিদেশে চিকিৎসা করালে তাড়াতাড়ি সুস্থ হবে। বাবা হয়ে আমার আফসোসের শেষ নেই।

পাটগ্রাম সরকারি হসপিটালের বলেন,জহির উদ্দিন বাবর জানান,সৌরভের গত ১১ আগস্ট সৌরভের অস্ত্রোপচার করা হয়। গুলিতে পায়ের অবস্থা খারাপ হওয়ায় চারটি রিং পড়ানো হয়েছে। হাড়ের ভেতর ফ্যাকচার হওয়ায় দুই দফা অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। সৌরভকে সুস্থ করতে বেশকিছুদিন চিকিৎসা চালিয়ে যেতে হবে। টাকার অভাবে তাঁর চিকিৎসা করা সম্ভব হচ্ছেনা।

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত