কারামুক্ত হয়েছেন ঈশ্বরদী বিএনপির ১২ নেতাকর্মী। ৮ সেপ্টেম্বর রোববার সন্ধ্যায় পাবনা কারগার থেকে মুক্তিলাভ করেন তারা।
গতকাল রোববার কারামুক্তদের মধ্যে রয়েছেন, মোহাম্মদ আলাউদ্দিন বিশ্বাস, ইসলাম হোসেন জুয়েল, আনোয়ার হোসেন জনি, ইঞ্জিনিয়ার মুক্তার হোসেন, মোহাম্মদ বরকত, হাফিজুর রহমান মুকুল, আবুল কাশেম, লিটন মাল, আহম্মেদ ফয়সাল রিয়াজি রনো, এনাম, সিমুয়া শামসুর রহমান, আজাদ হোসেন খোকন, হুমায়ন কবির দুলাল।
প্রায় ৫ হাজার বিএনপির নেতা-কর্মী শোভাযাত্রা করে কারামুক্তদের নিয়ে আসেন পাবনা জেলা বিএনপি কার্যালয়ে। সেখানে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ৯০ স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম ছাত্র নেতা হাবিবুর রহমান হাবিবসহ জেলার নেতারা কারামুক্তদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মাকসুদুর রহমান মাসুদ। পরে কারামুক্ত নেতাকর্মী দাশুড়িয়াতে পৌছালে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব মেহেদি হাসানের নেতৃত্বে তাদের বরণ করে নিয়ে ঈশ্বরদীতে আনন্দ মিছিল বের করা হয়।
পরে জাকারিয়া পিন্টুর অফিসে এক পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। দীর্ঘদিন পর কারামুক্ত নেতাকর্মীদের একনজর দেখার জন্য বিভিন্ন মোড় সরগরম হয়ে ওঠে। কারামুক্তদের পরিবারে আনন্দের বন্যা বয়ে যায়।
সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট জামিল আক্তার এলাহী জানান, ত্রিশ বছর আগে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বহনকারী ট্রেনে হামলা ও গুলিবর্ষণের মামলায় ২০১৯ সালের ৩ জুলাই চাঞ্চল্যকর ও বহুল আলোচিত ফরমায়েশি রায় দেন পাবনার অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত-১-এর বিচারক রস্তম আলী।
ফরমায়েশি এই রায়ে স্থানীয় বিএনপির মোট ৫২ জন নেতাকর্মীর মধ্যে ৯ জনকে ফাঁসি, ২৫ জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড এবং ১৩ জনকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদন্ড দেওয়া হয়। বিচার চলাকালীন ৪ জন এবং রায়ের পর কারাগারে মারা গেছেন ৩ জন।
শারীরিক অসুস্থতার কারণে ২ জন জামিনে মুক্ত রয়েছেন। এদের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ১০ বছর সাজাপ্রাপ্ত ১২ জন ও যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ১৮ জনকে জামিন দেন আদালত। মামলা চলাকালীন ও কারাগারে বন্দি অবস্থায় মৃত্যু বরণকারীদের মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
বিএনপি নেতা হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, আমাদের আন্দোলন এখনও শেষ হয়নি। এখনো ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত ৯ জন নেতা কারান্তরীণ রয়েছেন। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা পরায়ণ মামলাটির মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্তদেরও জামিনের বিষয়টি আদালতে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। অচিরেই তারা কারামুক্ত হবেন।
উল্লেখ্য যে, শেখ হাসিনার ট্রেনে গুলি করা মামলার রায়ে পাঁচ বছর আগে ফাঁসি, যাবজ্জীবন ও ১০ বছর মেয়াদে কারাদন্ডের আদেশ দেওয়া হয়।
আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর গত ২৭ আগস্ট সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিজয়-৭১-এর ১১ আদালতের বিচারক এ এস এম আব্দুল মবিন ও বিচারক মো. মাহমুদ হাসান তালুকদারের যৌথ বেঞ্চ কারাবন্দি ঈশ্বরদী বিএনপির ৪৭ নেতাকর্মীর মধ্যে ৩০ জনকে জামিনের আদেশ দেন। এই আদেশের প্রেক্ষিতে ৮ সেপ্টেম্বর রোববার পাবনা কারগার থেকে মুক্তিলাভ করেন ১২ নেতাকর্মী। অন্য ১৮ জন রাজশাহী কারাগারে থাকায় ৯ সেপ্টেম্বর সোমবার মুক্তি পাবেন বলে জানা গেছে।