মঙ্গলবার ২২ এপ্রিল ২০২৫ ৯ বৈশাখ ১৪৩২
মঙ্গলবার ২২ এপ্রিল ২০২৫
কেন্দুয়ায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে বসত বাড়িসহ দোকান পুড়ে ছাই
কেন্দুয়া (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি
প্রকাশ: শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ২:৫২ PM
নেত্রকোণার কেন্দুয়ায় ভয়াবহ  অগ্নিকান্ডে ১টি বসতবাড়িসহ ১১টি দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। পাশে অবস্থিত আরো কয়েকটি দোকান আংশিক পুড়ে যায়।

এঅগ্নিকাণ্ডে আনুমানিক ১৩ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা জানায়।

শুক্রবার(২৭ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত আনুমানিক তিনটার দিকে উপজেলার দলপা ইউনিয়নের বেখৈরহাটি  বাজারে এই ভয়াবহ  অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

খবর পেয়ে নেত্রকোনা ও কেন্দুয়ার ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট স্থানীয়দের সহযোগিতায় সাড়ে তিন ঘণ্টার চেষ্টায় অগ্নিকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। 

স্থানীয় ও ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সাথে কথা হলে তারা জানায়, কেন্দুয়া উপজেলার সব থেকে বড় বাজার গুলোর মধ্যে অন্যতম দলপা ইউনিয়নের বৈখেরহাটী বাজার। 

গত শুক্রবার দিবাগত রাত আনুমানিক ৩টার দিকে ঐই বাজারে ভয়াবহ অগ্নিকান্ড ঘটে। এই আগুন বাজারে তৌহিদ মিয়ার বিরিয়ানী দোকান অথবা রতন বসাকের মিষ্টির দোকানের লাকড়ি থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটতে পারে বলে তারা ধারনা করেন। তাৎক্ষনিক গভীর রাতেই স্থানীয় লোকজন কেন্দুয়া ফায়ার সার্ভিসে খবর দেন। 

ফায়ার সার্ভিসের কেন্দুয়া ইউনিট এসে অগ্নিকাণ্ড নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। অগ্নিকান্ডের ভয়াবহতা দেখে তারা নেত্রকোণা জেলা সদর ও পাশ্ববর্তী মদন উপজেলা ফায়ার সার্ভিসে সহযোগিতা চান। পরে তাদের সহযোগিতায় সাড়ে তিন ঘণ্টার চেষ্টায় অগ্নিকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে আনেন। ততক্ষনে এআগুনের লেলিহান শিখা বসতবাড়ীসহ দোকান  পুড়ে ছাই হয়ে যায়। 

এসময় রড-সিমেন্টের দোকান বাবুল বিএসসি এন্টারপ্রাইজ ,রড-সিমেন্ট ও ক্রাউন সিমেন্টের ডিলার লুৎফর ট্রেডার্স, রড- সিমেন্টের আনিচ এন্টারপ্রাইজ, মুদির দোকান নজরুল ষ্টোর, খালেক ষ্টোর, তৌহিদ ষ্টোর, আটা-ভুষির গোডাউন হাজী খালেক এন্টারপ্রাইজ, বিকাশ,রকেট ও লাইব্রেরি ব্যবসায়ী রুপক লাইব্রেরি, মিষ্টির দোকান রতন বসাক, তৌহিদ, গোডাউন ও রেজমিন আক্তারের বসত বাড়ী সম্পূর্ণ পুড়ে ছাই হয়ে যায়। আরো পাশে কিছু দোকান আংশিক পুড়ে যায়।

ক্ষতিগ্রস্ত রড-সিমেন্ট ব্যবসায়ী আনিচুর রহমান বলেন, অগ্নিকাণ্ড ১বসতবাড়ীসহ ১১টি দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। সবমিলে প্রায় ১২/১৩ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ধারনা করা হচ্ছে। তবে রাতের বেলা অগ্নিকাণ্ড হওয়ায় অনেক বেশি ক্ষতি হয়েছে। আমার ব্যক্তিগত প্রায় অর্ধ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে। 

ক্ষতিগ্রস্ত লাইব্রেরী দোকান মালিক রূপক কুমার অধিকারী বলেন, আমার লাইব্রেরিতে বিকাশ,রকেটেরও ব্যবসা করতাম। এঅগ্নিকান্ডে কম্পিউটার, ফটোকপি মেশিন, নগদ টাকা, লাইব্রেরি যাবতীয় বই-পুস্তকসহ আনুমানিক ৩০/৪০ লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে। আমি একবারে নিঃস্ব হয়ে গেছি।

বসত বাড়ীর মালিক রেজমিন আক্তার বলেন,আগুনের লেলিহান শিখা আমার ঘরের আসবাবপত্রসহ সমস্ত ঘর পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে। যার আনুমানিক ক্ষতির পরিমান প্রায় ২৫/৩০ লাখ টাকা। 

কেন্দুয়া ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার মোঃ এমদাদদুল ইসলাম  জানান, আমরা শুক্রবার গবীর রাতে মোবাইল ফোনে অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে ৩.৫৫ মিনিটে বৈখেরহাটি বাজারে পৌঁছায়। পরে অগ্নিকাণ্ডের ভয়াবহতা দেখে নেত্রকোনা ও পাশ্ববর্তী উপজেলা মদন ফায়ার সার্ভিস অফিসকে খবর দিলে নেত্রকোনা ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক হাফিজুর রহমান ও আমার নের্তৃত্বে দীর্ঘ সাড়ে তিন ঘন্টার প্রচেষ্টায় শনিবার (২৮সেপ্টেম্বর) সকাল ৭.৩০মিনিটের দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হই। বৈখেরহাটি  বাজারে অগ্নিকাণ্ডে বসত ঘরসহ ১১টি দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। তবে ধারণা করা হচ্ছে হোটেল থেকে অগ্নিকান্ডের সূত্রপাত হতে পারে। এখন পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি। তবে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষ আগুনের সূত্রপাত ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমান নিরুপন করা যাবে।

কেন্দুয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) উমর আকবর  ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। 

খবর পেয়ে শনিবার (২৮সেপ্টেম্বর)  সকালে নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাস, কেন্দুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমদাদুল হক তালুকদার, দায়িত্বশীল ব্যক্তিবর্গ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।

« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত