সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজা সামনে রেখে ঢাকার ধামরাইয়ে চলছে প্রতিমা তৈরির শেষ মুহূর্তের কাজ। মাটির কাজ শেষে এখন রং তুলির আঁচড়ে মূর্ত হয়ে উঠছে দেবীর রূপ।
নির্ধারিত সময় অনুযায়ী আগামী ০৯ অক্টোবর শুরু হবে পূজা। ধামরাই উপজেলার ১৬ ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় সর্বোচ্চ ১৯৬টি মণ্ডপে এবার দুর্গাপূজার আয়োজন চলছে।
মণ্ডপে মণ্ডপে শুরু হয়েছে দেবী দুর্গার আগমনের শেষ সময়ের প্রস্তুতি। বাঁশ, খড়ের কাঠামোতে মাটির আস্তরণে অবয়ব পেয়েছে দেবী দুর্গা। লক্ষ্মী, গণেশ, সেনাপতি কার্তিক, কলাবউ মৃত্তিকা, সাপে বেষ্টিত মহিষাসুর বধে দেবীকে সুনিপুণ কর্মে ফুটিয়ে তুলেছেন প্রতিমা শিল্পীরা। রঙের আঁচড় আর সাজসজ্জায় দুর্গাদেবীকে সাজাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন ঢাকার ধামরাই এলাকার প্রতিমা শিল্পীরা।
ধামরাই আমতা ইউনিয়নে জগন্নাথ মন্দিরে মাঠে দেখা গেল দুর্গোৎসবকে ঘিরে প্রতিমা শিল্পীদের ব্যস্ততা। সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি তারা এখন ব্যস্ত প্রতিমাগুলোকে রঙ করতে। তাদেরই একজন শিল্পী মানিক পাল সবাইকে নির্দেশনা দিচ্ছেন নির্ভুল কাজের।
শিল্পী মানিক পাল বলেন, এবার প্রতিমা তৈরি হচ্ছে বেশি, এবার অত্যন্ত ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। অধিকাংশ মণ্ডপেই দেবীর অবয়ব তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। বেশিরভাগ প্রতিমাগুলোতে রঙের কাজ ও শেষের দিকে।
আমতা ঘোস বাড়ির প্রতিমা শিল্পী রামজয় পাল বলেন,এ বছর দুর্গা গড়ার কাজের চাপ অনেক বেশি, ধামরাই উপজেলায় সবচেয়ে বেশি মন্ডপ হয়। দুর্গাপূজার জন্য একটা পুরো সেট প্রতিমা বানাতে ১০ থেকে অন্তত ১৫ দিনের মতো সময় লাগে। গত বছরের মতো এবারও কাজের অর্ডার বেশি পেয়েছি।
কর্মকারপাড়া প্রতিমার শিল্পী মঙ্গল পাল বলেন, ‘মায়ের কাজ করতে ভালো লাগে। মায়ের রূপ অন্তরে নিয়ে কাজ করি। মা দুর্গার জন্য ভোর থেকে মাঝরাত অবধি কাজ করেও ক্লান্তি আসে না।
ঢাকা জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারন সম্পাদক নন্দ গোপাল সেন বলেন, উপজেলায় স্থায়ী ও অস্থায়ী মন্দিরে এ পূজার আয়োজন সব চেয়ে বেশী। এবার উপজেলায় ১৯৬টি দূর্গা মন্দিরে শারদীয়া উৎসবে আয়োজন হচ্ছে। পৌরসভায় ৪৪ টি মন্দিরে পূজার আয়োজন রয়েছে। বাকি সব পূজা হচ্ছে উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায়।
তিনি আরোও জানান, ধর্মীয় রীতি মতে দেবী এবার “দোলায় আগমন করবেন- ঘোটকে চলে যাবেন”। এরইমধ্যে মণ্ডপগুলোতে প্রতিমার কাঠামোর কাজ শেষ করে রঙের কাজ শুরু করেছেন।
ধামরাই থানার (ওসি) মনিরুল ইসলাম বলেন, প্রতি বছরের মত এবারো শারদীয়া দূর্গা পূজা উপলক্ষে প্রশাসনিক প্রয়োজনীয় সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। ধামরাই উপজেলায় ১৯৬টি মন্দিরে পূজা হবে। প্রতি বারের মতো এবারো শান্তিপূর্ন ভাবে পূজা উৎসব সম্পন্ন হবে।
এ ব্যাপারে ধামরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) প্রশান্ত বৈদ্য বলেন হিন্দু সম্প্রদায়ে সব চেয়ে বড় উৎসব শারদীয়া দূর্গা পূজা। এই পূজা উপলক্ষে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোড়দার করতে আইনশৃঙ্খলা কমিটি সোচ্চার রয়েছে। পুজায় সরকারী অনুদান সকল পূজারীবৃন্দদের মাঝে বুঝিয়ে দেওয়া হবে।