ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম বলেছেন, ভারতের চাপে ৫৩ বছরে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি বৈষম্যর শিকার হয়েছে ইসলাম, মুসলমান এবং আলেমরা। এখনো পর্যন্ত হাজারো অফিস আছে যেখানে মাথায় টুপি, মুখে দাঁড়ি রেখে চাকরি করা যায় না। বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরারকে হত্যা করেছিল ভারত বিরোধী স্ট্যাটাস দেওয়ার কারণে। আজকে আলেম-ওলামাদের সম্মান-ইজ্জত নাই। ইসলামের দিকে লক্ষ্য করে কোন আইন পাশ হয় না। আমরা ভেবেছিলাম বৈষম্য বিরোধী অন্দোলন করে বৈষম্য দূর হবে। কিন্তু আগস্টের ৫ তারিখের পর থেকে আমাদের সাথে বৈষম্য চলছে। শিক্ষা বিভাগ সংস্কারের জন্য যাদেরকে নেওয়া হয়েছে একজনও মাটি মানুষের চিন্তাভাবনার সাথে সম্পর্ক রাখে না। সংবিধান সংষ্কারের জন্য যাদেরকে নেওয়া হয়েছে তারা এদেশের মানুষের আর্জি বুঝে না।
সোমবার (৭ অক্টোবর) বিকাল ৫ টায় শ্রীপুর উপজেলা শাখার আয়োজনে পৌরসভার মাওনা চৌরাস্তা উড়াল সেতুর নিচে দলের শ্রীপুর উপজেলা শাখার সভাপতি হাফেজ মাওলানা আলমগীর হোসাইনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছিলাম বৈষম্য দূর করার জন্য, ভারত থেকে আলাদা হয়েছিলাম বৈষম্য দূর করে স্বাধীনতা অর্জন করার জন্য, পাকিস্তান থেকে ভাগ হয়ে বাংলাদেশ করেছিলাম বৈষম্য দূর করার জন্য। কিন্তু আমরা ভুল ম্যাসেজ পেয়েছি। আমরা বলেছিলাম ৭২ এর সংবিধান স্বাধীনতার চেতনা, এ কথা ভুল। ৭১ সালে দেশ স্বাধীন হয়েছে, তাহলে ৭২ সালে সংবিধান হয় কি করে? জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্রবাদ, ধর্মান্ধবাদ এবং গণতন্ত্রবাদ এই চারটি হলো বাংলাদেশের সংবিধানের মূল ভিত্তি। ভারতের সংবিধানেও এ চারটিই মূল ভিত্তি। তাহলে বাংলাদেশের সংবিধান এ চারটি মূল ভিত্তি হয় কিভাবে?
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্যে প্রধান অতিথি বলেন, যতগুলো সংষ্কারের জায়গা আছে, প্রত্যেক জায়গায় বিজ্ঞ আলেম দিতে হবে। এদেশের মাটি ও মানুষের সাথে আলেমদের সম্পৃক্ততা রয়েছে। আলেমদেরকে বাদ দিয়ে আপনি বাংলাদেশের সংষ্কার করলে সেটা সংষ্কার হবে না, বৈষম্য হবে। আজকে সব জায়গায় বৈষম্য চলতেছে। পাহাড়ী ছাত্ররা ৪০ বছর বয়সেও চাকরির জন্য আবেদন করতে পারবে, কিন্তুু সাধারণ ছাত্ররা ৩০ বছরের বেশি হলে চাকরির জন্য আবেদন করতে পারবে না, এটা কি বৈষম্য নয়? আমরা চাই চাকরির আবেদনের জন্য ৩৫ থেকে ৪০ বছর করা হোক। শ্রমিক, গার্মেন্টস সেক্টর এবং মিল ইন্ডাস্ট্রিকে ধ্বংস করার জন্য চক্রান্ত চলতেছে। সেখানেও কর্মকর্তা ও শ্রমিকদের বেতন নিয়ে বৈষম্য করা হচ্ছে।
শ্রীপুর উপজেলা ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমাদ এবং সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি শাহ মুহাম্মদ নাঈম নূরের সঞ্চালনায় প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন গাজীপুর জেলা ইসলামী আন্দোলনের সভাপতি প্রিন্সিপাল মুফতি নাসির উদ্দিন।
বিশেষ অতিথি কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (ময়মনসিংহ বিভাগ) জি.এম রুহুল আমিন, গাজীপুর জেলা শাখার সহ-সভাপতি মাওলানা মাইনুদ্দিন আজাদী, সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মাদ আল-আমিন খান, মাওলানা আবু বকর সিদ্দিক মাজিদুল, যুগ্ন সম্পাদক গাজীপুর জেলা জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের সভাপতি হাফেজ মাওলানা গাজী আল-মাহমুদ, গাজীপুর জেলা দ্বীনি সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মুফতি সিরাজুল ইসলাম, হাফেজ মাওলানা রহমত উল্লাহ, গাজীপুর জেলা ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা শহীদুল ইসলাম, গাজীপুর জেলা ইসলামী যুব আন্দোলনের সভাপতি প্রভাষক মুহাম্মাদ আকরাম হোসাইন, গাজীপুর জেলা জাতীয় শিক্ষক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মাদ মনির হোসেন মাস্টার, গাজীপুর জেলা ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি মুহাম্মাদ আরাফাত হুসাইন অনিক।
অন্যান্যের বক্তব্য রাখেন শ্রীপুর উপজেলা ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ন সম্পাদক তোফায়েল আহমেদ আব্দুল মালেক, শ্রীপুর উপজেলা জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের সভাপতি মুফতি মোফাজ্জল হুসাইন কাসেমী, শ্রীপুর উপজেলা ইসলামী যুব আন্দোলনের সভাপতি মুফতি গোলাম কিবরিয়া আল আশেকী, শ্রীপুর উপজেলা ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের সভাপতি মুহাম্মাদ হাবিবুর রহমান মন্ডল, শ্রীপুর উপজেলা ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের সভাপতি মুহাম্মদ ইব্রাহিম প্রমুখ।