চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড থানাধীন বড় কুমিরা এলাকার কর্নফুলী স্ট্রীল মিল থেকে ২৫ লক্ষ টাকার ঢেউটিন বরিশাল সদরে পৌছে দেওয়ার জন্য ট্রাক ড্রাইভার মালামাল গ্রহণ করলেও সেই পণ্য আর গন্তব্যে পৌছেনি৷ গত ১০ সেপ্টেম্বর এই মালামাল আত্মসাতের ঘটনায় ১৬ সেপ্টেম্বর সীতাকুন্ড থানায় মামলা দায়ের হয়৷ অবশেষ মামলার দ্বায়িত্ব নেয়ার ৪৮ ঘন্টার মধ্যে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেফতার ও মালামাল উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে পিবিআই চট্টগ্রাম জেলা টিম৷
মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) পিবিআই চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মলনে বিষয়টি নিশ্চিত করেন পুলিশ সুপার শেখ জয়নুদ্দিন।
পুলিশ সুপার শেখ জয়নুদ্দিন জানান, চট্টগ্রামের কুমিরা থেকে চুক্তিমতে গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার জন্য ২৫ লক্ষ টাকা মূল্যের ঢেউটিনগুলো নিয়ে ট্রাকটি যাত্রা করলেও ঢেউটিনগুলো ঠিক সময়ে বরিশালের শরীফ এন্ড সন্স নামে গ্রাহক প্রতিষ্ঠান কাছে পৌছায়নি। একই সাথে বন্ধ পাওয়া যায় ট্রাক ড্রাইভারের মোবাইল ফোন। বিভিন্ন ভাবে নানান স্থানে খোঁজ করে কোন হদিস না পেয়ে সীতাকুন্ড থানায় এ ব্যাপারে একটি মামলা দায়ের করেন চট্টগ্রামের এম. আলম ট্রান্সপোর্ট ম্যানেজার মোঃ রুবেল হাওলাদার।
সীতাকুন্ড থানা পুলিশও কোন সুরহা করতে না পারলে ভুক্তভোগী দ্বারস্থ হয় পিবিআই জেলা পুলিশের কাছে। পিবিআই দ্বায়িত্ব গ্রহণের ৪৮ ঘন্টার অভিযানে চক্রের এক সদস্যকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় । এই চক্রের একাধিক সদস্য রয়েছে যারা “লোড আনলোড” চক্রের সক্রিয় সদস্য। মালামাল পরিবহনের নামে চক্রটি মূলত মালামাল আত্মসাৎ করে ।
পুলিশ সুপার আরো বলেন, কোন অপরাধ আমাদের ছোট নয়। যেকোন বিষয় নিয়ে যে কেউ অভিযোগ বা মামলা করলে আমরা তা খুবই গুরুত্বের সাথে দেখি। এই মামলার ক্ষেত্রেও অভিযোগ পেয়ে দ্রুত অভিযান শুরু করি। আমরা ৪৮ ঘন্টার সফল অভিযানে চক্রের এক সদস্যকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। চক্রের অন্যান্য সদস্যদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে।
তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই শাহাদাত বাংলাদেশ বুলেটিনকে বলেন, ঘটনাস্থলে সিসিটিভি ফুটেজ ও তথ্য প্রযুক্তি সহায়তায় আসামী সনাক্ত এবং ঢেউটিনগুলো উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছি। অভিযানে অনেক বাধা অতিক্রম করতে হয়েছে। তবে ভালো লাগছে অবশেষে সফল হয়েছি। ভুক্তভোগীর মুখে হাসি ফুটাতে ফেরেছি।
পিবিআই জানিয়েছে, ট্রাকের প্রকৃত নাম্বার যশোর—ট—১১—৩৯১৬ এর স্থলে চক্রটি জালিয়াতি করে জাল ডিজিটাল নাম্বার প্লেট প্রস্তুত করে ঢাকা মেট্রো—ট—২৪—৪৪৭০ প্রতিস্থাপন করে প্রতারণা করে৷ সেই সাথে ট্রাক চালকের দেওয়া মোবাইল নাম্বারটিও ছিল ভূয়া। ঘটনায় জড়িত মূল আসামী সবুজ ফকির’কে মাদারীপুর সদর থানা এলাকা হতে গত ৭ অক্টোভর গ্রেফতার করে তার দেওয়া তথ্য মতে কেএমপি খুলনার আড়ংঘাটা থানা এলাকা থেকে লুন্ঠিত ২৫ লক্ষ টাকার ঢেউটিন এবং যশোর জেলার বেনাপোল থানা এলাকা থেকে মালামাল পরিবহনে ব্যবহৃত ট্রাক উদ্ধার করা হয়।