শিউলি ফুলের গন্ধ, ঢাকের শব্দ আর কাশ ফুলের দোলা জানান দিচ্ছে দুর্গা মায়ের উপস্থিতি।
দুর্গাপূজা, বাঙালি সনাতনীদের সবচেয়ে প্রিয় উৎসব, শুধু একটি ধর্মীয় আচার নয়, এটি বাঙালি সংস্কৃতি ও চেতনার এক অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। সারা বছর এই পূজার জন্য অপেক্ষা করা, প্রতিমা গড়া, প্যান্ডেল তৈরি, এবং মণ্ডপে মণ্ডপে সাজসজ্জার মাধ্যমে এটি কেবল একটি উৎসবের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে না, বরং এটাই বাঙালির সংস্কৃতি এবং ঐতিহাসিক এক বিশেষ রূপ হয়ে দাঁড়িয়েছে ।
আজ বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় শিল্পীর নরম হাতের তুলিতে ফুটে ওঠছে দেবী দুর্গা। সপ্তমীর সকালে পূজা শুরু হয়েছে ভোর ৫ টায়। প্রথা অনুযায়ী হয়েছে দেবী দুর্গার চক্ষু দান।
মিরপুর কেন্দ্রীয় মন্দিরের সভাপতির কাছে এবারের পূজা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গত ২ তারিখে মহালয়ার মাধ্যমে দেবী পক্ষের সূচনা হয়েছে আমাদের মন্দিরে। এই দেবী পক্ষের সূচনার মাধ্য দিয়ে ছিল আমাদের ষষ্ঠী, আজ সপ্তমী পূজা। আগামীকাল অষ্টমী এবং নবমী পূজা, ১২ তারিখে দশমী পূজার মাধ্যমে আমাদের এই পূজার সমাপন হবে।
সুষ্ঠ ও সুন্দরভাবে চলমান এই পূজায় সহযোগিতার জন্য সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ এলাকার সকল মানুষকে তিনি ধন্যবাদ জানান। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে দুর্গোৎসবের তাৎপর্য ব্যাখ্যা করে এই পূজা সুন্দরভাবে সম্পন্ন করার আশা ব্যক্ত করেন।
এবার দেবী দুর্গার দোলায় আগমন ও যাওয়া ঘটকে। এ সম্পর্কে জানতে চাইলে পূজার সাধারণ সম্পাদক দোলা মজুমদার বলেন, ঘোটক মানে একটু অসুস্থতা, দুরদর্শা। কিন্তু আমরা চাইবো আমাদের মা যাতে শান্তি বর্ষণ করে আমাদের থেকে বিদায় নেন। দুঃখ, দুরদর্শা থেকে মুক্তি, আমাদের বাঙালির মধ্যে ভ্রাতৃত্ব-সম্প্রীতি বজায় যাতে থাকে এই প্রর্থনা-ই করছি।
এই মন্দিরের যুগ্ম সম্পাদক প্রশান্ত সরকার পূজার কর্মসূচি ও সময় বর্ণনা করে বলেন, সকাল ৫টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সকলের জন্য খোলা থাকে। এই দুর্গাপূজায় বৃহত্তর মিরপুরবাসী তথা মিরপুর কেন্দ্রীয় এই মন্দির জনসাধারণ মুখর থাকে। ভক্তদের অনুদানেই চলে এই মন্দির।
মন্দিরের যুগ্ম সম্পাদক দীনেশ ধর বলেন, দেশের এই পরিস্থিতিতে দুর্গা মায়ের আগমন। আজ আমরা মায়ের সামনে এই প্রার্থনাই করেছি যাতে আমাদের দেশের শান্তি বজায় থাকে, ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে আমরা মিলেমিশে থাকতে পারি এবং জীবনে উন্নতি করতে পারি।
বাবু/এসআর