অসাংবিধানিক সরকার কর্তৃক রাষ্ট্রীয় আচার থেকে জাতীয় মুক্তির লড়াইয়ের ইতিহাস ও চেতনা মুছে ফেলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদে বিবৃতি দিয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এ বিবৃতি জানানো হয়।
ঐতিহাসিক ৭ মার্চ, ১৫ আগস্ট শোক দিবসসহ বিভিন্ন দিবস বাতিলের সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করেছে আওয়ামী লীগ। দলটির ভেরিফায়েড পেজে দেওয়া বিবৃতিতে সরকারের এ উদ্যোগকে ‘প্রতিহিংসামূলক’ বলে উল্লেখ করা হয়।
এতে বলা হয়, ‘বর্তমান সরকার শুরু থেকেই মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ ও চেতনাবিরোধী কাজ করে আসছে। সুপরিকল্পিতভাবে মানবিক মূল্যবোধ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিনষ্টে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে চলেছে। তারা বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসীদেরকে শত্রুজ্ঞান করছে।
জাতীয় রাজনীতি থেকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে নির্মূল করতে রাষ্ট্রযন্ত্রের অপব্যবহার করছে। মিথ্যা মামলায় গণগ্রেফতার চালাচ্ছে। রাষ্ট্রীয়ভাবে দেশে নৈরাজ্যবাদ কায়েম করেছে, যাকে মাৎস্যন্যায় বলা চলে। সরকারের অদক্ষতা ও অনাচারে অতিষ্ঠ মানুষ ইতোমধ্যে বলতে শুরু করেছে, ‘আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম আমরা’।
বাংলা ও বাঙালির সবচেয়ে বড় অর্জন স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা, যার নেতৃত্ব দিয়েছেন ইতিহাসের সন্তান জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান। জাতির পিতার বিশ্বস্ত সহকর্মীবৃন্দ, দেশের মুক্তিকামী জনতা ও তার পরিবারের অবদান অমোছনীয়।
কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি, সরকারের প্রতিহিংসামূলক আচরণের শিকার হচ্ছে মুক্তির লড়াইয়ের সকল ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও প্রতীকী স্থাপনাসমূহ। এসবের ধারাবাহিকতায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জাতীয় ইতিহাসের সাথে সম্পর্কিত জাতীয় দিবসসমূহ রাষ্ট্রাচার থেকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। আমরা এহেন প্রতিহিংসামূলক পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
ইউনেস্কো কর্তৃক বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃত ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক জাগরণের ভাষণ দিবস, ১৭ই মার্চের শিশু দিবস এবং ১৫ই আগস্টের মতো শোক পালনের দিবস রয়েছে। আমাদের জাতীয় ইতিহাস থেকে এসব দিবসের তাৎপর্য কোনো বিবেচনাতেই অস্বীকার করা যাবে না।
রিসেট বাটন চেপে কেউ আমাদের ‘দাবায়া রাখতে পারবা না’। আমাদের প্রত্যাশা হিংসা ও বিদ্বেষের বিপরীতে সকলের যাবতীয় ও জাতীয় ভুলগুলো অন্ধকারে হারিয়ে যাক, আমাদের অন্যায়গুলো বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াক এবং সকল অপশক্তি বিনাশের জন্য আমাদের কণ্ঠে উচ্চারিত হোক ‘সত্য বল সুপথে চল’।
সরকারের বিদ্বেষে বাতিল হতে যাওয়া দিবসগুলো বাঙালি বরাবরের মতো সামাজিক ও সাংস্কৃতিকভাবে পরম মমতায় পালন করে দৃঢ়ভাবে বলে উঠবে, ‘আবার আসিব ফিরে ধানসিঁড়িটির তীরে’।