ছাত্রজনতার ব্যাপক বিক্ষোভ ও গণ আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার দেশত্যাগের খবর পেয়ে কারাগারে খুশিতে আপ্লুত হয়ে কান্না করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।
চোখে আনন্দ অশ্রু বইলেও তিনি বলেছিলেন- এটা ঠিক হয়নি, তিনি ঠিক করেননি, এটা রাজনীতির জন্য ভালো খবর নয়।
শেখ হাসিনার দেশ ছাড়ার কথা প্রথমে কারাবন্দি কারোরই বিশ্বাস হয়নি। পরে বিটিভিতে খবর দেখে নিশ্চিত হয়ে তখনকার কারাবন্দি বিএনপি নেতাদের অনেকেই শোকরিয়া নামাজ আদায় করেন।
কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সূর্যমুখী সেলে বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন আহমেদ অসীম, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুক, সহ স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক অধ্যাপক ডা: রফিকুল ইসলাম বাচ্চুসহ আরও কয়েকজন এসময় বন্দি ছিলেন। শুধু দুপুরে খাবারের সময় একঘন্টার জন্য সেলের তালা খোলা হতো।
শেখ হাসিনার পতনের দিনে গত ৫ আগস্ট সকাল সাড়ে এগারটার দিকে একজন কারারক্ষী সেলের সামনে গিয়ে তাদেরকে জানান, ‘সুখবর আছে। ঢাকায় আবাবিল পাখি আসছে, লাখ লাখ মানুষ ঢাকায় আসছে। রাস্তায় মিছিল করছে।’
এমনটা শোনার পর বিএনপির নেতারা ওই কারারক্ষীর কথা বিশ্বাস করেননি, তেমন গুরুত্ব দেননি। বেলা গড়িয়ে দুপুরের পর বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে সেলের তালা খোলা হলে কাজী সালিমুল হক কামাল (ইকোনো কামাল নামে পরিচিত মাগুরার এই সাবেক সংসদ সদস্য ১০ বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত) তাদেরকে জানান- ‘শেখ হাসিনা ইন্ডিয়া পালিয়ে গেছেন।’
তার কথাও কারাগারে থাকা কেউ বিশ্বাস করেননি, ফান ভেবেছিলেন। পরে রিজভী, অসীম, টুকু, রফিক, নেওয়াজ মিলে কামালের সেলে গিয়ে বিটিভিতে এ খবর দেখেন। টিভির স্ক্রল দেখে রিজভীর চোখে আনন্দ অশ্রু ঝরে।
এসময় রিজভী বলেন, এটা ঠিক হয়নি, ভালো হয়নি। এমনটা বলার কারণ জানতে চাইলে জবাবে রিজভী বলেন, এটা রাজনীতির জন্য ভাল লক্ষণ নয়।
এরপর অনেক বন্দি শোকরানা নামাজ আদায় করেন। পরদিন ৬ আগস্ট তারা সকলে কারামুক্ত হন।