চট্টগ্রামের লালখান বাজার থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত ১৬ কিঃমিঃ দীর্ঘ এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়েতে মানুষ শিকারে সুতার ফাঁদ পাতছে দুষ্কৃতিকারী চক্র৷
মূলত এই উড়াল পথে চলাচলকারী মোটরসাইকেল আরোহীদের টার্গেট করেই চলাচলের পথে বেঁধে রাখা হচ্ছে নাইলনের সুতা৷ দুষ্কৃতিকারী চক্রের এই সুতার ফাঁদ গলায় আটকে দূর্ঘটনার শিকার হয় বাইকাররা৷ আর সেই সুযোগে বাইক সহ বাইকের আরোহীদের মূল্যবান মালামাল লুটে দেয় এই চক্রটি৷
ইতিপূর্বে আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভারে একাধিকবার এমন ঘটনা ঘটলেও এবার ঘটেছে চট্টগ্রামের একমাত্র এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়েতে। এই ঘটনায় এক বাইক চালক ও আরোহী গুরুতর আহত হয়েছে৷
শনিবার (২৬ অক্টোবর) বিকেল চারটার কিছু সময় পর এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়েটির দেওয়ানহাট-আগ্রাবাদের মধ্যবর্তী অংশে এই সুতার ফাঁদে পড়ে গুরুতর আহত হয়েছে সুজন তঞ্চগ্যাঁ নামের এক যুবক৷
সুজন বাংলাদেশ বুলেটিনকে বলেন, আমরা দুইজন এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ে ব্যবহার করে পতেঙ্গায় যাচ্ছিলাম৷ চলন্ত অবস্থায় দেওয়ানহাট-আগ্রাবাদের মধ্যবর্তী অংশে আমার গলায় কিছু একটা আটকে যায়৷ আমি এক প্রকার দমবন্ধ হয়ে আমার বাইকটি নিয়ে সড়কে আছড়ে পড়ি৷ এসময় আমার হাত-পা সহ পুরো শরীরে প্রচন্ড আঘাত পাই৷
তিনি আরও বলেন, আমরা বাইক থেকে ছিটকে এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়েতে পড়ে গেলে পাশ থেকে ১৬/১৭ বছর বয়সী দুই কিশোরকে আমাদের দিকে আসতে দেখি৷ তবে এই সময় আমাদের পেছন থেকে আরো কিছু বাইক আসতে দেখে ঐ দুই কিশোর দ্রুত সেখান থেকে সরে যায়৷ আমার ধারণা এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়েতে পরিকল্পিত ভাবে চলাচলের পথে শক্ত সুতা বেঁধে রাখা হয়েছিল৷
দূর্ঘটনায় সুজনের মোটরসাইকেলটির সামনের চাকা চেঙ্গে আলাদা হয়ে যায়৷ তার সাথে থাকা আরেক বাইক আরোহীও সামান্য আহত হয়েছে৷
এই বিষয়ে এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়েটির নির্মানকারী (ম্যাক্স) ও বাস্তবায়নকারী (সিডিএ) প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ করা হলেও কেউ আনুষ্ঠানিক ভাবে এই বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি৷
তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়েটির সাথে সংশ্লিষ্ট এক শীর্ষ কর্মকর্তা বাংলাদেশ বুলেটিনকে বলেন, আপনারা জানেন এই এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়েটি এখনো আনুষ্ঠানিক ভাবে উদ্বোধন হয়নি৷ এছাড়া এর বেশীর ভাগ উঠা নামার র্যাম্প এখনো নির্মানাধীন৷ নির্ধারিত অংকের টোলের বিনিময়ে এটি ব্যবহারের কথা থাকলেও জনসাধারণের সুবিদার্থে আমরা আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভারের মুরাদপুর, দুই নাম্বার গেইট প্রান্ত দিয়ে ওঠা যানবাহনকে ওয়াসা এলাকায় এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ের সাথে সংযুক্ত স্থান দিয়ে পতেঙ্গা যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে৷
তিনি আরও বলেন, এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়েতে পায়ে হেটে চলাচল সহ মোটরসাইকেল, সিএনজি অটোরিক্সা ও অযান্ত্রিক যানবাহন চলাচল করতে পারবেনা৷ যেহেতু একটি পরিপূর্ণ ভাবে চালু হয়নি তাই টোল প্লাজা গুলো কার্যকর না থাকায় এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়েতে সিসিটিভি নজরদারি করা এই মূহুর্তে সম্ভব হচ্ছেনা৷ আমরা আমাদের নির্মানকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের ব্যবহার করে কিছু কিছু স্থানে পাহারার ব্যবস্থা করেছি৷
তবে এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়েটি পুরোপুরি বাণিজ্যিক ভাবে কার্যক্রম শুরু করলে এই ধরণে ঘটনাসহ কোন ধরণের অপরাধ সংঘটিত করা সম্ভব হবে না বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি৷