নানান আন্দোলন, অভিযোগ আর বিক্ষোভের পর অবশেষে চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে এম ফজলুল্লাহর চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে সরকার৷
বুধবার স্থানীয় সরকার বিভাগের পানি সরবরাহ অনু বিভাগের উপ সচিব আব্দুর রহমান স্বাক্ষরিত এক আদেশে এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, “পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষ (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৪ এর ধারা ২৮ (ক) এর প্রদত্ত ক্ষমতাবলে এ কে এম ফজলুল্লাহ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, চট্টগ্রাম ওয়াসার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিলপূর্বক, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, চট্টগ্রাম ওয়াসা এর পদ থেকে অপসারণ করা হলো।”
মন্ত্রনালয় সূত্রে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত নতুন করে কাউকে চট্টগ্রাম ওয়াসা'র এমডি'র দ্বায়িত্ব দেয়া না হলেও সাময়িকভাবে স্থানীয় সরকার বিভাগ চট্টগ্রামের পরিচালক ওই পদে দায়িত্ব পালন করবেন।
১৯৬৮ সালে ওয়াসার সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে নিয়োগ পান ফজলুল্লাহ। সর্বশেষ নির্বাহী প্রকৌশলী পদে পূর্ণ মেয়াদে দায়িত্ব পালন শেষে ১৯৯৮ সালে অবসর নেন।এরপর ২০০৯ সালের ৮ জুলাই তাকে এক বছরের জন্য চট্টগ্রাম ওয়াসার চেয়ারম্যান করা হয়। পরে চট্টগ্রাম ওয়াসা বোর্ড গঠন হলে তিনি প্রথম দফায় তিন মাসের জন্য ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পেলেও পরে সাত দফায় পুনর্নিয়োগ পেয়ে গত ১৪ বছর ধরে এ দায়িত্ব পালন করেন।
ফজলুল্লাহ তার মেয়াদে চট্টগ্রাম ওয়াসার পানির উৎপাদন ১২ কোটি থেকে ৫০ কোটি লিটারে উন্নীত করতে একাধিক প্রকল্প বাস্তবায়ন করেন। কিন্তু এতো বড় অংকের মেগা প্রকল্পের পরও পানিতে ময়লা ও লবণাক্ততা, সিস্টেম লস কমাতে না পারা, দীর্ঘদিন ধরে পদে থাকা, বেতন বাড়ানোর প্রস্তাবসহ নানা কারণে বিভিন্ন সময়ে সমালোচনা হয়েছে ফজলুল্লাহকে ঘিরে।
এক পর্যায়ে ফজলুল্লাহ'র বিরুদ্ধে ‘অর্থপাচার, স্বজনপ্রীতি, নিয়োগ বাণিজ্য, অব্যবস্থাপনা’সহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত খবর যুক্ত করে ২০২০ সালে দুদকে অভিযোগও করেছিলেন মো. হাসান আলী নামে ওয়াসার এক গ্রাহক।
সরবরাহ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও স্যুয়ারেজ প্রকল্প গ্রহণকে নিজের সফলতা হিসেবে দাবি করে থাকেন তিনি। ভান্ডালজুড়ি পানি শোধনাগার প্রকল্পের কাজও শেষ। সেটি উদ্বোধনের অপেক্ষায় আছে। তার বিরুদ্ধে আনা দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির সব অভিযোগও অস্বীকার করে আসছেন এ কে এম ফজলুল্লাহ।
সবশেষ ৫ অগাস্ট অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এমডি পদ থেকে এ কে এম ফজলুল্লাহকে অপসারণের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী সাধারণ নাগরিক সমাজ নামের একটি সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছিল।