গত ৫ আগস্ট ছাত্রজনতার অভ্যুত্থানের মুখে দেশ ছাড়ার পর প্রকাশ্যে শেখ হাসিনাকে দেখা না গেলেও বিবৃতি দিয়েছিলেন তিনি। পরবর্তীতে তার কণ্ঠ সদৃশ একাধিক ফোনালাপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। বিভিন্ন সময়ে ফাঁস হওয়া এসব ফোনালাপে শেখ হাসিনা সদৃশ কণ্ঠে নেতাকর্মীদের বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দিতে শোনা যায়।
কখনো কখনো বর্তমান সরকার ও বাংলাদেশ নিয়ে বিভিন্ন হুঁশিয়ারিও উচ্চরণ হয় ওই কণ্ঠে। শেখ হাসিনার কণ্ঠ সদৃশ এই ফোনালাপ নিয়ে রাজনৈতিক মহল ও সোসাল হ্যান্ডেলে দুই ধরনের আলোচনা আছে। কেউ কেউ দাবি করছেন, এগুলো এআই দিয়ে তৈরি। শেখ হাসিনার ফোনালাপের কোনো সত্যতা নেই। তবে শেখ হাসিনার সঙ্গে ফোনালাপে কথা বলার অভিযোগে দেশে একাধিক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করতে দেখা গেছে।
অন্য একটি পক্ষ বলছে, শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিক বিবৃতি বা বক্তব্য দিতে না পারায় নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দিতে এই পথ বেছে নিয়েছেন। আওয়ামী লীগ নিজ কৌশলেই শেখ হাসিনার এসব ফোনালাপ ফাঁস করে আসছে। যাতে দলের সভাপতির বার্তা নেতাকর্মীদের কাছে পৌঁছায়। আলোচনার মধ্যে এবার শেখ হাসিনার ফোনালাপ প্রকাশ্য আনল আওয়ামী লীগ। দলটি তাদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে শেখ হাসিনার কল রেকর্ড প্রকাশ করে।
ডেনমার্ক আওয়ামী লীগের সাথে টেলি কনফারেন্সে ছিলেন শেখ হাসিনা। সেখানে ৩ মিনিট ৩৫ সেকেন্ডের কথোপকথন প্রকাশ করা হয়। সোমবার (১৮ নভেম্বর) এই ফোনালাপটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ফোনালাপের শুরুতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের খুনি বলে আখ্যায়িত করেন শেখ হাসিনা।
শেখ হাসিনাকে ওই ফোনালাপে বলতে শোনা গেছে, ‘৭ জুলাই থেকে এই ছাত্ররা যখন আন্দোলন করে ১৪ জুলাই পর্যন্ত। তারা সহিংস হওয়ার আগে গায়ে একটা টোকাও পড়েনি। যে যার মতো তারা আসছে-বসছে, আমরা তো তাদের কিছুই বলিনি। পুলিশের কাছে কোনো মেটাল বুলেটা ছিল না। নির্দেশ দিয়েছি কোনো গুলি করবা না। পুলিশ ব্যারিকেড উঠিয়ে তারা ইচ্ছামতো আন্দোলন করেছে। শুরু থেকে তো অনেক কিছু করা যেতো, আমরা তো সেসব করিনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই কোটা তো আমিই বাতিল করে দিয়েছি। যেখানে কোনো কোটাই নাই, সেখানে আন্দোলনটা কীসের জন্য ছিল? তারপর আমাদের মন্ত্রীরা তাদের বসে, তাদের সব দাবি মানা হয়। দাবি মানার পর আবার এক দফা। শেখ হাসিনাকে খুন করো, এই তো কথা? তাদের টার্গেট ছিল আমাকে হত্যা করা।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘শেয়ার মার্কেটের টাকা উধাও, ব্যাংকে টাকা নাই। ব্যাংকের টাকা উধাও। সেসব টাকা গেলো কোথায়? ২০ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য আমি রেখে আসছি। এক কোটি পরিবারের জন্য টিসিবি কার্ড দিয়েছি। দেশে যে অরাজকতা চলছে তার বিচার হবে ইনশাআল্লাহ।’