বিগত সরকার পতনের পর থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে বিতর্কিত করতে বাংলাদেশবিরোধী পোস্টে সয়লাব সোশ্যাল মিডিয়া। গত ৫ আগস্টের পর থেকেই এমন অপপ্রচার চলছে। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে ভারতের বেশ কয়েকটি গণমাধ্যম।
ইসকনের বহিষ্কৃত নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী গ্রেপ্তারের পর থেকে বাংলাদেশ সংখ্যালঘু নির্যাতন হচ্ছে বলে প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হচ্ছে ভারতের শীর্ষস্থানীয় বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে। এসব তথ্য বিশ্বাস করে সামাজিকমাধ্যমেও মিথ্যা, গুজব ও ভুয়া তথ্য ছড়াচ্ছেন ভারতীয় নেটিজেনদের কেউ কেউ। এমনই একটি ভুয়া তথ্য ছড়িয়েছে যেখানে বলা হচ্ছে, বাংলাদেশে একটি মন্দির ভাঙচুর করা হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স (সাবেক টুইটার)-এ ভাঙচুরের ঘটনার একটি ভিডিও প্রচার করা হয়েছে। ভিডিওটিতে টুপি পাঞ্জাবি পরিহিত অসংখ্য ব্যক্তিকে মন্দির ও মূর্তি ভাঙচুর করতে দেখা যাচ্ছে। রিউমর স্ক্যানার বলছে, মন্দির ভাঙচুরের দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি বাংলাদেশের নয়। এ ঘটনা পাকিস্তানে ঘটেছিল ২০২১ সালে। এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করছে পাকিস্তানের শীর্ষ গণমাধ্যম ‘দ্য ডন’।
ডনের ওয়েবসাইটে ২০২১ সালের ৫ আগস্ট ‘Mob ransacks temple after minor boy gets bail in desecration case’ শীর্ষক শিরোনামে প্রচারিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটিতে সংযুক্ত ভিডিও পর্যালোচনা করে দেখা যায়, আলোচিত মন্দিরে হামলার ভিডিওর সঙ্গে ওই ভিডিওর মন্দির এবং হামলাকারী ব্যক্তিদের মিল রয়েছে। যা থেকে এটি স্পষ্ট যে, ভাইরাল ভিডিওটি একই ঘটনার তবে ভিন্ন ডিভাইস দিয়ে ধারণ করা।
আরও জানা যায়, মাদরাসার লাইব্রেরিতে প্রস্রাব করার কারণে পাকিস্তানের লাহোর থেকে ৫৯০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত রহিম ইয়ার খান জেলার ভোঙ্গে শহরে ৮ বছরের এক হিন্দু শিশুকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরবর্তীতে নাবালক হওয়ায় তাকে জামিনে ছেড়ে দেন পাকিস্তানের আদালত। এ ঘটনার জেরে ওই এলাকায় একটি মন্দিরে স্থানীয় মুসলিম জনতা হামলা চালায়। আলোচিত ভিডিওটি ওই মন্দিরে হামলার ঘটনারই।
পরবর্তী অনুসন্ধানে ২০২১ সালের ৪ আগস্ট পাকিস্তানের রাজনৈতিক দল তেহরিক-ই-ইনসাফের সাবেক সংসদ সদস্য ড. রমেশ কুমার ভাঙ্কওয়ানির করা একটি এক্স পোস্ট খুঁজে পাওয়া যায়। পোস্টটিতে সংযুক্ত ভিডিওর সাথে আলোচিত দাবির ভিডিওটির মিল পাওয়া যায়।