‘আওয়ামী লীগ ফিরে আসবে’—এমন মন্তব্য করার অভিযোগে ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আল মামুনকে তাৎক্ষণিক প্রত্যাহারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে এমন কোনো মন্তব্য করেননি বলে দাবি করেন ওই কর্মকর্তা।
ফরিদপুরে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সভায় আল মামুনের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ তোলা হয়। দুপুরে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সদস্যদের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় বক্তব্য দেন ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি আনিসুর রহমান সজল। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘সম্প্রতি সদরপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদদের স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে প্রধান অতিথি ছিলেন ইউএনও আল মামুন। অনুষ্ঠানে আমি বক্তব্য রাখি। সেখানে দিল্লি না ঢাকার প্রশ্নে বলা হয়েছিল, দিল্লির কোনো প্রেসক্রিপশনে বাংলাদেশ চলবে না। ’
আনিসুর রহমান সভায় বলেন, ‘ওই সভার পর ওই ইউএনও আমাকে ডেকে নিয়ে কথা বলেন। ওই সময় তিনি তার অঙ্গভঙ্গিতে এবং আমাদের কৌশলে বলার চেষ্টা করেন, আওয়ামী লীগ উইল বি কাম ব্যাক, টুডে অর টুমোরো (আওয়ামী লীগ ফিরে আসবে, আজ অথবা আগামীকাল)।’
আনিসুর রহমানের এ বক্তব্য আমলে নেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মোখলেসুর রহমান। তিনি তাৎক্ষণিকভাবে ওই ইউএনওকে প্রত্যাহারের জন্য জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসান তালুকদারকে নির্দেশ দেন।
সচিব মো. মোখলেসুর রহমান ওই শিক্ষার্থীকে বলেন, ‘আপনার সঙ্গে আমি একমত। যারা আমার সঙ্গে একমত হবে না, তাহলে আমি চলে যাব।’
তিনি বলেন, ‘আজকের মধ্যে এই ইউএনও বদলি হবে এবং আমি আগামীকাল মন্ত্রণালয়ে ফিরে গিয়ে তাকে সাসপেনশন করব। আমি পাবলিক্যালি বলে গেলাম, এত দুঃসাহস? যারা পরিবর্তিত সরকারের (আওয়ামী লীগ) পেছনে এখনো ইন্ধন যোগাচ্ছে, যদি কোনো ব্যক্তি বা কোনো পদ-পদবিধারী কেউ এদের পৃষ্ঠপোষকতা করে, গোপনে আমাদের সংবাদ দেবেন।’
এ সময় ওই শিক্ষার্থীর অভিযোগের ভিত্তিতে সচিবের সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত পোষণ করেন সংস্কার কমিশন প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘ইউএনওর বিষয়ে আজই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ইউএনও আল মামুন, ‘আমি এমন কোনো কথাই বলিনি। ওনাদের সঙ্গে যখন কথা বলি তখন বিএনপি–জামায়াতের নেতারাও উপস্থিত ছিলেন। ওই ধরনের কথা বলা হয়নি।’