মেঘের রাজ্য খ্যাত রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ভ্যালি উপত্যকা শীতের শুরুতে পর্যটকদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠছে। পর্যটকদের ভিড় বাড়ায়, চাপ বাড়ছে রিসোর্ট কটেজগুলোতে। সে সঙ্গে বেড়েছে রিসোর্ট কটেজগুলোতে আগাম কক্ষ বুকিং।
গত শুক্রবার হতে সপ্তাহ জুড়ে এবং পুরো ডিসেম্বর মাস সাজেকের সব রিসোর্ট কটেজ শতভাগ বুকিং রয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।
সাজেক কটেজ মালিক সমিতি সূত্র জানিয়েছে, সাজেকে বর্তমানে ১৩৫টি মতো রিসোর্ট কটেজ রয়েছে। সব রিসোর্ট কটেজে আগাম কক্ষ বুকিং চলছে। গত শুক্রবারে সব রিসোর্ট কটেজ শতভাগ বুকিং থাকলেও এখন বর্তমানে ৮০ শতাংশ বুকিং রয়েছে। তবে পুরো ডিসেম্বর মাসজুড়ে কক্ষ বুকিং বাড়ছে। কেউ যদি বুকিং না দিয়ে সাজেকে আসে, তাহলে কক্ষ না পাওয়ার সম্ভবনা বেশি জানিয়েছে কটেজ মালিক সমিতির সংশ্লিষ্টরা।
সাজেক হিলভিউ রিসোর্টের স্বত্বাধিকারী ইন্দ্র চাকমা জানান, শীতের শুরুতে ভালো পর্যটক আসছে। আমাদের রিসোর্টসহ সাজেকের সব রিসোর্ট কটেজ ৩১ডিসেম্বর পর্যন্ত আগাম কক্ষ বুকিং রয়েছে। সামনে হয়তো আরও বাড়বে। এমনিতে প্রতি বছর ডিসেম্বর মাসে পর্যটকের চাপ বেশি থাকে। খাগড়াছড়িসহ সাজেকে প্রতি মাসে পর্যটন খাতে লেনদেন প্রায় ১০ কোটি টাকা। পর্যটকদের বরণে সার্বিক প্রন্তুতি নিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
খাগড়াছড়ি-সাজেক সড়কের জিপ সমিতির লাইনম্যান ইয়াছিন আরাফাত জানিয়েছেন, সাজেকের উদ্দেশ্যে ২০০ জিপ ও ৫০টি মাহিন্দ্র অটোরিকশাসহ শতাধিক মোটরসাইকেলও সাজেকে সেবা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছে।
সাজেক কটেজ মালিক সমিতির সহ–সাধারণ সম্পাদক মতিজয় ত্রিপুরা জানান, শুক্র-শনি পর্যটকদের প্রচুর চাপ ছিলো, পুরো রিসোর্ট কটেজে কক্ষ শতভাগ বুকিং ছিলো। অনেকেই আবার কক্ষ না পেয়ে কর্মচারীর রুম, স্টোর রুম ও ক্লাব ঘর ভাড়া দিতে হয়েছিল। আজকে ও আগামীকালসহ পুরো সপ্তাহ সব রিসোর্ট কটেজ ৮০ শতাংশ বুকিং রয়েছে। এছাড়া পুরো ডিসেম্বর মাসজুড়ে বুকিং এর চাপ রয়েছে, বুকিং আরও বাড়তে পারে।
কটেজ মালিক সমিতি অব সাজেকের সাংগঠনিক সম্পাদক রাহুল চাকমা জন বলেন, আজ সপ্তাহ জুড়ে সাজেক পর্যটকে ভরপুর। সাজেকের সৌন্দর্য উপভোগ করতে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে পর্যটকরা ভিড় করছেন। প্রায় সাড়ে তিন হাজার পর্যটকের সমাগম হয়েছে সাজেকে। আগামী ডিসেম্বর মাস জুড়ে সাজেকের সব হোটেল, কটেজ ও রিসোর্ট বুকিং রয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ১৯ ও ২০ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে সহিংসতার ঘটনায় ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে দফায় দফায় সাজেক ভ্যালি পর্যটনকেন্দ্রে পর্যটকদের ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করে আসছিল রাঙামাটি জেলা প্রশাসন। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকায় ৫ নভেম্বর থেকে সাজেকে পর্যটকদের ভ্রমণে জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। পর্যটন মৌসুমে মাসে অন্তত ৪০ হাজার পর্যটক সাজেকে ভ্রমণে করে থাকে।