কক্সবাজার শহরের উত্তর রুমালিয়ারছড়ার একটি বসতঘর থেকে গত ১১ ডিসেম্বর রাতে ৪২ হাজার ইয়াবা ও নগদ ১৫ লাখ টাকা উদ্ধার করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর (ডিএনসি) কক্সবাজারের সদস্যরা। কিন্তু সেই উদ্ধারকৃত ৪২ হাজার ইয়াবা এজাহারে এসে হয়ে যায় ১২ হাজার। তিনজনকে আটক করা হলেও গ্রেপ্তার দেখানো হয় শুধু একজনকে। এনিয়ে ৩০ হাজার ইয়াবা ও নগদ অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে ডিএনসি কক্সবাজারের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে।
এজাহারে বলা হয়, ‘জেলা কার্যালয়ের সহকারী উপ-পরিদর্শক মো. সহিদুল ইসলাম, বকুল কুমার সাহা, সিপাহী মো. মইনুল হাসান, মো. মোস্তফা কামাল, মোম্মদ আব্দুর রহিম, জামিলুর রহমান, রবি দে ও ওয়ারলেস অপারেটর পঞ্চানন পালদের সমন্বয়ে একটি টিম অভিযান পরিচালনা করে ১২ হাজার ইয়াবাসহ মোহাম্মদ ইব্রাহীমকে আটক করে। কিন্তু যে ভবন থেকে ইয়াবাগুলো উদ্ধার করা হয়েছে সেখানকার কেয়ারটেকার ও প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন ৪২ হাজার ইয়াবা ও নগদ ১৫ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়। এজাহারের তথ্য শুনে তারাও হতবাক হয়েছেন।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত হওয়া ‘চেহের আলমের ৬ তলা ভবনের নিরাপত্তা প্রহরী মো. আব্দুল্লাহ এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘ওই দিন ৪২ হাজার ইয়াবা ও ১৫ লাখ টাকাসহ জিয়া উদ্দিন, মোহাম্মদ ইব্রাহীম ও অজ্ঞাত আরেকজনকে আটক করা হয়। কিন্তু রহস্যজনক কারণে গাড়ীতে তোলার পরও মোহাম্মদ ইব্রাহীমকে মাত্র ১২ হাজার ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার দেখিয়ে বাকি দুজনকে ছেড়ে দেয়া হয়।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর কক্সবাজারের (ডিএনসি) উপ-পরিদর্শক ও মামলার বাদী মো. সানোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমি যা পেয়েছি তা দিয়ে মামলা দিয়ে আসামী থানায় হস্তান্তর করেছি। ৪২ হাজার উদ্ধার করে ১২ হাজার দেখানো হয়েছে কেনো এমন প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে তিনি নিউজ করার পরামর্শ দেন।
আর এসব ইয়াবা আত্মসাতের ঘটনা আড়ার করতে তড়িগড়ি করে ডিএনসির কোর্ট পরিদর্শক জীবন বড়ুয়ার স্বাক্ষর জালিয়াতির প্রমাণ মিলেছে। কারণ ১১ তারিখ জীবন বড়ুয়া ছিলেন ছুটিতে তিনি তার কর্মস্থলে ছুটি শেষে ১৪ ডিসেম্বর যোগ দেন। কিন্তু ১১ তারিখ তার স্থলে স্বাক্ষর কে করেছেন এমন প্রশ্ন এখনো রহস্যঘেরা ও জালিয়াতির আভাস দিচ্ছে।
কোর্ট পরিদর্শক জীবন বড়ুয়াও স্বীকার করেছেন তিনি ওই আসামী চালান কপিতে তিনি স্বাক্ষর করেননি। তাহলে স্বাক্ষরটি কে দিয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি মামলার বাদীর (উপ-পরিদর্শক মো. সানোয়ার হোসেন) সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মামলার বাদী ডিএনসি কক্সবাজারের উপ-পরিদর্শক মো. সানোয়ার হোসেন বিষয়টি তিনি অবগত নন বলে জানান।