মঙ্গলবার ২২ এপ্রিল ২০২৫ ৯ বৈশাখ ১৪৩২
মঙ্গলবার ২২ এপ্রিল ২০২৫
চাঁদপুরে জাহাজে ৭ খুনের ঘটনা ‘পূর্ব পরিকল্পিত’
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৩:২০ PM আপডেট: ২৪.১২.২০২৪ ১১:০৬ PM
চাঁদপুরে এমভি আল-বাখেরা জাহাজে সাত হত্যাকাণ্ডের পেছনে গভীর রহস্যের ইঙ্গিত রয়েছে। শুরুতে বিষয়টি ডাকাতি বলে মনে করলেও ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর পুলিশ ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলছেন, এটি ‘পরিকল্পিত’ হত্যাকাণ্ড। 

গতকাল মেসার্স বৃষ্টি এন্টারপ্রাইজের মালিকানাধীন এমভি আল-বাখেরা জাহাজটি থেকে পাঁচ জনের লাশ উদ্ধার করে নৌ-পুলিশ। রক্তাক্ত অবস্থায় তিনজনে চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পর সেখানে আরও দুজনের মৃত্যু হয়। কারা তাদের হত্যা করেছে, তা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে একই কায়দায় সবাইকে হত্যা করার ঘটনাটি রহস্যজনক।

নিহতরা হলেন- জাহাজটির চালক (মাস্টার) কিবরিয়া, ইঞ্জিনচালক সালাউদ্দিন, সুকানি আমিনুল মুন্সি, গ্রিজার সজিবুল, আজিজুল ও মাজেদুল ইসলাম। নিহত আরেকজনের পরিচয় জানা যায়নি। আহত অপর ব্যক্তির নাম জুয়েল।

সবাইকে কোপানো হয় ‘ঘুমের মধ্যে’
হাইমচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে সালমা নাজনীন তৃষা বলেন, নিহতদের তাদের গায়ে কাঁথা, শাল ও চাদর মোড়ানো ছিল। এমনভাবে ছিল যেন তারা ঘুমিয়ে আছেন। কিন্তু তাদের সবার মাথা ছিল চাইনিজ কুড়ালের কোপের আঘাতে ক্ষতবিক্ষত। 

তিনি আরও বলেন, এটি ছিল সারের জাহাজ। অবাক করা বিষয় একটি বস্তাও খোয়া যায়নি। কেউ ডাকাতি করতে এলে তো সার বা জাহাজ কোনও একটি নিয়ে যাবে। কিছুই নেয়নি। আবার জাহাজের কর্মীদের ঘুমন্ত অবস্থায় কোপানো হয়েছে। অবস্থা দেখে বোঝা যায়, তাদের হত্যার পর পর বিছানার চাদর দিয়ে ঢেকে রেখে গেছে একই বিছানায়। সবাই নিজ নিজ কক্ষে একই কায়দায় হত্যার শিকার হওয়ায় কাউকে ডাকাতিতে বাধা দেওয়ার প্রশ্নই আসে না।

খোয়া যায়নি জাহাজের কোনো মালামাল
ঘটনাটিকে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড উল্লেখ করে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন বলেন, জাহাজের কোনও মালামাল খোয়া যায়নি। এমনকি জাহাজে থাকা সারের বস্তাগুলোও সাজানো-গোছানো দেখেছি। 

প্রাথমিকভাবে বোঝা যাচ্ছে, জাহাজ থেকে কিছুই চুরি হয়নি। সাত জনকে হত্যা করা হয়েছে। একজন জীবিত থাকলেও মৃতপ্রায়। এটিকে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড ধরা যায়। 

প্রত্যেকের মাথায় কোপের চিহ্ন
নৌ-পুলিশের চাঁদপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার (এসপি) সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, এটি পূর্বপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। প্রত্যেকের মাথায় গুরুতর আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। জাহাজের পাঁচটি কক্ষে পাঁচ জনের লাশ পেয়েছি আমরা। আমাদের ধারণা, ঘুমন্ত অবস্থায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলায় ও মাথায় আঘাত করে হত্যা করা হয়েছে।

খুনিদের টার্গেটই ছিল হত্যা- উল্লেখ করে সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, জাহাজে থাকা কোনো মালামাল চুরি হয়নি। ডাকাতি বলে প্রচার হলেও আমার মনে হচ্ছে এটি ডাকাতি নয়। কারণ জাহাজে কয়েক কোটি টাকার সার ছিল। সেগুলো স্পর্শও করেনি তারা। নিহতদের মোবাইল-ম্যানিবাগ, টাকাপয়সা যেভাবে ছিল ঠিক সেভাবেই আছ। জাহাজে আসা খুনিদের টার্গেটই ছিল হত্যা।
« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত