রবিবার ২০ এপ্রিল ২০২৫ ৭ বৈশাখ ১৪৩২
রবিবার ২০ এপ্রিল ২০২৫
প্রবাসীদের তোপের মুখে উপদেষ্টা আসিফ নজরুল
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৮:০১ PM
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে আরব আমিরাত থেকে জেল খেটে আসা প্রবাসীরা। 

আজ শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) এসব প্রবাসীর প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকার আর্থিক অনুদানের চেক হস্তান্তরের অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয় ইস্কাটনের প্রবাসী কল্যাণ ভবনের বিজয় ৭১ হলে। উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের বক্তব্যের এক পর্যায়ে প্রবাসীরা হট্টগোল করে আরব আমিরাতে তৎকালীন কনসাল জেনারেল বি এম জামাল হোসেনের গ্রেফতার দাবি করেন এবং ক্ষতিগ্রস্ত প্রবাসীদের পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানান। হট্টগোল চলাকালেই উপদেষ্টা আসিফ নজরুল অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে দুবাই ফেরত একজন প্রবাসী স্টেজের সামনে এসে আসিফ নজরুলকে উদ্দেশ করে বলতে থাকেন, আমাদের তারা জঙ্গি বানিয়ে দিয়েছে সেই দেশে। এর জন্য দায়ী কনসাল জেনারেল বি এম জামাল হোসেন। তাকে অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে। সে আমিরাত সরকারকে চিঠি দিয়ে আমাদের গ্রেফতার করতে বলেছে। তাকে গ্রেফতার করলে সব তথ্য পাওয়া যাবে।

উত্তেজিত প্রবাসীদের শান্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আপনারা শান্ত হোন। আমার কথা শোনেন, তারপর যত ইচ্ছা চিল্লাচিল্লি করেন। আমি বুঝতে পেরেছি, আপনাদের ক্ষোভের কারণ আছে। আপনারা আগামীকাল ৭ জনের একটি প্রতিনিধিদল আমার সঙ্গে বিকাল ৩টায় মন্ত্রণালয়ে দেখা করেন। কাল মন্ত্রণালয়ে মিটিং হবে, কার কার কী অভিযোগ শোনা হবে, আমি দেখবো। 

এরপর আসিফ নজরুল বক্তৃতা বন্ধ করে মঞ্চে বসে থাকেন। এরপর প্রবাসীরা আরও উত্তেজিত হয়ে তার কাছে এসে দাবি জানাতে শুরু করলে এক পর্যায়ে তিনি অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন। এসময় প্রবাসীরা স্লোগান দিতে থাকেন, ‘বিচার চাই, বিচার চাই’, ‘ফাঁসি চাই, ফাঁসি চাই’। 

প্রবাসীরা অনুষ্ঠানে বি এম জামালকে গ্রেফতারের দাবি জানান। তাদের ভাষ্য, এই কূটনীতিককে দেশে ফিরিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই সব তথ্য পাওয়া যাবে। দুবাই কনস্যুলেটের কর্মকর্তারা তাদের বাংলাদেশের বিরোধিতার অভিযোগ করেনি। এই প্রবাসীরা আরব আমিরাতের বিরোধিতা করে বিক্ষোভ করেছিলেন, এমন অভিযোগ করে ফাঁসানো হয়েছি। এজন্য তারা যাবজ্জীবনসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজা পেয়েছিলেন।

এসময় প্রবাসী উত্তেজিত হয়ে বলেন, ‘ভিনদেশে আমাদের জঙ্গি বানায়, এমন কর্মকর্তাকে কেন পদোন্নতি দেওয়া হয়? ৩৫ বছর ধরে কাজ করে যা উপার্জন করেছিলাম, সব হারিয়েছি। আমার মতো অনেকেই কোটি টাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’

প্রবাসীদের অভিযোগ, অভিযুক্ত কর্মকর্তা বি এম জামাল হোসেন আওয়ামী লীগের লোকজনের সহায়তায় হাজার খানেক ভিসা বিক্রি করেছে। রিমান্ডে নিয়ে সে দেশে অমানবিক নির্যাতনের অভিযোগও করেন তারা। 

এক পর্যায়ে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব রুহুল আমিন বলেন, ‘আমরা শান্ত হওয়ার জন্য অনুরোধ করছি। আপনারা একটু দয়া করে শান্ত হোন।’ পরে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতের দাবি জানান প্রবাসীরা।

অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করার আগে উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, ‘আমি কাতারে গিয়েছিলাম। সেখানে প্রবাসীদের সঙ্গে কথা বলেছি। প্রবাসীরা আমাকে বলেছে কোনও কোনও দূতাবাসের কর্মকর্তার আচরণ ছিল শত্রুভাবাপন্ন। আপনারা এভাবে (উপস্থিত ব্যক্তিদের উদ্দেশ করে) কথা না বলে নির্দিষ্ট করে বলেন যে, ওনার বিরুদ্ধে এই অভিযোগ আছে। আপনারা যদি অভিযোগ দেন, তাহলে আমরা তদন্ত করে দেখতে পারি। পরে আমরা ফরেন মিনিস্ট্রিতে পাঠাতে পারি। অভিযোগ না দিলে তো ব্যবস্থা নেওয়া যায় না।’
« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত