নরসিংদীতে নদের পানি প্রবাহের প্রবেশমুখ বন্ধ করে যানবাহন পারাপারের রাস্তা নির্মাণ করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় কতিপয় প্রভাবশালী একটি মহলের বিরুদ্ধে। ফলে নদের দীর্ঘ কয়েক কিলোমিটার জুড়ে জলাবদ্ধতায় পাঁচ শতধিক বিঘা জমিতে বুরো ধানের আবাদ ব্যাহত হচ্ছে।
আজ সোমবার দুপুরে রায়পুরার মাহমুদাবাদ-ইব্রাহিমপুর পুরাতন ব্রাহ্মপুত্র নদের তীরে শত শত ভুক্তভোগী কৃষক বাঁধ অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন করে।
কৃষকরা জানান, নদের পানি প্রবাহের প্রবেশপথে রাস্তা নির্মাণ করে প্রভাবশালী কতিপয় অবৈধ ট্রাক্টর মালিক। দীর্ঘদিন যাবৎ তারা প্রভাব কাটিয়ে এটি করে যাচ্ছে। তাদের এই অবৈধ কার্যক্রমের ফলে রায়পুরা এবং বেলাবো দুই উপজেলার নদী তীরবর্তী আবাদকৃত পাঁচশতাধিক বিঘা বুরো জমিতে আবাদ ব্যাহত হচ্ছে। নদের দশ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। ফলে সরকারি চাহিদা অনুযায়ী ধান উৎপাদন কর্মসূচি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। কৃষকেরা অধিক পরিমাণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। পরিবার পরিজন নিয়ে অনেক চাষীরা পড়েছেন বিপাকে। এমন অবৈধ কার্যক্রম থেকে পরিত্রাণ পেতে দ্রুত প্রশাসনের সহযোগীতা চেয়েছেন তারা।
এ সময় মানববন্ধনে কৃষক খলিলুর রহমান বলেন, অসাধু এক কুচক্রিমহল নদীতে বাঁধ দিয়ে পানি প্রবাহ বন্ধ করে দেয়। দুই উপজেলার মাহমুদাবাদ নামাপাড়া, ইব্রাহিমপুর, সররাবাদ, নারায়নপুর, কাঙ্গালিয়া, জালালাবাদ, মরিচাকান্দা, দুলাল কান্দি, এলাকার কয়েক হাজার কৃষকের জীবিকার একমাত্র অবলম্বন শত কোটি টাকার ধান উৎপাদন বিঘ্নিত হচ্ছে। প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ চাই।
ক্ষতিগ্রস্ত এক কৃষক জানান, কতিপয় ব্যবসায়ী ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে মাটি ফেলে বালুর ব্যবসা করে আসছে। তীরের বালু নদে এসে নদী বরাট হয়ে যায়। ফলে চার থেকে সাত বছর যাবৎ নদীতে সঠিক পানি প্রবাহ না থাকায় প্রতি বছরই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। বোরো জমি ও নদী ভরাটের সুযোগ কাজে লাগিয়ে নদীতে অবৈধ বাদ দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করে। ফলে আমার মত শতশত কৃষক চাষাবাদ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
কৃষকরা আরও জানান, এই সুযোগে ট্রাক ট্রাক্টর মালিকসহ কতিপয় ব্যবসায়ীরা বালি ইট আনা নেওয়ার রাস্তা নির্মাণ করে যানবাহনে মালামাল পারাপার করছে। ফলে শাখানদীর উত্তর পশ্চিম পাশে সঠিক পানি প্রবাহ না থাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থাসহ রাস্তা উচ্ছেদ করে শাখানদী পুণখনন করতে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট সু দৃষ্টি কামনা করেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো মাসুদ রানা বলেন, মানববন্ধনের খবর পেয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনর ভূমিকে পাঠানো হয়েছে। সরজমিনে গিয়ে বিষয়টি দেখে পরবর্তী ব্যবস্হা নেয়া হবে।