রবিবার ১৯ জানুয়ারি ২০২৫ ৬ মাঘ ১৪৩১
রবিবার ১৯ জানুয়ারি ২০২৫
২০ হাজার টাকা চাঁদা দেয়ার পরও আ.লীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৭:২৫ PM
বাবাকে হত্যার ২১ বছর এক মাস ২২ দিন পর তার বড় ছেলে আওয়ামী লীগ নেতা জিয়াউদ্দিন পলাশকে (৪৫) কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। গত শনিবার সন্ধ্যায় বাড়ির পাশের একটি চায়ের দোকান থেকে তুলে নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।

বাবার মতো জিয়াউদ্দিন পলাশও যশোর জুট ইন্ডাস্ট্রিজ (জেজেআই) শ্রমিক ইউনিয়নের সহ-সম্পাদক ছিলেন। ২০২০ সালের ২ জুলাই পাটকলটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ সময় পাটকলটির অন্য শ্রমিকের মতো তিনিও বেকার হয়ে পড়েন। জিয়াউদ্দিন নওয়াপাড়া পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এ ছাড়া বাবার মতোই তিনি ওই ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ছিলেন।

পলাশকে হত্যার পর এলাকার লোকজন রইচ সিকদার (৩৫) নামে এক বিএনপি নেতাকে ধরে পিটুনি দেন। পরে তাকে পুলিশে দেওয়া হয়েছে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রইচ সিকদার নওয়াপাড়া গ্রামের সিদ্দিক সরদারের ছেলে। তিনি নওয়াপাড়া পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির প্রচার সম্পাদক। 

জিয়াউদ্দিন পলাশের নওয়াপাড়া গ্রামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, একতলা ভবনের সামনে শতাধিক নারী-পুরুষের জটলা। ঘরের সামনে বসে কথা বলেই যাচ্ছেন জিয়াউদ্দিন পলাশের ছোট ভাই আব্দুল মান্নান ওরফে লেলিন (৪০)। মাঝেমধ্যে বলে উঠছেন, ‘আমরা সহজ-সরল জীবন যাপন করি। আমরা মানুষের কোনও ক্ষতি করি না। চাঁদার জন্য আমার ভাইকে মেরে ফেলা হয়েছে।’

ছেলের জন্য বিলাপ করে কাঁদছিলেন মা ফরিদা বেগম (৬৫)। ছেলের শোকে বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন। তাকে ঘিরে আছেন কয়েকজন নারী। তারা নানাভাবে সান্ত্বনা দিচ্ছেন। পলাশের মৃত্যুর খবর শোনার পর থেকে স্ত্রী শারমিন নাহার (৩৫) বাকরুদ্ধ। জানা গেছে, তাদের দুই ছেলে তাসিন সরদার (১০) ও তাইফ সরদার (৯ মাস)। সবাই ডুকরে কাঁদছিলেন।

পরিবারের সদস্য, একজন প্রত্যক্ষদর্শী এবং পুলিশ জানায়, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে জিয়াউদ্দিন বাড়ির কাছে নওয়াপাড়া গ্রামের তেঁতুলতলা মসজিদের পাশে একটি চায়ের দোকানে বসে চা পান করছিলেন। এ সময় বিএনপি নেতা রইচ সিকদারের নেতৃত্বে ১০ থেকে ১২ জন চায়ের দোকান থেকে জিয়াউদ্দিনকে ধরে নিয়ে যায়। সন্ধ্যা ৭টা ৪০ মিনিটের দিকে দুই ব্যক্তি জিয়াউদ্দিনের বাড়িতে যান। তাদের একজন নিজেকে জিহাদ এবং অপরজন সাগর নামে পরিচয় দেন। শারমিন নাহারের সঙ্গে তাদের একজনের মোবাইল থেকে জিয়াউদ্দিনকে কথা বলিয়ে দেন। 

তখন জিয়াউদ্দিন স্ত্রীকে বলেছেন, ‘মার্ডার হওয়ার অবস্থায় আছি। ওই দুই ব্যক্তিকে ২০ হাজার টাকা দাও।’ তারা টাকা নিয়ে চলে যাওয়ার পর জিয়াউদ্দিন পলাশকে নওয়াপাড়া বুড়িরঘাট এলাকায় আয়কর অফিসের পেছনে ভৈরব নদের তীরে বালুর স্তূপের ওপর নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে এবং পিটিয়ে হত্যা করে।
« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







সোস্যাল নেটওয়ার্ক

  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক:
মো. আশরাফ আলী
কর্তৃক এইচবি টাওয়ার (লেভেল ৫), রোড-২৩, গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।
মোবাইল : ০১৪০৪-৪০৮০৫২, ০১৪০৪-৪০৮০৫৫, ই-মেইল : thebdbulletin@gmail.com.
কপিরাইট © বাংলাদেশ বুলেটিন সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত